এক মাস পর যে কারণে খোলা হচ্ছে মনি কিশোরের ফ্ল্যাটের তালা
গেল ১৯ অক্টোবর রামপুরার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মনি কিশোরের মরদেহ। তিনি ভাড়া বাসায় থাকতেন। এরপর থেকেই সেই ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ ছিল। পু্লিশের ধারণা, অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে তার।
রোববার (১৭ নভেম্বর) তাই তদন্তের স্বার্থে গায়কের মৃত্যুর এক মাস পর খোলা হচ্ছে মনি কিশোরের ফ্ল্যাটের তালা। তবে তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া অন্যদের প্রবেশ নিষেধ ছিল। গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার দায়িত্বে থাকা রামপুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খান আবদুর রহমান।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, বাড়ির মালিক ও মনি কিশোরের পরিবার থেকে বাড়িটি খালি করার কথা বলা হচ্ছিল। সবার সঙ্গে কথা বলেই বাড়িটি খালি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে আইনি কোনো বাধা নেই। কারও কোনো অভিযোগও নেই।
দায়িত্বপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এক মাসের মতো হয়ে গেল। এর মধ্যে বাসার মালিক রুমটি খালি করার কথা বলছিলেন। তারাও আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছিলেন। যে কারণে দুই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের উপস্থিতিতেই খালি করা হবে ফ্ল্যাটটি।
এদিকে এখনও মনি কিশোরের মৃত্যু কারণ জানা যায়নি। সেই তদন্ত প্রতিবেদন এখনও হাতে পাননি পুলিশ। তবে আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন খান আবদুর রহমান।
গায়কের বাসার মালিক শামসুদ্দোহা তালুকদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যেহেতু অনেক দিন হয়েছে মনি কিশোরের মরদেহ দাফন হয়েছে। আর কারও কোনো অভিযোগও নাই। এখন রুমটি খালি করে দিলে আমাদের জন্য ভালো হয়। এটা আমরা পুলিশ ও মনি কিশোরের ভাইকে জানিয়েছিলাম। পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, রুমটি খালি করা হবে। মনি কিশোরের ভাই আসার কথা রয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের লোকও থাকবেন। তাদের সামনেই সব বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, পপি ভবনের ওই ফ্ল্যাট একাই থাকতেন মনি কিশোর। কয়েকদিন ধরে তাকে ফোনে পাচ্ছিলেন না বাসার মালিক। এদিকে রুম ভেতর থেকে তালা দেওয়া ছিল। অন্যদিকে রুমটি থেকে গন্ধও ছড়িয়ে পড়ে। তখন সবার ধারণা হয় হয়তো কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে। পরে ৯৯৯–এ পুলিশকে ফোন দেওয়া হলে তারা রুমের মধ্যে মৃত অবস্থায় পান মনি কিশোরকে।
পরবর্তী সময় দাফন নিয়ে জটিলতা হয়। পরে গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রীর বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদের পাশেই একটি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মনি কিশোর পাঁচ শতাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য— ‘কী ছিলে আমার’, ‘সেই দুটি চোখ কোথায় তোমার’, ‘তুমি শুধু আমারই জন্য’, ‘মুখে বলো ভালোবাসি’, ‘আমি মরে গেলে জানি তুমি’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তার সবচেয়ে শ্রোতাপ্রিয় গান ‘কী ছিলে আমার’ তারই সুর করা ও লেখা। মৃত্যুর আগে দীর্ঘদিন নতুন গান প্রকাশ থেকে দূরে ছিলেন এই গায়ক।
আরটিভি/এইচএসকে
মন্তব্য করুন