কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সালদানদী রেল স্টেশনের দোকান নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই নারীকে কুপিয়ে আহত করেছে স্থানীয় সন্ত্রাসী দল। এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় আহতরা কুমিল্লা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
আহতরা হলেন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার উত্তর বাগড়া গ্রামের ওসমান গণির স্ত্রী শারমিন আক্তার ও রফিক মিয়ার স্ত্রী শিরিন আক্তার। আহতরা বর্তমানে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, আহত শারমিন আক্তারের স্বামী ওসমান গণি ১৪ বছর ধরে সালদানদী রেল স্টেশনের একটি দোকানে ব্যবসা করে আসছেন। কিছুদিন পূর্বে তার স্বামী জীবিকার তাগিতে সৌদি আরবে যান। এরপর থেকে ওই নারী দোকানটি পরিচালনা করে আসছিলেন। সম্প্রতি সময়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আল মামুন মিয়া তার দলবল নিয়ে ওই দোকানটি দখলের চেষ্টা চালান। দোকানটি দখল করতে না পেরে ওই নারীর নিকট তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
ওই নারী টাকা দিতে অস্বীকার করায় গত ১৩ মে প্রথম দফা দোকানে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেন। এ ছাড়াও ১৫ দিনের মধ্যে দোকান ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে আসেন।
ওই নারী দোকান না ছাড়ায় রোববার (১ জুন) বিকেলে দল-বল নিয়ে ইউপি সদস্য ওই নারীর উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা এ সময় শারমিন আক্তার ও শিরিন আক্তার কে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে যখন করে। এ ছাড়াও দোকানে থাকা মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
আহতদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাদেরকে প্রথমে ব্রাহ্মণপাড়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
আহত ওই নারী জানান, এখনও মেম্বারের লোকজন তাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। মেম্বারের ভয়ে তারা এলাকায় যেতে পারছে না। এ বিষয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আল মামুন মিয়া জানান, ওই নারীর সঙ্গে দোকান নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব রয়েছে। তবে এ বিষয়ে তিনি আদালতে মামলাও করেছেন। তবে ওই নারীর ওপর হামলা, মারধর ও লুটপাটের সঙ্গে তিনি জড়িত নন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, হামলা ও মারধরের ঘটনায় শারমিন আক্তার বাদী হয়ে কুমিল্লা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নম্বর আমলী আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মমিনুল হক বিষয়টি আমলে নিয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানা অফিসার ইনচার্জকে মামলাটি রেকর্ড ভুক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে এ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দেবিদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া সার্কেল) মো. শাহিন।
আরটিভি/এমএ-টি