ট্যুরিস্ট ভিসা চালুর ঘোষণা ভারতের
ভারতে করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ট্যুরিস্ট ভিসা আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে চালু হতে যাচ্ছে।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, দেড় বছর পর বিদেশি পর্যটকদের জন্য ভারতীয় সীমান্ত খুলে দেওয়া হচ্ছে। পর্যটন খাতে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ভিসা পুনরায় চালুর ঘোষণা দিয়েছে। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে বিদেশিদের নতুন করে পর্যটন ভিসা দেওয়া শুরু করবে ভারত।
দেড় বছর পর ট্যুরিস্ট ভিসা চালুর বিষয়ে দেশটির কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়, পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং রাজ্য সরকারের মতো অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্র: এনডিটিভি
এফএ/টিআই
মন্তব্য করুন
বিজিবিকে যে অনুরোধ করল বিএসএফ
সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে বাংলাদেশিদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) অনুরোধ জানিয়েছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাসের মাথায় বিএসএফের পক্ষ থেকে এই অনুরোধ জানানো হলো।
এক বিবৃতিতে বিএসএফ জানিয়েছেন, তারা বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার আন্তর্জাতিক সীমানার নিশ্ছিদ্র রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাশাপাশি সীমান্ত অঞ্চলের জনগণের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতেও বদ্ধপরিকর। গত বৃহস্পতিবার কলকাতায় অনুষ্ঠিত ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিযুক্ত বিশেষ কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর বিএসএফ এই অবস্থান ব্যক্ত করেছে।
বিএসএফ জানিয়েছে, ১২ আগস্টের পর থেকে বিএসএফ ও বিজিবির বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা ৭২২ দফায় বৈঠক করেছেন। বিবৃতিতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী দুর্বল সীমান্ত পয়েন্টগুলোতে একযোগে ১ হাজার ৩৬৭টি সমন্বিত টহল (এসসিপি) পরিচালনা করেছে।
বিবৃতিতে বিএসএফ বলেছে, এসব সীমান্ত বৈঠকে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভারতীয় ভূখণ্ডে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। বিজিবি ভারতীয় নাগরিক ও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, উভয় বাহিনীর কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক যোগাযোগে করে চলেছেন এবং বাস্তব সময়ের ভিত্তিতে বিভিন্ন অপারেশনাল তথ্য আদান-প্রদান করছেন। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিএসএফের কলকাতা-সদর দপ্তর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের নেতৃত্বে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটি বাংলাদেশে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক, হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করবে।
সীমান্ত থেকে ৪৩ বাংলাদেশি পাসপোর্ট জব্দ
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এলাকা থেকে ৪৩টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট এবং ৬টি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জব্দ করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় বিএসএফ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় দায়িত্বরত বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের অধীনে তারালি-১ সীমান্ত চৌকি এলাকার ১৪৩ ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানের একটি চেষ্টা ব্যর্থ করেন। পাশাপাশি ৪৩টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও ৬টি ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটসহ বেশ কিছু নথি জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় সন্দেহভাজন চোরাকারবারিকেও।
বিএসএফের, এই সব নথিপত্র ভারত থেকে বাংলাদেশে পাচার করা হচ্ছিলো। শনিবার বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের নিয়মিত টহলের সময় স্থানীয় সোনাই নদীতে একটি সন্দেহজনক সাদা বস্তা ভাসতে দেখেন বিএসএফ জওয়ানরা। কাছে গেলে দেখা যায়, বস্তাটি বাংলাদেশের দিক থেকে দড়ির সাহায্যে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত সন্দেহজনক বস্তাটি উদ্ধার করতে নোঙর ও হুক ব্যবহার করেন। উদ্ধার করে সেটি তরালি-১ চেকপোস্টে নিয়ে আসা হয়। পরে তল্লাশি চালিয়ে ওই বস্তার ভেতর থেকে ক্রোয়েশিয়ার জন্য বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ইস্যুকৃত ৪৩টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও ৬টি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জব্দকৃত বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটগুলো স্থানীয় তেতুলিয়া পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আন্তঃসীমান্ত চোরাচালান চক্রের জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করছে বিএসএফ। তাদের ধারণা, পাসপোর্ট ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটগুলো অবৈধ অভিবাসন বা মানব পাচারের জন্য ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল।
পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে গ্রেপ্তার চার বাংলাদেশি
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে চার বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে সেখানকার পুলিশ।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) কলকাতার উত্তর দিনাজপুরে রায়গঞ্জের মোহিনীগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের।
এ সময় তাদের সঙ্গে তাদের আশ্রয়দাতাকেও ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। তার নাম অচিন্ত্য বর্মণ বলে জানা গেছে। এ ছাড়া গ্রেপ্তার চার বাংলাদেশির নাম হৃদয় বর্মণ (১৭), তুলা বর্মণ (২০), অন্তর বর্মণ (১৯) এবং লিপু রায় (২৯)।
পুলিশের একটি সূত্র বলেছে, ওই বাংলাদেশিরা বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা। তারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর সীমান্ত লাগোয়া মোহিনীগঞ্জ গ্রামে আশ্রয় নেন। পরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রোববার তাদের গ্রেপ্তার করে রায়গঞ্জ পুলিশ। গ্রেপ্তারের পরপরই রায়গঞ্জ জেলা আদালতে তোলা হয় ওই বাংলাদেশিদের।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই বাংলাদেশিরা পুলিশকে জানিয়েছেন, দেশের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থানের সমস্যায় পড়েছেন তারা। এ কারণে সীমান্ত পেরিয়ে কাজের সন্ধানে কলকাতায় পাড়ি জমিয়েছেন তারা।
তবে, তাদের পশ্চিমবঙ্গে যাওয়ার নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে রায়গঞ্জ পুলিশ।
চাকরি হারালেন কোটার সুবিধা নেওয়া তরুণী
কোটা ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে সরকারি চাকরি বাগিয়ে নেওয়া আলোচিত তরুণী পূজা খেড়করকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভারতের বিতর্কিত এই আইএএস কর্মকর্তাকে তার প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়েছে, ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (ইউপিএসসি) পরীক্ষায় নিজের নাম, বাবা-মায়ের নাম, ছবি, স্বাক্ষর, প্রতিবন্ধী প্রশংসাপত্র সবই বারবার বদলেছেন পূজা। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গেল ৩১ জুলাই পূজার নিয়োগ বাতিল করে ইউপিএসসি। আদালতে পরিচয় জাল করে আমলা হওয়ার প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকার অল ইন্ডিয়া সার্ভিস অ্যাক্ট, ১৯৫৪ এবং সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা ২০২২ ধারার শিক্ষানবিশ আইন প্রয়োগ করে পূজার নিয়োগ বাতিল করেছে।
ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, ভবিষ্যতে পূজা আর কোনো সরকারি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং জালিয়াতির মামলাও করা হয়েছে।
ইউপিএসসির সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পূজা। তার যুক্তি ছিল, একবার আমলা হিসেবে নিযুক্ত হলে আর ইউপিএসসির কিছু করার থাকে না। ফলে পূজাকে বরখাস্ত করার ক্ষমতাও তাদের হাতের বাইরে। এরপরই তার নিয়োগ বাতিল করল কেন্দ্র।
সেভেন সিস্টার্সের ৬০ কিমি ভেতরে ঢুকে পড়েছে চীনা সেনারা, যা জানাল ভারত
ভারতের সেভেন সিস্টার্সের অন্তর্ভুক্ত অরুণাচল প্রদেশের প্রায় ৬০ কিলোমিটার গভীরে ঢুকে পড়েছে চীনের সশস্ত্র বাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএএল)। দেশটির ভূখণ্ডে ঢুকে অরুণাচল প্রদেশের আনজাও জেলার কাপাপু এলাকায় ক্যাম্পও করেছে তারা।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন ঘুরে তৈরি করা এক প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য জানিয়েছে অরুণাচলের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিউজফাই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অরুণাচল প্রদেশের কাপাপু এলাকায় গভীর বনে আগুন ধরানো, পাথরের গায়ে রং ব্যবহার করে লেখা চীনের নাম এবং চীনা খাদ্যসামগ্রীর ছবি দেখে বোঝা যায়, সেখানে প্রায় এক সপ্তাহ আগে চীনের সেনারা ঢুকেছিলেন।
নিউজফাইয়ের প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, পাথরের গায়ে ইংরেজিতে ২০২৪ সাল লেখা রয়েছে। ভারতীয় ভূখণ্ডে নিজেদের মালিকানা দাবি করার অংশ হিসেবে অনুপ্রবেশের পর চীনা সেনাবাহিনী এসব কৌশল ব্যবহার করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দুই দেশকে বিভক্তকারী ম্যাকমোহন লাইনের হাদিগ্রা পাসের কাছের কাপাপুতে ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশের (আইটিবিপি) একটি ক্যাম্পের অবস্থান রয়েছে। আর আনজাও জেলার নিকটতম প্রশাসনিক এলাকা চাগলাগাম ম্যাকমোহন লাইন থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এছাড়া চাগলাগাম থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে পার্বত্য এলাকায় গ্লাইতাকরু পাসের অবস্থান।
এ বিষয়ে অরুণাচল রাজ্যের নারী ও শিশু উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী দাসাংলু পুল বলেছেন, ‘স্থানীয়দের মতে, চীনা সেনারা কাপাপু জেলায় প্রবেশ করেছিল এবং চলে যাওয়ার আগে কয়েকদিন সেখানে অবস্থান করেছিল।’
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতের একজন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা অনুপ্রবেশের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘যে এই ধরনের ঘটনা প্রায়ই অনিচ্ছাকৃতভাবে ঘটে থাকে। তিনি দাবি করেন, পিএলএ সেনারা ভারতীয় ভূখণ্ডের ৬০ কিলোমিটার ভেতরে অনুপ্রবেশ করেছে এটি মিথ্যা। কারণ এইখানকার সীমানা সঠিকভাবে চিহ্নিত না হওয়ায় এটি ঘটে থাকে।দুই পক্ষের সেনারা টহল দেয়ার সময় একে অন্যের ভূখণ্ডে না বুঝেই ঢুকে পড়ে। তারা কখন যে শত্রুর ভূখণ্ডে রয়েছে তা বুঝতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি বাফার জোনে ঘটে থাকে। এসময় জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।’
এর আগে, ২০২২ সালের আগস্টে, পিএলএ সেনারা হাদিগ্রা হ্রদের কাছে নিজেদের অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম তদারকি করেছিল। সেখানে তিনটি খননকারী যন্ত্র দিয়ে খনন কাজ পরিচালনা করতে দেখা যায় চীনা বাহিনীকে।
শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ানের নিবন্ধ / শেখ হাসিনার পতনে কর্তৃত্ব হারাচ্ছে ভারত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে এই মুহূর্তে ভারতে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। গণমাধ্যমসহ সব ধরনের প্রকাশ্য কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন তিনি। এরই মধ্যে একমাস পূর্ণ করেছে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশে ক্ষমতার এই পটপরিবর্তনে ইতোমধ্যে ঢাকার ওপর নিজেদের কর্তৃত্ব হারাতে শুরু করেছে ভারত, যা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ব্যাপারে নতুন কর্মপন্থা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করছে মোদি সরকারকে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) এমনটিই দাবি করা হয়েছে ‘শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ান’-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে। লঙ্কান সংবাদমাধ্যমটি অবশ্য বলছে, স্পষ্টতই বাংলাদেশে প্রভাব কমছে ভারতের, তবে বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক কোন দিকে যাবে, সেই চলকগুলো এখনও রয়েছে নয়াদিল্লির নিয়ন্ত্রণে।
ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সাম্প্রতিক এক বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে নিবন্ধটিতে বলা হয়েছে, রাজনাথ সিং সম্প্রতি যা বলেছেন তার পেছনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, তিনি ঘরোয়া নির্বাচনী এলাকায় ভাষণ দিতে চেয়েছিলেন এবং ভারতীয় জনগণকে আশ্বস্ত করতে চেয়েছিলেন।
তিনি তার বক্তৃতায় যা উল্লেখ করেছেন তা থেকে এটি বেশ স্পষ্ট যে তাদের অপ্রত্যাশিত কিছু মোকাবিলা করতে হবে। তার এই ‘অপ্রত্যাশিত’ শব্দটি থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তিনি মূলত বাংলাদেশের সাম্প্রতি পট-পরিবর্তনকে বোঝাতে চেয়েছেন, যেটাকে ভারতের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। মূলত ভারতের সংবাদমাধ্যম এবং কয়েকজন নীতিনির্ধারক গত ৫ আগস্টের পর তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
‘ইন্ডিয়া’স গ্রিপ অন বাংলাদেশ ইজ স্লিপিং: নো লংগার এ পন ইন রিজিওনাল পলিটিক্স’ শীর্ষক নিবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমি মনে করি ভারতের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনী ব্যবস্থাকে আশ্বস্ত করা দরকার ছিল— ‘দেখুন, এটি অপ্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু আমরা এটির দিকে নজর রাখছি,’ বা ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, আমরা জানি সেখানে কী ঘটছে।’ আমি নিশ্চিত, ভারতের বেশির ভাগ অংশ অবশ্যই এই ঘটনায় পুরোপুরি হতবাক হয়েছে, কারণ গত এক দশক বা তারও বেশি সময় ধরে ভারত বলে আসছি— বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো।’
নিবন্ধে ড. ইমতিয়াজ বলেন, এখন এখানে যে পয়েন্টটি অনুপস্থিত তা হলো, ভারতের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ছিল না; ছিল একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর সঙ্গে। আর সেটাই ব্যর্থ হয়েছে। আমি নিশ্চিত তারা এখন বুঝতে পেরেছে, কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক না করে জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা অনেক ভালো।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভারতের লখনৌতে জয়েন্ট কমান্ডার কনফারেন্সের শেষদিনে বক্তব্য দেন দেশটির কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। মাসখানেক আগে বাংলাদেশের সরকার পতনের বিষয়টি সামনে এনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনা বিশ্লেষণ করুন, ভবিষ্যতে ভারত কী ধরনের সমস্যায় পড়তে পারে সেটি নিরূপণের চেষ্টা করুন এবং অপ্রত্যাশিত যেকোনো কিছু মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকুন।’
সেদিন রাজনাথ আরও বলেন, ভারত-চীন সীমান্তে ও প্রতিবেশী দেশগুলোতে যা হচ্ছে, তা এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।
আরটিভি/এসএইচএম-টি
বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে মৌমাছি মোতায়েন করলো ভারত
বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে মৌমাছি মোতায়েন করেছে ভারত। এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ায় বাংলাদেশ সীমান্তে মৌমাছির কৃত্রিম চাক স্থাপন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ-১৮ এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে বিএসএফের ১০ থেকে ১২ জওয়ান নদীয়া জেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম কাদিপুর জড়ো হন। সেখানে তাদের মৌমাছি চাষ শিখতে দেখা যায়। সেসময় তাদের মাথা ও মুখমণ্ডলে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সরঞ্জাম পরা ছিল।
সংবাদমাধ্যমটিতে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সীমান্ত বেড়ায় বেশ কয়েকটি মৌ-বাক্স ঝুলিয়ে রাখা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৬ কিলোমিটার সীমান্তের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে বিএসএফের ৩২ নম্বর ব্যাটালিয়ন। তারা এসব বাক্স ঝুলিয়ে রেখেছে। তাদের আশা, যদি কোনো বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বা দুই দেশের কোনো চোরাকারবারি কাঁটাতারের কাছে আসে তাহলে মৌমাছি তাদের উপর আক্রমণ করবে।
বিএসএফের ৩২ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট সুজিত কুমার বলেছেন, ‘সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কী করা যায় সেই চিন্তা থেকে আমার মাথায় আসে মৌমাছি চাষের বাক্সগুলো কাঁটাতারের বেড়ায় রাখা যায়। আমরা প্রায়ই দেখি কাঁটাতার কেটে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটে। এছাড়া গরু চোরাচালানসহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয় ঘটে। আমরা খুবই অবাক হয়েছি যে সীমান্তে এসব বাক্স রাখার পর সেখানে অনুপ্রবেশ এবং চোরাচালান শূন্যের কাছাকাছি চলে এসেছে।’