গাজীপুরে এক রাতে ২ কৃষকের ৮ গরু চুরি
গাজীপুরের শ্রীপুর ও কাপাসিয়ায় কৃষকের গাভিসহ ৮টি গরু চুরি হয়েছে।
রোববার (৯ জুন) ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে চোরেরা গোয়াল ঘর থেকে গরু নিয়ে যায়। শ্রীপুর পৌরসভার লোহাগাছ গ্রামের বিউটি আক্তারের তিনটি এবং কাপাসিয়ার বামনখলা গ্রামের হারুন মিয়ার গোয়ালঘর থেকে পাঁচটি গরু চুরি হয়। এতে ওই দুই কৃষকের প্রায় ৬ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
সোমবার (১০ জুন) ক্ষতিগ্রস্ত দুই কৃষক তাদের গরু চুরির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে বামনখলা গ্রামের চান মিয়ার ছেলে হারুন বলেন, রোববার ভোরে গোয়াল ঘর থেকে পাঁচটি গরু চুরি হয়েছে। গরুগুলো আমি কোরবানির ঈদের বাজারে বিক্রি করার জন্য পালন করে আসছি। আগের দিন সন্ধ্যায় খাবার দিয়েছি। রাত আড়াইটার দিকে গরুগুলোকে খাবার দিয়ে আমি ঘুমাতে যাই। ভোরে উঠে দেখি গোয়াল ঘরে থেকে গরু চুরি হয়েছে। আমার ৫টি গরুর মূল্য বর্তমান বাজারে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা হবে।
প্রতিবেশী জামাল সিকদার ও রশিদ সিকদার বলেন, আমাদের গরুও চুরি করে পিকআপ ভ্যানে উঠাচ্ছিল চোরেরা। এ সময় খোঁজ পেয়ে ধাওয়া দিলে চোর গরু রেখে পিকআপ নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর মিয়া বলেন, গরু চুরির ঘটনায় পুলিশ কৃষকের বাড়ি পরিদর্শন করেছে। রাতে পুলিশি টহল আরও বাড়ানো হবে।
এ দিকে শ্রীপুরে এক নারীর শেষ সম্বল গাভিসহ তিনটি গরু চুরির হয়েছে। ভোর রাতে চোরেরা গোয়াল ঘরের তালা কেটে গরু নিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত নারী বিউটি আক্তার শ্রীপুর পৌরসভার লোহাগাছ এলাকার মৃত সাহাব উদ্দিনের মেয়ে।
বিউটি আক্তার জানান, তিনি শনিবার রাত ১১টার দিকে গোয়াল ঘরে গরুগুলো বেঁধে দরজায় তালা দিয়ে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়েন। রোববার সকালে ঘুম থেকে উঠে গোয়াল ঘরের তালা কাটা দেখে প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করেন। পরে গোয়াল ঘরে গিয়ে গরু দেখতে না পেয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেন। কোথাও না পেয়ে শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
বিউটি আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ওই তিনটি গরুই আমার শেষ সম্বল ছিল। চুরি হওয়া তিনটি গরুর মধ্যে একটি গাভি ২ কেজি দুধ দিতো। সিন্ধী গাভি পাঁচ মাসের গর্ভবতী ছিল। ছাই রঙের দুধের গাভির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৮০ হাজার টাকা, সিন্ধী লাল রঙের গাভির মূল্য এক লাখ টাকা এবং ষাঁড় বাছুরের মূল্য ৪০ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষকরা বলেন, একই রাতে প্রতিবেশী তিন বাড়িতে চোরেরা হানা দিয়ে গরু চুরি করার চেষ্ট করেছে। গরু চুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা রাতে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুমাতে পারে না। ধারণা করা হচ্ছে, চোরেরা গভীর রাতের কোনো এক সময় গোয়াল ঘরের তালা কেটে পিকআপভ্যানে করে তিনটি গরু চুরি করে নিয়ে গেছে।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আফজাল হোসেন বলেন, গরু চুরির ঘটনায় এক নারী সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। গরু চুরি রোধে পুলিশ সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে।
মন্তব্য করুন