জন্মদিনের দাওয়াতে ডেকে বিয়ে, অতঃপর...

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫ , ০৯:২৯ এএম


জন্মদিনের দাওয়াতে নিয়ে বিয়ে, অতঃপর...
ফাইল ছবি

কিশোরগঞ্জে বাজিতপুর উপজেলার হালিমপুরগ্রামের ইন্দুর দাইর এলাকার আশরাফ উদ্দিনের মেয়ে মোছা. জুয়েনা আক্তার পেশায় একজন ডাক্তারের সহকারী। চাকরির সুবাদে দীর্ঘদিন যাবত জেলা শহরের নিউটাউন এলাকায় ছোটবোন সানজিদা আক্তার শাম্মীকে নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন।

বিজ্ঞাপন

২০২০ সালে গুরুদয়াল সরকারি কলেজে পড়াচলাকালীন পরিচয় হয় ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার গাংগাইল গ্রামের আফতাব উদ্দিনের ছেলে মো. আব্দুল গাফফারের সঙ্গে। সেই কলেজ থেকেই হয় পরিচয়। ধীরে ধীরে সেই পরিচয় সম্পর্কে রূপ নেয়।

এরপর ২০২২ সালের ২৪ মার্চ জুয়েনা তার জন্মদিনে গাফফারকে নিউটাউনের ভাড়া বাসায় আমন্ত্রণ করে। জুয়েনার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে গাফফার নিউটাউনের বাসায় আসলে জুয়েনা তাকে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু গাফফার তার কাছে সময় চাইলে জুয়েনা সময় না দিয়ে পুলিশ ডেকে গাফফারকে ধরিয়ে দেয়।

বিজ্ঞাপন

পরে গাফফারকে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিয়ে গেলে জুয়েনা নিজের পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে ও গাফফারের পরিবারকে না জানিয়ে কাজী অফিসে নিজেদের বিয়ের কাজ সারে। এর কিছু দিনপর জুয়েনা তার স্বামীর বাড়ি নান্দাইলের গাংগাইল গেলে গাফফারের পরিবার তাকে বধূ হিসেবে বরণ করে নেয়।

জানা যায়, তাদের বৈবাহিক জীবনের তিনমাস অতিক্রম হওয়ার পর জুয়েনা তার বিয়ের পূর্বের চাকরি টিকিয়ে রাখতে নান্দাইল থেকে প্রতিদিন কিশোরগঞ্জ শহরে আসতেন। কিন্তু তার স্বামী চাকরি করতে নিষেধ করলে দুজনের মধ্যে সৃষ্টি হয় ঝগড়াঝাটি। এক পর্যায়ে রাগের বসে জুয়েনা স্বামীর বাড়ি থেকে নিউটাউনের বাসায় চলে আসলে তাকে নিতে গাফফারের পরিবারের লোকজন নিউটাউনে আসে। কিন্তু জুয়েনা গাফফারের সঙ্গে সংসার করবেনা বলে জানায় এবং সবাইকে জেলের ভাত খাওয়ানোর হুমকি দেয়।

গাফফারের পরিবার বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসার জন্য নান্দাইল ও হালিমপুরের গণ্যমান্য লোকজনের সাহায্য নিলে তারাও জুয়েনাকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর জুয়েনাকে তার স্বামী গাফফার তালাকের নোটিশ পাঠালে জুয়েনা সেই নোটিশ পেয়ে গাফফারকে আসামি করে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা দায়ের করে। জুয়েনার এমন আচরণে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নান্দাইল ‍উপজেলার গাংগাইল হালিমা আইয়ু বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রায়হান মাস্টার বলেন, গাফফার ও জুয়েনার বিয়েটা মূলত একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠান থেকে হয়। তাদের বিয়ের বিষয়টি সম্পর্কে গাফফারের পরিবার কিছুই জানত না। হঠাৎ একদিন জুয়েনা গাফফারের বাড়িতে আসলে আমরা গ্রামবাসী বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হই। 

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, জুয়েনা কিশোরগঞ্জ শহরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চাকরি করে। তার স্বামী সেই চাকরি করতে না দেওয়ার কারণে দুজনের মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়াঝাটি হত। হঠাৎ একদিন সে বাড়ি থেকে বের হয়ে নান্দাইল থানায় তার স্বামীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করলে বাড়িতে পুলিশ আসে এবং দুজনের পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে একটি সমাধানও হয়। কিন্ত জুয়েনা সেই সমাধান না মেনে গাফফারকে ছেড়ে চলে যায়। পরবর্তীতে আমাদের এবং তাদের গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা কয়েকবার জুয়েনাকে আনার চেষ্টা করেও কোনো সমাধান হয়নি। জুয়েনার সাফ কথা গাফফারের সংসার করবে না। কিছুদিন পর গাফফার জুয়েনাকে ছেড়ে দিলে জুয়েনা ক্ষোভে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে নারী নির্যাতনের মামলা দায়ের করে।

বাজিতপুরের তালুকদার বাবু মিয়া কবরস্থান জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ইয়াহিয়া বলেন, জুয়েনার বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম। জুয়েনাকে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি।  কিন্তু সে সংসার করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। সে তার স্বামীসহ তার পরিবারেরে লোকজনের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ বিষয়ে জুয়েনার সঙ্গে কথা বললে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং কথা বলতে রাজি হননি।

আরটিভি/আইএম

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission