ঢাকাবুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২

সেই রাতে ভয়ে আমার ছেলের হাত-পা কাঁপছিল: ওমর সানী

আসিফ আলম

শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ , ০৭:০৫ পিএম


loading/img
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাই চলচ্চিত্রের একসময়ের দর্শকপ্রিয় নায়ক ওমর সানী। অভিনয়ে আগের মতো নিয়মিত নন। সর্বশেষ তাকে ‘ডেডবডি’ সিনেমায় দেখা গেছে। বর্তমানে নিজের নানারকম ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার নতুন আরেকটি পরিচয়ে হাজির হলেন এই অভিনেতা। সম্প্রতি আরটিভির সঙ্গে কথা হয় এই দর্শকপ্রিয় অভিনেতার। আলাপ কালে এই অভিনেতা চলচ্চিত্রসহ নানা বিষয় নিয়ে খোলা মেলা কথা বলেন। 

বিজ্ঞাপন

509601806_1457961688691386_5460357915066676867_n

আরটিভি: শুরুতেই জানতে চাই সব রেখে এই খাবারের ব্যবসায় নাম লিখালেন কেন? 

বিজ্ঞাপন

ওমর সানী: হালালভাবে যেকোনো ব্যবসা করাকেই আমি সমর্থন করি। হালালভাবে কাজ করে জীবিকা চালানোর মাঝে অন্যরকম শান্তি আছে। তাই তাই আমি ব্যবসা হিসেবে খাবাবের ব্যবসাই বেঁছে নিয়েছি। আসলে আমি মানুষের কাছাকাছি থাকতে চাই, প্রকৃতির মাঝে থাকতে চাই। হিংসা, হানাহানি, রাজনীতি, জৌলুসতা এখন আর আমাকে টানে না। তাই শহর থেকে দূরে এই ব্যবসা নিয়েই আছি।

500226206_1048544853876196_1099317355454316777_n_(2)

আরটিভি: আগের মতো এখন আর আপনাকে পর্দায় দেখা যায় না। এর পেছনের কারণ জানতে চাই? 

বিজ্ঞাপন

ওমর সানী: অনেক শিল্পীর ক্যারিয়ার এই বয়সে এসে শুরু হয়। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে ইন্ড্রাস্টিতে এখন হয়ে গেছি বয়স্ক অভিনেতা। অথচ পাশের দেশেই এখনো ৫৫-৬০ বছরের অভিনেতা আছে যারা অভিনয় করে যাচ্ছে নিয়মিত। কিন্তু আমাদের দেশে এখন অনেক নির্মাতাই আমাদের নিয়ে ভাবে না। তবে আমি চলচ্চিত্র ছাড়িনি। এখনো অপেক্ষায় থাকি একটি ভালো গল্পের। তবে কিছু কাজের অফার আসছে সেগুলো আমি কোনো না কোনো কারণে নিজে থেকেই করছি না। 

বিজ্ঞাপন

আরটিভি: সম্প্রতি অমিত হাসান বলেছেন ‘শিল্পী সমিতি আছে, কিন্তু শিল্পী নাই’, তার কথার সঙ্গে আপনি কি একমত? 

ওমর সানী:  অবশ্যই আমিত একদম ঠিক কথা বলেছে। আমি যখন নব্বইতে চলচ্চিত্রে আসি তখন এ ক্যাটাগরির শিল্পী ছিল ১০০-এর ওপরে। এরপর তা কমে ৬০-এর মতো হয়। এখন আছে হাতে গোনা কয়েকজন। আর যারা আছে তারা থেকেও নেই। যারা এখন শিল্পী সমিতিতে গিয়ে বসছে, দৌড়াচ্ছে তারা শুধুমাত্র ভাইরাল হতেই এমন করছে। তাদের টার্গেট সমিতির চেয়ার দখল করে সেটিকে নানা খাতে ব্যবহার করা। খারাপ রাজনীতি শিল্পী সমিতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমিও মিশাকে প্রায়ই বলি আমার মেম্বারশিপটা বাদ করে দিতে। আমি থাকতে চাই না শিল্পী সমিতিতে। থাকলে অনেকেই প্রশ্ন করবে আমি সভাপতি নির্বাচন করবো কি না? না থাকলে কেউ জিজ্ঞাসাও করবে না। আমার ইচ্ছাও নেই, ইচ্ছাটাও মরে গেছে। একটা মরা মানুষের মতো আছি এখন শিল্পী সমিতিতে। 

omor-sani-20241029145621

আরটিভি:  সমিতির পরিবেশ ঠিক করতে কি কখনও চেষ্টা করেছেন? 

sani-2-20230327154713

ওমর সানী: হ্যাঁ অবশ্যই, আমি চেষ্টা করেছি, মৌসুমী করেছে, অমিত করেছে। কিন্তু পরে পুলিশের আগমন হলো। জায়েদ খান, নিপুণের মতো কিছু লোকজন সমিতিতে বসলো। 

আরটিভি:  সমিতির নির্বাচন নিয়ে এখন মোটা অংকের টাকা লেনদেন হয়। বিষয়টি নিয়ে আপনি কী বলবেন? 

ওমর সানী:  নাম বলতে চাই না, তবে আল্লাহ উনাকে অনেক দিয়েছে। কিন্তু তিনি নির্বাচনের জায়গাটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলেছেন। তিনি একজন ভালো অভিনেতা, বড় প্রযোজক। চলচ্চিত্রে তার অবদান অনেক। কিন্তু চলচ্চিত্রের শিল্পীদের টাকা দিয়ে দুই-পাঁচ নির্বাচন করাটা কি শোভনীয় ব্যাপার! কেন আমাদের ধরে নিতে হবে শিল্পী সমিতির নির্বাচন করতে হলে কোটি টাকা নিয়ে নামতে হবে? কী আছে এই সমিতিতে? 

popiomorsani2452025-2505241246

আরটিভি: সম্প্রতি পপি বলেছেন, চলচ্চিত্রে কাজ করার কারণে আমার অনেক বদনাম হয়েছে। তাই এখন সিনেমা নয় বরং সংসার, স্বামী আর সন্তান নিয়েই থাকতে চাই। তার এমন মন্তব্যটি আপনি কিভাবে দেখছেন? 

ওমর সানী: পপি যদি এমন কথা বলে থাকে, তাহলে তাকে স্টুপিড (বোকা) বলা ছাড়া আর কিছু বলার নেই। আমি তো তার দুলাভাই, শাসন করার অধিকার আমার আছে। ওর এই মন্তব্য আসলে নিজেকেই ছোট করেছে। পপি কি হাজার হাজার কোটি টাকার মালিকের মেয়ে, যে সিনেমাকে এভাবে অপমান করবে? ও যদি নায়িকা না হতো, কেউ চিনত না, এমনকি ওর স্বামীও বিয়ে করত না। সিনেমা ওকে দিয়েছে নাম, পরিচয়, সম্মান-আর এখন সেই মাধ্যমকে ছোট করে কথা বলা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।

Mousumi-omar-sany-son-photo-

আরটিভি: চলচ্চিত্র প্রযোজনা নিয়ে কী ভাবছেন? 

ওমর সানী: আমাদের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছি ২৭-২৮ বছর আগে। গরিবের রাণীসহ আরও চার/পাঁচটা ছবি নির্মাণ হয়েছে আমাদের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে। এরপর আমার শ্বশুর মারা যাওয়ার পর কিছুদিন বন্ধ ছিল। কিন্তু সেটার রেশ ধরেই আমার ছেলেকে আমি ফিল্ম অ্যান্ড টেকনোলজির ওপর পড়াশোনা করিয়েছি। এরপর স্বাধীন প্রযোজনা থেকে আমি ৫০টির ওপর নাটক বানিয়েছি। কিন্তু একটা সময় গিয়ে দেখলাম ওর ভেতর অনীহা কাজ করছে চলচ্চিত্র নিয়ে। আমাকে বলে বাবা আমি চলচ্চিত্রে কাজ করতে পারবো না। যেদিন এফডিসিতে কোনো এক নির্বাচনে শাকিব খানের ওপর হামলা হয় সেদিন আমার ছেলে আমার সঙ্গেই ছিল সেই জায়গায়। সে ভয়ে কাঁপছিল আর বলছিল বাবা আমার কপাল ভালো না। চলচ্চিত্র নিয়ে পড়াশোনা করে আসলাম আর এখন এই চলচ্চিত্রের এই অবস্থা। এরপর সে চলচ্চিত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল।

আরটিভি/এএ/এআর

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |