ঢাকাবুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ চৈত্র ১৪৩১

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং

বালুচরে আটকেপড়া নবদম্পতিসহ ৩৭ বরযাত্রী উদ্ধার

নরসিংদী প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০২২ , ০৭:১৯ পিএম


loading/img
ছবি : সংগৃহীত

নরসিংদীতে ঘূর্ণিঝড়ের সময় মেঘনা নদীর বালুচরে আটকেপড়া ইঞ্জিনচালিত নৌকা থেকে নবদম্পতিসহ ৩৭ বরযাত্রীকে উদ্ধার করেছে নৌপুলিশ।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৪ অক্টোবর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের পঞ্চবটী গ্রামের দক্ষিণ অংশের মেঘনা নদী থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি ওই স্থানে ৯ ঘণ্টা ধরে আটকে ছিল। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল পেয়ে তাদের উদ্ধার করেন করিমপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা।

মঙ্গলবার দুপুরে করিমপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক ফরিদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাতদিন আগে সদরের আলোকবালী ইউনিয়নের কাজীরকান্দি গ্রামে কনে দেখতে যান ফরহাদ মিয়া (২৬)। এ সময় মৃত আবদুল হাশিমের মেয়ে সাবিনা আক্তারকে (২০) পছন্দ হওয়ায় দুই পক্ষের সম্মতিতে কাবিন হয়। ফরহাদ মিয়া নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের নয়াকান্দা গ্রামের মৃত সোহরাব মিয়ার ছেলে।

নৌপুলিশ ও বরপক্ষ জানিয়েছে, নরসিংদী শহরের থানারঘাট থেকে ৩৫ বরযাত্রী নিয়ে কনেকে উঠিয়ে আনার জন্য একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় আলোকবালীতে যান ফরহাদ মিয়া। সেখানে গিয়ে খাওয়া-দাওয়ার পর বিকেল ৪টার দিকে কনেকে নিয়ে ওই নৌকায় করে ফিরছিলেন মোট ৩৭ জন। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দিনভর বৃষ্টি হচ্ছিল। নৌকা মাঝনদীতে আসার পরই প্রবল বাতাস বইতে থাকে। এ সময় বাতাসের তোড়ে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নৌকাটি দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে। একপর্যায়ে নৌকাটি শ্রীনগর ইউনিয়নের পঞ্চবটী গ্রামের দক্ষিণ অংশে কচুরিপানায় আটকে দ্বীপের মতো নির্জন বালুচরে গিয়ে থেমে যায়। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত দেড়টা পর্যন্ত প্রায় ৯ ঘণ্টা সময় তারা সেখানেই আটকে থাকেন।

অনেক চেষ্টার পরও সেখান থেকে বের হতে না পেরে বরের মামা বাচ্চু মিয়া জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দিয়ে সাহায্য চান। ৯৯৯ থেকে করিমপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এরপরই নৌপুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। রাত ১টার দিকে নির্জন বালুচরে আটকে থাকা ওই নৌকার হদিস পান তারা। পরে ওই নৌকাসহ ৩৭ যাত্রীকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন তারা। পরে বাকি রাত ফাঁড়িতে কাটিয়ে সকালে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয় বরযাত্রীরা।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে ফরহাদ মিয়া বলেন, এমন পরিস্থিতিতে কনেপক্ষ আমাদের থেকে যেতে বলেছিল। কিন্তু আমরা ভেবেছিলাম, চলে আসতে পারব। মাঝনদীতে আসার পরই প্রবল ঝড়বাতাস শুরু হলে আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমাদের নৌকাও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ওই চরের মধ্যে এই ৯ ঘণ্টা সময় আমরা কীভাবে পার করেছি, আমরাই জানি। আমাদের সঙ্গে থাকা সবাই সুস্থ আছেন। নৌপুলিশের সহায়তায় আমরা বেঁচে ফিরতে পেরেছি, এটাই বড় বিষয়।

করিমপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক ফরিদুল আলম জানান, বরযাত্রীবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন থেকে নরসিংদী শহরের দিকে আসছিল। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে নৌকাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি নির্জন বালুচরে আটকে যায়। প্রায় ৯ ঘণ্টা আটকে থাকার পর আমরা ওই নৌকা থেকে নবদম্পতিসহ মোট ৩৭ জনকে উদ্ধার করেছি।

তিনি আরও জানান, উদ্ধারের পর বাকি রাত ফাঁড়িতে অবস্থানের পর সকালে সবাই নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন। সবাই সুস্থ আছেন।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |