মুসলমানরা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে থাকেন। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ফরজ। তবে এই ফরজ সালাতের বাইরেও বিশেষ কিছু নফল নামাজ রয়েছে। যেমন- তাহাজ্জুতের সালাত, সালাতুল তাজবি, সালাতুল হাজত ইত্যাদি। আর এই বিশেষ সালাতগুলোর মধ্যে চাশতের নামাজ বা সালাতুত দোহার নামাজ অন্যতম।
চাশতের নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
হযরত বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত নবী করীম (সা.) বলেছেন, মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড়া আছে। অতএব মানুষের কর্তব্য হলো প্রত্যেক জোড়ার জন্য একটি করে সাদকা করা।সাহাবায়ে কেরাম (রাজি.) বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! কার শক্তি আছে এই কাজ করার? তিনি (সা.) বললেন, মসজিদে কোথাও কারও থু থু দেখলে তা ঢেকে দাও, অথবা রাস্তায় কোনো ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও, তবে এমন কিছু না পেলে, চাশতের দুই রাকাত নামাজই এর জন্য যথেষ্ট। (১) আবু দাউদ শরীফ, ১ম খণ্ড, ১৮২ পৃষ্ঠা। (২) মেশকাত শরীফ, ১ম খণ্ড, ১১৬ পৃষ্ঠা।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) আমাকে তিনটি বিষয়ে আমল করার উপদেশ দিয়েছেন, প্রতি মাসের প্রথম তিন দিন রোজা রাখা; চাশতের নামাজ (সালাতুদ দুহা) আদায় করা এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে বিতরের নামাজ আদায় করার। (বুখারি, হাদিস নং-২৭৪; মুসলিম, হাদিস নং-১৫৬০)
চাশতের নামাজ আদায়ের সময়
যখন ইশরাকের নামাজ পড়ার পর এবং তার পরবর্তী সময় শুরু করে দ্বিপ্রহরের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত চাশতের নামাজ আদায় করা যায়। অর্থাৎ সূর্য যখন এক মিটার পরিমাণ উপরে ওঠে যায় এবং সূর্য ওঠার পরবর্তী সময়ে ইশরাকের নামাজ আদায় করার পর কিছুক্ষণ চাশতের নামাজ আদায় করতে হয়।
চাশতের নামাজ কত রাকাত
হযরত মুহাম্মদ (সা.) চাশতের নামাজ চার রাকাত আদায় করতেন। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী ৪, ৮ এবং ১২ রাকাত পর্যন্ত এই নামাজ পড়া যায়। কিন্তু মক্কা বিজয়ের দিন দুপুরের পূর্বে রাসুল (সা.) সংক্ষিপ্তভাবে ৮ রাকাত চাশতের নামাজ পড়েছিলেন।
নামাজটি সংক্ষিপ্তভাবে পড়া হলেও রাসুল (সা.) রুকু ও সেজদায় পূর্ণ ধীরস্থিরতা বজায় রেখেছিলেন এবং প্রতি দুই রাকাত অন্তর অন্তর সালাম ফিরিয়ে ছিলেন। ( বুখারি, হাদিস নং ২০৭)