জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অর্থায়ন বাতিলের সুপারিশ ট্রাম্প প্রশাসনের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি নিউজ 

বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ , ১০:১০ এএম


জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অর্থায়ন বাতিলের সুপারিশ ট্রাম্প প্রশাসনের
ফাইল ছবি

বৈশ্বিক কূটনৈতিক কার্যক্রমের বাজেট বরাদ্দ নজিরবিহীনভাবে অর্ধেকে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে অর্থায়ন সম্পূর্ণরূপে বাতিলের সুপারিশও করেছে মার্কিন ব্যবস্থাপনা ও বাজেট কার্যালয় (অফিস অব ম্যানেজমেন্ট  অ্যান্ড বাজেট বা ওএমবি)।

বিজ্ঞাপন

আগামী ১ অক্টোবর আসন্ন অর্থবছরের জন্য ওএমবির তৈরি খসড়া প্রস্তাবনা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। খবর রয়টার্সের।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর নয়, বিভিন্ন বিদেশি মিশন, জাতিসংঘ, জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন এবং ন্যাটোর জন্যও ৫০ শতাংশ বরাদ্দ কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে পাসব্যাক নামে পরিচিত এ খসড়া প্রস্তাবনায়। এছাড়া, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা, শিক্ষামূলক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচির তহবিলও কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ফুলব্রাইট প্রোগ্রামের মতো মর্যাদাপূর্ণ বৃত্তিও।

বিজ্ঞাপন

মার্কিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন। প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় জাতিসংঘ ও  ন্যাটোর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল কার্যত সম্পূর্ণভাবে বাতিল করার কথা বলা হয়েছে।

অবশ্য, প্রস্তাবিত এই বাজেট কাটছাঁটকে ‘বেপরোয়া ও বিপজ্জনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে মার্কিন ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। খসড়া প্রস্তাবটিকে ‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টির জন্য বিশাল উপহার’ বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ায় সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইকেল ম্যাকফল। 

জানা গেছে, প্রস্তাবে ১০টি দূতাবাস ও ১৭টি কনস্যুলেট বন্ধের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইরিত্রিয়া, লুক্সেমবার্গ, দক্ষিণ সুদান ও মাল্টায় অবস্থিত মিশনগুলো। এছাড়া, ফ্রান্সে পাঁচটি ও জার্মানিতে দুটি কনস্যুলেট বন্ধ করার সুপারিশ রয়েছে। স্কটল্যান্ড ও ইতালির কনস্যুলেটও রয়েছে তালিকায়।

বিজ্ঞাপন

নতুন পরিকল্পনায় ৩০টি মার্কিন মিশন ও বিদেশি সহায়তা প্রকল্প বাদ যেতে পারে। এর আগে, প্রথম মেয়াদে মার্কিন কূটনীতি এবং সহায়তা বাজেটের প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমানোর প্রস্তাব করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু কংগ্রেসে সেটি পিছিয়ে যায়।

একটি নথি পর্যালোচনা করে রয়টার্স দেখেছে, পররাষ্ট্র দপ্তরের জন্য ২০২৬ অর্থবছরে বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮.৪ বিলিয়ন ডলার, যেখানে চলতি বছর এর বাজেট রয়েছে ৫৪.৪ বিলিয়ন।

একইসঙ্গে স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট দ্বারা বিতরণ করা বৈদেশিক সহায়তা ৩৮.৩ বিলিয়ন থেকে ১৬.৯ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়া শুরু করে মার্কিন প্রশাসন। ৫ হাজারেরও বেশি প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায় এর অংশ হিসেবে। ফলে বরখাস্ত হন হাজার হাজার কর্মী। ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ফুলব্রাইট প্রোগ্রামসহ ডিপার্টমেন্টের সমস্ত শিক্ষাগত এবং সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামিং বাদ দেওয়ার প্রস্তাবও করা হয়েছে পরিকল্পনাটিতে।

রয়টার্সের পর্যালোচনা করা দ্বিতীয় নথি অনুসারে, যে ১০টি দূতাবাস বন্ধ করার জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে সেগুলো ইরিত্রিয়া, গ্রেনাডা, লেসোথো, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, লুক্সেমবার্গ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, গাম্বিয়া, দক্ষিণ সুদান, মাল্টা এবং মালদ্বীপে অবস্থিত।

সুপারিশগুলো মোগাদিহসু, সোমালিয়া এবং ইরাকে মার্কিন পোস্টের আকার হ্রাস করার আহ্বান জানিয়েছে, যা ওয়াশিংটন পরিচালিত এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যয়বহুল কূটনৈতিক মিশন হিসাবে বর্ণনা করেছে।

এছাড়া, কানাডায় মন্ট্রিল ও হ্যালিফ্যাক্সে যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলেট ছোট করে আনার কথাও বলা হয়েছে, যেখানে ‘ন্যূনতম স্থানীয় সহায়তা নিয়ে সীমিত কূটনীতি’ পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) এবং ইউনিসেফের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের মিশনগুলো সংশ্লিষ্ট শহরের দূতাবাসে একীভূত করার সুপারিশও রাখা হয়েছে নতুন প্রস্তাবনায়।

আরটিভি/এসএইচএম

 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission