ছেলেকে বিয়ে করাবে, ছেলের অধিকার অন্য একটা মেয়ের কাছে চলে যাবে এটা রাসেলের মা মন থেকে মেনে নিতে পারে না। আর তাই রাসেলকে বিয়ে করানো নিয়ে রাসেলের মায়ের যতো খুঁটিনাটি বাহানা। অনেক দিন বলার পর রাসেলের মা রাজি হয়েছে প্রেমিকা সোনিয়াদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে। রাসেলের মা প্রথমেই বিপত্তিটা ঘটায় রঙ চা নিয়ে। সোনিয়াদের বাড়ির রেওয়াজ অনুযায়ী চিনি ছাড়া রঙ চা দিয়ে রাসেলের মাকে আপ্যায়ন করা হয়েছে।
আর রাসেলের মাও খুঁত ধরার উপায় পেয়ে গেল। নতুন আত্মীয়কে যে পরিবার চিনি ছাড়া রঙ চা দিয়ে আপ্যায়ন করে, তারা আর যাই হোক স্যোশাল মানুষ হতে পারে না। ছেলের মাকে চিনি ছাড়া রঙ চা খেতে দিয়ে অপমান করা হয়েছে। ওই পরিবারের মেয়েকে ছেলের বউ হিসেবে কিছুতেই মেনে নেবে না রাসেলের মা।
রাসেল ও সোনিয়ার ৫ বছরের প্রেমে সামান্য এক কাপ চায়ের কারণে আজকে ভাঙনের মুখে। রাসেল সোনিয়ার সঙ্গে দেখা করে তার মাকে চিনি ছাড়া রঙ চা দিয়ে অপমান করার কারণ জানতে চায়। সোনিয়া ও রাসেলের মধ্যে এটা নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়। রাসেল ও সোনিয়ার এতো দিনের ভালোবাসার সম্পর্কে ঝগড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে রাসেল শর্ত দেয় তাদের বাসায় গিয়ে মায়ের কাছে সরি না বললে এ বিয়ে কিছুতেই সম্ভব না।
অবশেষে সোনিয়া রাসেলের বাসায় গিয়ে মায়ের কাছে রঙ চায়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে। রাসেলের মায়ের মন একটু নরম হয়। সোনিয়া নিজে খুশি হয়ে রাসেলের মাকে এক কাপ চা বানিয়ে খাওয়ায়। এবার ভুলে চিনির জায়গায় লবণ দিয়ে দেয়। রাসেলের মা তো চা মুখে দিয়ে প্রায় বমি করার উপক্রম। এবার ঘটনা আরও সিরিয়াস পর্যায়ে পৌঁছায়। রাসেলের মা তো বিয়ে না করানোর আরও বড় বাহানা পেয়ে গেল। এ নিয়ে রাসেল ও সোনিয়ার মধ্যে আবারও ঝগড়া শুরু হয়।
রাসেল পরিষ্কার জানিয়ে দিলো যে মেয়ে বিয়ের আগেই শাশুড়িকে নির্যাতন করতে পারে বিয়ের পর কী করবে, তা বুঝা হয়ে গেছে। সোনিয়া ও রাসেল ফাইনালি দেখা করে ঝগড়ার মাধ্যমে ব্রেকআপ করে ফেলে। অন্যদিকে সোনিয়ার পরিবার জানিয়ে দেয়, ৭ দিনের মধ্যে সোনিয়াকে অন্য ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেবে। সোনিয়ার অন্যকোথাও বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে শুনে রাসেল আর ঠিক থাকতে পারছে না। আবার মাকেও সোনিয়ার কথা বলতে পারছে না। রাসেল সোনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের কয়েকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ। সোনিয়াও এবার পরিষ্কার জানিয়ে দেয় পরিবারের পছন্দ করা ছেলেকেই সে বিয়ে করবে। রাসেলকে সে ভুলে গেছে। রাসেল বাসায় মায়ের কাছে কষ্টের কথা গোপন করলেও ভেতরে ভেতরে অনেক কষ্ট পাচ্ছে। রাস্তাঘাটে সোনিয়ার সঙ্গে সিনক্রিয়েট করছে। হবু বরের সঙ্গে সোনিয়া ঘুরে বেড়াচ্ছে সেখানে গিয়েও রাসেল সিনক্রিয়েট করছে। ঘুমের ট্যাবলেট হাতে নিয়ে সোনিয়ার সামনে গিয়ে আত্মহত্যার হুমকী দেয়। কিন্তু সোনিয়া আর রাসেলের কোনো ব্যাপারেই আগ্রহ দেখাচ্ছে না। সে বাসার পছন্দ করা ছেলেকেই বিয়ে করবে। রাসেলের মন মরা দেখে রাসেলের মা সব বুঝতে পারে। রাসেলের কাছে শুনতে পারে যে সোনিয়ার অন্য জায়গায় বিয়ের কথাবার্তা চলছে। রাসেলের মা ছেলের মনের কষ্টের কথা চিন্তা করে নিজের মনের সংকীর্ণতার কথা ছেলেকে খুলে বলে। সেই সঙ্গে এটাও বলে- আমি আবার সোনিয়াদের বাসায় যাব।
রাসেলের মা সোনিয়াদের বাসায় প্রস্তাব নিয়ে যায়। সবার কাছে সব ঘটনার জন্য সরি বলে। এবার ইচ্ছে করেই রাসেলের মা চিনি ছাড়া চা নিজে থেকেই চেয়ে খায় এবং খুব তৃপ্তি অনুভব করে। রাসেল ও সোনিয়ার বিয়ের কথাবার্তা পাঁকা হয়ে যায়। রাসেলের মায়ের একটা উপলব্ধি হয় মন যদি পজিটিভ থাকে চিনি ছাড়া রঙ চা-ও মধুর চেয়ে স্বাদ লাগতে পারে। পৃথিবীতে সবকিছুই মনের ব্যাপার, মনে ধরলে সব ভালো লাগে। আর নেগেটিভ মাইন্ড হলে মধুও তেতো লাগতে পারে।
এমন গল্পে নির্মিত হয়েছে নাটক ‘চিনি ছাড়া রঙ চা’। জায়েদ জুলহাসের রচনায় নাটকটি পরিচালনা করেছেন বর্ণ নাথ। এতে অভিনয় করেছেন যাহের আলভী, মাখনুন সুলতানা মাহিমাসহ আরও অনেকে। বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত এই নাটকটি শনিবার (৯ জুলাই) রাত ৮টায় আরটিভিতে প্রচার হওয়ার পর ঈদের দিন বিকেল ৫টায় আরটিভি ড্রামা ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পেয়েছে।