অনেকেই স্টাইল বা আরামের কারণে মোজা ছাড়া জুতা পরেন। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। কিন্তু আপনি কি জানেন, মোজা ছাড়া জুতা পরার অভ্যাস থেকে ত্বকের নানা রকম সংক্রমণ, ফোস্কা, দুর্গন্ধসহ একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি হতে পারে?
নতুন জুতা পরার সময় মোজা না পরলে সহজেই ফোস্কা পড়তে পারে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। মোজা ত্বককে ঘর্ষণ থেকে রক্ষা করে এবং দীর্ঘ সময় হাঁটার সময় আরাম দেয়। এছাড়া, নিয়মিত মোজা পরলে পায়ের দুর্গন্ধও অনেকাংশে কমে। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য মোজা ছাড়া জুতা পরা আরও বিপজ্জনক। পায়ে ক্ষত হলে তা সহজে শুকায় না, ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়া ঘাম ও ত্বকের তেল সরাসরি জুতায় গিয়ে ইনসোল ও আস্তরণ নষ্ট করে দেয়, ফলে জুতা দ্রুত ছিঁড়ে যায় বা নষ্ট হয়ে পড়ে। মোজা ছাড়া জুতা পরলে হাঁটার সময়ও অস্বস্তি হয়।
চিকিৎসকরা বলেন, এই অভ্যাস হতে পারে পায়ের জন্য বিপজ্জনক। মোজা ছাড়া জুতা পরার ফলে হতে পারে ফাঙ্গাল সংক্রমণ, ফোস্কা, দুর্গন্ধসহ একাধিক সমস্যা। চিকিৎসকদের মতে, মোজা না পরলে পা ঘেমে যায় এবং সেই ঘাম জুতার ভিতরে জমে গিয়ে এক ধরনের আর্দ্র পরিবেশ তৈরি করে। যা ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়ার জন্মদানের উপযুক্ত ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়ায়।
মোজা ছাড়া জুতা পরলে যেসব সমস্যা হয়:
ফোস্কা পড়া ও ঘর্ষণ: নতুন জুতা পরে মোজা না পরলে পায়ে ঘর্ষণ হয়, যার ফলে ফোস্কা পড়ে এবং পায়ের ত্বকে ক্ষতি হয়।
পায়ে দুর্গন্ধ: ঘাম শোষণের অভাবে জুতার ভেতরে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়, যা দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। নিয়মিত মোজা পরলে এই সমস্যা অনেকটাই এড়ানো যায়।
জুতা দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়া: পায়ের ঘাম ও তেল সরাসরি জুতার আস্তরণে গিয়ে তা নষ্ট করে দেয়, ফলে জুতা দ্রুত ছিঁড়ে যেতে পারে।
চলাফেরায় অস্বস্তি: মোজা পায়ের আরাম এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করে। মোজা ছাড়া হাঁটলে পায়ে চাপ পড়ে এবং অস্বস্তি হয়।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বাড়তি ঝুঁকি: ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের পায়ে সামান্য ক্ষতও বড় আকার নিতে পারে। সংক্রমণ হলে তা সহজে শুকায় না, তাই মোজা পরা তাদের জন্য বাধ্যতামূলক।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: বিশেষজ্ঞরা বলেন, মোজা পায়ের ত্বককে ঘর্ষণ, ধুলোবালি ও আর্দ্রতা থেকে রক্ষা করে। তাই প্রতিদিন পরিষ্কার মোজা পরা উচিত। বিশেষ করে যারা বাইরে কাজ করেন বা দীর্ঘক্ষণ জুতা পরে থাকেন, তাদের জন্য এটা খুবই জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মোজা ছাড়া জুতা পরলে পায়ের ঘাম শোষণের কোনো উপায় থাকে না। এতে জুতার ভেতরে আর্দ্র পরিবেশ তৈরি হয়, যা ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়ার জন্য উপযুক্ত জায়গা। এর ফলে দেখা দিতে পারে অ্যাথলেটস ফুট নামক ছত্রাক সংক্রমণ, পা চুলকানো, ত্বক ফাটা বা খসখসে হয়ে যাওয়া।
সতর্কতা ও পরামর্শ: প্রতিদিন মোজা পরিবর্তন করুন, নরম সুতির মোজা ব্যবহার করা ভালো, মোজা প্রতিদিন পরিষ্কার করে পরা উচিত, খুব আঁটসাঁট মোজা না পরাই ভালো। পা পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন। সমস্যা হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন, স্মার্ট হতে হলে স্বাস্থ্যবান থাকুন। তাই জুতা পরুন, কিন্তু মোজা পরে তবেই!
উল্লেখ্য, স্টাইলের চেয়ে স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই জুতা পরুন, তবে অবশ্যই মোজা পরে। এতে আপনার পা যেমন থাকবে সুরক্ষিত, তেমনি আপনি থাকবেন আরও সচেতন ও সুস্থ।
আরটিভি/এসকে