গরমকালে শিশুদের সুস্থ রাখা মানেই শুধু ঘরে শীতল পরিবেশ নিশ্চিত করা নয়, বরং তাদের দৈনন্দিন পরিচর্যার প্রতিটি ধাপে হতে হয় সচেতন। তার মধ্যে গোসল অন্যতম।
অনেকে মনে করেন, প্রতিদিন গোসল করালে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়বে। কেউ আবার বলেন, প্রতিদিন গোসল না করালে শরীরে ময়লা জমে আরও বেশি সমস্যা হয়। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, গরমে প্রতিদিন গোসল করানো যায়, শুধু মানতে হবে কিছু সঠিক নিয়ম।
কখন গোসল করাবেন?
প্রতিদিন একই সময়ে গোসল করানোর অভ্যাস শিশুদের জন্য ভালো। সকাল বেলায় গোসল করানো সবচেয়ে উপযোগী, কারণ তখন পরিবেশ তুলনামূলকভাবে ঠান্ডা থাকে। দুপুর বা বিকেলে গোসল করানো হলে শরীরে বেশি তাপ-আর্দ্রতা থাকার কারণে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কেমন পানিতে গোসল করাবেন?
অনেকে বেশি গরমের সময় শিশুকে গোসল করাতে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করেন। এটা বিপদজনক হতে পারে। বরং ঈষদোষ্ণ পানি সব সময়েই শিশুর জন্য ভালো। খুব গরম বা খুব ঠান্ডা—দুটিই এড়িয়ে চলতে হবে। শিশুর ত্বক বড়দের তুলনায় অনেক বেশি স্পর্শকাতর, তাই পানির তাপমাত্রা আগে দেখে নিতে হবে।
কতক্ষণ গোসল করাবেন?
দীর্ঘ সময় ধরে শিশুকে পানিতে রাখা উচিত নয়। পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই গোসল শেষ করুন। অতিরিক্ত সময় পানিকত থাকলে শরীর ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে। গোসলের পর ভালো করে গা মুছে ময়েশ্চারাইজার বা অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন ত্বক আর্দ্র রাখতে।
প্রতিদিন সাবান নয়
প্রতিদিন সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহার না করাই ভালো। এতে শিশুর ত্বক রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। নরম স্পঞ্জ বা তুলার কাপড় দিয়ে শিশুর ত্বক আলতোভাবে পরিষ্কার করলেই যথেষ্ট। সপ্তাহে ২-৩ বার মৃদু, শিশুর উপযোগী সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে।
বাইরে থেকে ফিরেই গোসল নয়
বাইরে থেকে এসেই গরমে শিশুকে গোসল করালে হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনে ঠান্ডা লাগতে পারে। শিশুকে অন্তত ১৫-২০ মিনিট ঘরের তাপমাত্রায় থাকতে দিন, তারপর গোসল করান। যদি গরমে অ্যালার্জি বা ঘামাচির সমস্যা দেখা দেয়, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গোসলের পর কেমন জামাকাপড় পরাবেন?
গোসলের পরে হালকা, ঢিলেঢালা সুতির জামাকাপড় পরানো উচিত। সিনথেটিক বা খুব টাইট জামাকাপড় এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে ত্বকে র্যাশ বা অ্যালার্জির ঝুঁকি বাড়ে।
শিশুর সুস্থতায় নিয়ম মেনে এবং সচেতনভাবে গোসল করালে গরমকালেও শিশুর ত্বক থাকবে কোমল ও স্বাস্থ্যবান।
আরটিভি/জেএম