দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ব্যবসায়ী একরামুল হক (৬০) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) দুপুরে খানসামা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) তাওহীদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার সকালে আসামিরা দিনাজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল আমলি আদালতের বিচারক সুরাইয়া বেগমের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন উপজেলার পূর্ব হাসিমপুর গ্রামের অবিনাশ চন্দ্র রায়ের স্ত্রী বাসন্তী রানী রায় (৫০) ও তার ছেলে অনন্ত কুমার রায়।
নিহত একরামুল হক উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামের ঘটু মিয়ার ছেলে। পুলেরহাটসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ফেরি করে ভাঙারি সংগ্রহ ও খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করতেন। গত ১৩ নভেম্বর ২০২২ তারিখে ভুট্টাচাষি মিজানুর রহমান একরামের মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৩ নভেম্বর একরামুল হকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। মরদেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ ‘মাথায় আঘাত’ বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শুরু করে খানসামা থানা পুলিশ।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, আসামি বাসন্তী রানী শয়নকক্ষের পেছনে একরামুল হকের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে শারীরিক মেলামেশা করতে যান। এ সময় একরামুল সঙ্গে যৌন উত্তেজক দুটি ট্যাবলেট সেবন করেন। কিন্তু একরামুলের পুরুষাঙ্গ প্রস্তুত হচ্ছিল না। তখন একরামুল সঙ্গে নিয়ে যাওয়া একজাতীয় তেল বাসন্তীকে মালিশ করে দিতে বলেন। কিন্তু মালিশের তেলের বিকট গন্ধে বাসন্তী বিরক্ত হন।
এর মধ্যে বাসন্তীর ছেলে অনন্ত কুমার রায় হঠাৎ বাড়িতে চলে আসেন। তখন বাসন্তী একরামুল হককে ধাক্কা দিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ধাক্কায় শয়নঘরের বাঁশের খুঁটির সঙ্গে মাথায় আঘাত পান একরামুল। এতে মাটিয়ে লুটে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান বৃদ্ধ একরামুল। মৃত্যুর বিষয়টি বুঝতে পেরে বাসন্তী তার ছেলে অনন্ত কুমার রায়কে সঙ্গে নিয়ে মরদেহটি বাড়ি থেকে কিছুদূরের পাশের একটি খেতে রেখে আসেন।
খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চিত্তরঞ্জন রায় গণমাধ্যমকে বলেন, আসামি বাসন্তী ও অনন্ত হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।