কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে বিলাসবহুল একটি উড়োজাহাজ (বোয়িং জেট) পেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৪০ কোটি ডলারের বিলাসবহুল এই উপহার গ্রহণ করার সিদ্ধান্তে ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করেছেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।
ডেমোক্রেটিক দলের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, কেউই ৪০০ মিলিয়ন (৪০ কোটি) ডলারের একটি উড়োজাহাজ বিনামূল্যে দেয় না, এর বিনিময়ে কিছু না কিছু প্রত্যাশা অবশ্যই থাকে। বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে বলেছেন তিনি।
শুধু হিলারি ক্লিনটনই নয়, ট্রাম্পের নিজ দলের অনেক সিনেটরও সরব হয়েছেন বিষয়টি নিয়ে।
শনিবার (১৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য হিল।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাতারের রাজপরিবারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে ট্রাম্পকে ব্যবহারের জন্য ৪০ কোটি ডলার মূল্যের একটি বোয়িং ৭৪৭-৮ উড়োজাহাজ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্পের ওই উপহার গ্রহণ এবং বর্তমান এয়ারফোর্স ওয়ানের পরিবর্তে সেটি ব্যবহারের পরিকল্পনার খবর ক্যাপিটল হিলে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। একে দুর্নীতির প্রমাণ বলেও উল্লেখ করেন তারা।
এ সপ্তাহে ৯ জন ডেমোক্রেটিক সিনেটর পেন্টাগনকে প্রেসিডেন্টের ওই উড়োজাহাজ গ্রহণের সম্ভাব্য পরিকল্পনা এবং এতে প্রতিরক্ষা বিভাগের ভূমিকা কী হবে, তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের বহনে ব্যবহৃত সরকারি উড়োজাহাজকে বলা হয় এয়ারফোর্স ওয়ান। কাতারের উপহারের উড়োজাহাজকে এয়ারফোর্স ওয়ান হিসেবে ব্যবহার করার এবং প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেটি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহারের জন্য রেখে দেওয়ার কথা বলেছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের এই ইচ্ছা নিয়ে তার দলের কয়েকজন সিনেটরও আপত্তি তুলেছেন। সিনেট ইনটেলিজেন্স কমিটির সদস্য সিনেটর টড ইয়াং বলেন, এটা মেনে নিতে আমার অস্বস্তি হচ্ছে। আমার মনে হয়, জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয় এখানে রয়েছে, যেমন শ্রবণযন্ত্র (লিসেনিং ডিভাইস), নিরাপত্তা–সংক্রান্ত মানদণ্ড এবং সম্ভাব্য অন্যান্য বিষয়। এগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।
এই উপহার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি ও নজরদারির দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ঝুঁকির সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা সিনেটর টেড ক্রজের। এছাড়া, মার্কিন সংবিধান অনুযায়ীও ট্রাম্পের এই উপহার গ্রহণের সিদ্ধান্ত আটকে যাওয়ার কথা। দেশটির সংবিধান অনুসারে, মার্কিন সরকারি কর্মকর্তারা কোনো রাজা–বাদশাহ, যুবরাজ বা বিদেশি রাষ্ট্র থেকে উপহার গ্রহণ করতে পারবেন না।
আরটিভি/এসএইচএম-টি