কুমিল্লার দেবিদ্বার এবং মুরাদনগরে ৫ দিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ওই দুই উপজেলার লক্ষাধিক গ্রাহক বিদ্যুতের সংকটে চরম বিপদে পড়েছেন। এতে এসব গ্রাহকের ফ্রিজে রক্ষিত মাছ মাংস এবং অন্যান্য হিমায়িত খাদ্য পচে গেছে। এ দিকে বিদ্যুৎ সংকটে ওই দুই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বহুতল ভবনের বাসিন্দারা চরম বিপাকে পড়েছে।
রোববার (১ জুন) সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
দেখা যায়, চলমান নিম্নচাপে সৃষ্ট ঝড় তুফানে পল্লী বিদ্যুতের বহু লাইন, তার, পুল, ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে জেলার দেবিদ্বার এবং মুরাদনগর উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের অধিকাংশ ফিডার বন্ধ রয়েছে। এতে দুই উপজেলার ৯০ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুতের সরবরাহ পাচ্ছে না। যার ফলে এসব এলাকার গ্রাহকদের ফ্রিজে রাখা হিমায়িত সব ধরনের খাদ্য পচে গেছে। বিশেষ করে পাকা ভবন এবং বহুতল ভবনের বাসিন্দারা চরম বিপাকে পড়েছে। এসব ভবনে মোটরে পানি উত্তোলন করতে না পারায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এতে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে বহুতল ভবনের বাসিন্দারা।
অপরদিকে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ৫দিন হয়ে গেলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন করতে না পারায় গ্রাহকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
দেবিদ্বার উপজেলার ভিংলাবাড়ী গ্রামের আবুল হাসেম ড্রাইভার বলেন, গত ৫ দিন ধরে আমাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। ফ্রিজে যত মাছ-মাংস ছিল সব পচে গেছে। কবে বিদ্যুৎ আসবে তাও জানা নেই।
মুরাদনগর উপজেলার নগরপাড় এলাকার বাসিন্দা আবু ইউসুফ মোল্লা বলেন, পাঁচ তলা ভবনে থাকি, বিদ্যুৎ না থাকায় পানি উঠাতে পারছি না। পাঁচ দিন যাবত গোসল ধোয়া মুছার কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। রান্নাবান্নার জন্য বালতি দিয়ে কিছু পানি সংগ্রহ করছি। এমতাবস্থায় চরম সংকটের মধ্যে আমাদের দিন কাটছে। দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা না হলে আমাদের দুঃখ দুর্দশা আরও বাড়বে।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ দেবিদ্বার জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. আকিয়াব হোসেন বলেন, চলমান ঝড়ে দেবিদ্বার এবং মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৪টি পোল ভেঙে গেছে। কমপক্ষে ১০ জায়গায় ক্রসআর্ম ভেঙেছে, ৩৫ জায়গায় তার ছিঁড়ড়ে গেছে, ৪টি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। কতটি ট্রান্সফার নষ্ট হয়েছে এখনও তা বলা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে চলমান ঝড়ে আমাদের পল্লী বিদ্যুতের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদের কর্মচারীরা অবিরাম কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করি, দুএকদিনের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে।
আরটিভি/এমকে