• ঢাকা রোববার, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১
logo

জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতবিক্ষত হাতিয়া

  ২৮ মে ২০২৪, ১২:৪০
জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতবিক্ষত হাতিয়া
জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে বসবাসের ঘর। ছবি : আরটিভি

ঘূর্ণিঝড় রেমেলের প্রভাবে তীব্র জলোচ্ছ্বাসে নোয়াখালী হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপসহ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে ঘরবাড়ি। ভেঙে গেছে মানুষের চলাচলের পাকা ও কাচা রাস্তা। ভিটেমাটি হারিয়ে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।

হাতিয়ায় লোকজন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জোয়ারের পানিতে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি জোয়ারের পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ চরগাসিয়া ও ঢালচরে বেড়িবাঁধ না থাকায় ৭ থেকে ৮ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাসে ঘরবাড়ি ভেসে গেছে।

সকালে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি এসে মালামাল কুড়াচ্ছেন।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিনাজ উদ্দিন বলেন, ‘এই দ্বীপের চারপাশে বেড়িবাঁধ নেই। এতে গত দুদিন দিনে ও রাতে দুবার করে প্লাবিত হচ্ছে সবকটি গ্রাম। কিছু কিছু জায়গায় পানি নেমে গেলেও অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার রাতে ১০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়। পানির স্রোতে নামার বাজার থেকে মোক্তারিয়া ঘাট পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার প্রধান সড়কের অনেক অংশ ভেঙে খালে পরিণত হয়েছে। এসব অংশ দিয়ে মানুষজনকে নৌকা নিয়ে পারপার হতে হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিঝুমদ্বীপের দক্ষিণ ও পূর্ব অংশে অনেকের ঘরবাড়ি জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। এ ছাড়া প্রায় ১০০ কিলোমিটার কাচা সড়ক জোয়ারের স্রোতে ভেঙে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা জরুরি প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। একই অবস্থা হরণী ইউনিয়নের চরগাসিয়ায়। নতুন জেগে উঠা এই চরে ১০ বছর ধরে মানুষ বসবাস করছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় গত রাতের জোয়ারে অনেকের ঘরবাড়ি ভেসে গেছে।’

চরগাসিয়া জনতাবাজার সমাজের সভাপতি তৈমুর হোসেন বলেন, ‘জোয়ারের স্রোতের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে, মানুষের নতুন তৈরি করা ঘরও ভেসে গেছে। অনেকে ঘরের চালের ওপর উঠে আশ্রয় নিয়েছে। এই চরে প্রায় ১৭ হাজার লোকের বসবাস। রাত ১টার সময় আসা জোয়ারে নিরুপায় হয়ে অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে আশ্রয় নেন। তবে সকাল পর্যন্ত অনেকের গবাদি পশু ভেসে যাওয়ার সংবাদ পেয়েছি।’

তৈমুর আরও বলেন, ‘সকালে জনতা বাজার এলাকার পূর্ব পাশের গ্রামে গিয়ে দেখা যায়- জোয়ারের স্রোতে অনেকের ঘর ভিটা থেকে ভেসে গিয়ে জমিতে এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। অনেক বাড়িতে শূন্য ভিটা পড়ে থাকতে দেখা যায়। বাড়ির মালামাল জমিতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।’

এ ছাড়া জোয়ারের স্রোতে ও ঢেউয়ের আঘাতে নলচিরা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের বাইরে ঘাট এলাকায় প্রায় ১৫টি দোকান পানিতে ভেসে গেছে।

এ বিষয়ে নলচিরা ঘাটের দোকানের মালিক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘চোখের সামনে নিজের দোকানটি ভেসে যেতে দেখেছি। ঢেউয়ের তীব্রতার কারণে মালামাল চেষ্টা করেও রক্ষা করতে পারিনি। আমার মতো আরও অনেকের দোকান ঘর ভেসে গেছে। তবে অনেকে ভেসে যাওয়া ঘরের বিভিন্ন অংশ দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছেন কিন্তু মালামাল রক্ষা করতে পারেননি।

হাতিয়ার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল চরগাসিয়া থেকে ছবিগুলো তুলেছেন আরটিভির নিজস্ব প্রতিনিধি।

এ দিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘হাতিয়াতে ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির একটি বিবরণ ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এতে হাতিয়াতে প্রায় ৫০ হাজার লোককে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে দেখানো হয়েছে। ৩ হাজার ৫০০ পরিবারের ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ১০০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ভেঙে যাওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ক্ষয়ক্ষতির বিবরণে।’

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
হাতিয়ায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি, টাকা-স্বর্ণালংকার লুট
হাতিয়ায় আলোর মশালের শীতবস্ত্র বিতরণ
হাতিয়ায় পাঁচ শিক্ষককে বিদায় সংবর্ধনা দিলো শিক্ষার্থীরা
আমরা রাজনৈতিক দলের হাতিয়ার হতে চাই না: ডিবিপ্রধান