কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে দাবি আদায়, অনুসন্ধান কমিটি গঠন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গত ২ জানুয়ারি পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে প্রায় ১২ ঘন্টা যাবৎ প্রশাসন ভবনে তালা দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রেখেছিল আন্দোলনকারীরা। এ ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কয়েকটি সংগঠন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনা অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রধান অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদারের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতি, জাতীয়তাবাদী সহায়ক কর্মজীবী পরিষদ ও সহায়ক কর্মচারী পেশাজীবী ফোরাম সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট পৃথক পৃথক আবেদনে জানায় যে, গত ২ জানুয়ারি সকাল আনুমানিক পৌনে দশটা থেকে কতিপয় শিক্ষার্থী ও অজ্ঞাতপরিচয় বহিরাগত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে ভবনে কর্তব্যরত উপ-উপাচার্যদ্বয় ও কোষাধ্যক্ষসহ প্রায় ২৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটকে রাখে। তারা সেদিন রাত প্রায় পৌনে দশটা পর্যন্ত তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকে। সেসময় আবেগী ও বিব্রতকর অভিনয়ের মাধ্যমে ছড়ানো হয় প্রোপাগান্ডা, দেয়া হয় প্রাণনাশের হুমকি। ভেতরে আটকে থাকা অসুস্থ রোগী, নফল রোজাদার ও সন্তানসম্ভাবা নারীসহ বেশ কিছু মানুষ অসহায় অবস্থায় পড়ে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তারা সেদিনের সেই ঘটনাকে দুঃখজনক, আইনবহির্ভূত, অমানবিক ও ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত, প্রশাসনিক এবং একাডেমিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে, বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও প্রশাসনিক গতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর এফ নজরুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছেন। কমিটিকে ঘটনার সুষ্ঠু অনুসন্ধানের মাধ্যমে যতদ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে পোষ্যকোটা বাতিলের আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবির সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর থেকেই আমরা পোষ্যকোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি করেছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবি মানেননি। ফলে ২ জানুয়ারি আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হই। কারণ রোববার থেকে ভর্তির আবেদন শুরু হওয়ার কথা ছিল। আর মাঝখানে দুদিন শুক্র ও শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি থাকে।
এর আগে গত ২ জানুয়ারি সকাল ১০টায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা দেন আন্দোলনকারীরা। রাত ১০টার দশটার দিকে পোষ্যকোটা বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর তালা খুলে দেন তারা।
এই আন্দোলনে দুই উপ-উপাচার্যসহ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ ছিলেন। আন্দোলনকারীদের মধ্যে কিছু বহিরাগত থাকা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছিল বিতর্ক।
আরটিভি/এমকে
মন্তব্য করুন