ঢাকামঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১

আগে আ.লীগের বিচার, তারপর নির্বাচন ব্যবস্থা: জোনায়েদ সাকি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫ , ০৯:১২ পিএম


loading/img
ছবি: আরটিভি

দেশের মানুষ আগে আওয়ামী লীগের বিচার তারপর নির্বাচন ব্যবস্থা দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। 

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর সি কে ঘোষ রোডস্থ একটি রেস্টুরেন্টে জেলা গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিল পূর্ব এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার বিতাড়িত হয়েছে কিন্তু ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থা এখনও রয়ে গেছে। জুলাই-আগস্টসহ গত ১৫ বছরে যত গুম, খুন ও নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেটার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও শেখ হাসিনাসহ যারা দায়ী তাদের সকলকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। কেবল তাদেরকেই নয়, দল হিসাবে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগের দায় কতটুকু সেটাও বিচারের আওতায় আনতে হবে। তার জন্য আইন প্রণয়ন করতে হবে। এর ওপর নির্ভর করবে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত কী হবে। কোন বিচার ছাড়া মনে হবে, তারা যেন কিছুই করেনি; সে হিসেবে তারা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারে না।  

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, একটি গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক পরিবেশে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত যা হচ্ছে তা সবার সম্মুখেই হচ্ছে। আমরা সংস্কারও চাই, নির্বাচনও চাই। নির্বাচনের জন্য যেমনি সংস্কার দরকার তেমনি সংস্কারের জন্যও নির্বাচন দরকার। কারণ জনগণের সম্মতি ছাড়া সংস্কার সম্ভব হবে না। কাজেই সংস্কার এবং নির্বাচনকে একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।   

তিনি আরও বলেন, আমরা দেখছি সেনাবাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে। এই অস্থিরতার উদ্দেশ্য কী! আমরা প্রত্যেক পক্ষকে আহ্বান জানাই, যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চলছে সেটি যেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যায়। এমন কোন ভূমিকা নেওয়া ঠিক হবে না, যাতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। কেউ কারও ওপর কিছু চাপিয়ে দেওয়ার সুযোগ নাই। আমরা ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার বদলের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এটা জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে করতে হবে। না হলের ঘরের ভেতরের শত্রুরা সুযোগ পাবে।    
দেশের অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা মানে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, সবাইকে ঐক্য বজায় রাখতে হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নির্মাণে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। ফ্যাসিস্টের পলিসি ছিল দেশের জনগণকে বিভাজন কর, যারা বিরোধিতা করবে তাদেরকে শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করতে হবে। এই সমস্ত কিছু মোকাবেলা করে গণঅভ্যুত্থান তৈরি করেছি। ৭১ এর পরে আমাদের যেসব স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি, তা এখন আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। ট্যাগিং করে জনগণের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির করা মানে পুরনো ফ্যাসিবাদের কায়দা-কানুনকে জাগিয়ে দেওয়া।    

সভায় গণসংহতি আন্দোলন ময়মনসিংহের আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব এ আর এম মুসাদ্দিক আসিফের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হোসেন।    

বিজ্ঞাপন

এ সময় আবুল হোসেন বলেন, দেশে এক ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এটি পরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি করা অস্থিরতা। সম্প্রতি দেখবেন ভারতীয় মিডিয়ায় কিছু খবর প্রকাশ হয়েছে। সেটি ভিউ ব্যবসায়ীরা কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশে এক ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। এটি উদ্দেশ্যমূলক। 

তিনি আরও বলেন, সকলেই বলছে সংস্কার চায়, সংস্কার এবং আন্দোলন পরস্পরের বিরোধীতা নয়। দেশের জনগণ যেভাবে চায়, সেভাবে সংস্কার করতে হবে। বাংলাদেশকে বিপদে ফেলা যাবে না। সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, কৃষক মজুর সংহতি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আলম, নারী নেত্রী রাহাত জাহান, জেলা নাগরিক ঐক্যের সদস্য সচিব হাতেম রানা, মহানগর সুজনের সম্পাদক আলী ইউসুফ, ব্রহ্মপুত্র সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

এ সময় বিএনপি নেতা রোকনুজ্জামান সরকার রোকন বলেন, মানুষ যখন ভোটের অধিকার ফিরে পাবে, তখন ছাত্র জনতার গনঅভ্যুত্থান পূর্ণতা পাবে। আমাদের মত পথের পার্থক্য থাকবে কিন্তু দেশ সবার। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই দেশকে গড়তে হবে।

আলোচনা সভায় গণসংহতি আন্দোলনের দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাংবাদিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

আরটিভি/এমকে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |