ঢাকাWednesday, 28 May 2025, 14 Jyoishţho 1432

জুমার দিনের বিশেষ মর্যাদা

আরটিভি নিউজ

শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ , ১২:৪৯ পিএম


loading/img
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামে জুমার দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত। রাসুল (সা.) বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ এ দিনটিকে মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। তাই যে ব্যক্তি জুমার নামাজ আদায় করতে আসবে সে যেন গোসল করে এবং সুগন্ধি থাকলে তা শরীরে লাগায়। মিসওয়াক করাও তোমাদের কর্তব্য। (সুনানে ইবনে মাজা: ৮৩)

বিজ্ঞাপন

জুমার দিনের বিশেষ মর্যাদার অন্যতম কারণ হলো, এ দিন সৃষ্টিকুলের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে ও ঘটবে। এভাবেও বলা যায় যে জুমার দিনটিকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে আল্লাহ জুমার দিনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন এবং আরও কিছু কাজের জন্য এ দিনটিকে নির্ধারণ করে রেখেছেন। 

একটি হাদিসে জুমার দিন ঘটিত ও ঘটিতব্য পাঁচটি বিশেষ ঘটনার কথা উল্লেখ করে নবিজি (সা.) বলেন, জুমার দিন দিনসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। জুমার দিন আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে মহান দিন। এ দিন আল্লাহ তাআলার কাছে ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর তথা ইসলামের দুই ঈদের দিন থেকেও মহান। জুমার দিনের বিশেষ পাঁচটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ দিন আল্লাহ তাআলা আদমকে (আ.) সৃষ্টি করেছেন। এ দিনই তাকে জান্নাত থেকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। এ দিনই আল্লাহ তাকে মৃত্যু দিয়েছেন। জুমার দিন একটা সময় আছে, যে সময় বান্দা আল্লাহর কাছে যা চাইবে আল্লাহ তাআলা তাকে তা-ই দান করবেন, যদি না সে হারাম কোনো কিছু প্রার্থনা করে। কেয়ামতও সংঘটিত হবে জুমার দিন। জুমার দিন নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতারা কেয়ামতের আশঙ্কায় ভীত-সন্ত্রস্ত থাকেন। উদ্বিগ্ন থাকে পৃথিবী, আকাশ, বাতাস, পাহাড়, পর্বত, সাগর সবকিছু। (মুসনাদে আহমাদ: ১৫৫৪৮, সুনানে ইবনে মাজা: ১০৮৪১)

বিজ্ঞাপন

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, দিনসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন। এ দিন আল্লাহ তাআলা আদমকে (আ.) সৃষ্টি করেছেন। তাকে দুনিয়াতে নামানো হয়েছে এ দিন। তার মৃত্যুও হয়েছে এ দিন। তার তাওবা কবুল হয়েছে এ দিন। এ দিনই কেয়ামত সংঘটিত হবে। মানুষ ও জিন ছাড়া এমন কোনো প্রাণী নেই, যা কেয়ামত কায়েম হওয়ার ভয়ে জুমার দিন ভোর থেকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত চিৎকার করতে থাকে না। জুমার দিন একটা সময় আছে, কোনো মুসলিম যদি সে সময় নামায আদায় করে আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাকে তা দান করবেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১০৪৬, সুনানে নাসাঈ: ১৪৩০)

অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ এ দিনটিকে মুসলমানদের বিশেষ দিন হিসেবে নির্ধারণ করে আল্লাহ মুসলমানদের ওপর অনুগ্রহ করেছেন। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমরা সর্বশেষ উম্মাত কিন্তু কিয়ামতের দিন আমরা হব অগ্রগামী। যদিও সব উম্মতকে কিতাব দেয়া হয়েছে আমাদের আগে, আর আমাদের কিতাব দেয়া হয়েছে সকল উম্মাতের শেষে। যে দিনটি আল্লাহ আমাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন, সে দিন সম্পর্কে তিনি আমাদের হিদায়াতও দান করেছেন। সে দিনের ব্যাপারে অন্যান্যরা আমাদের পিছনে রয়েছে, (যেমন) ইহুদিরা (আমাদের) পরের দিন (শনিবার) এবং খৃষ্টানরা তাদেরও পরেন দিন। (রবিবার) (সহিহ মুসলিম: ১৮৬৩)

আরেকটি হাদিসে এসেছে, পূর্ববর্তী আহলে কিতাবরা মতানৈক্যের কারণে এ শ্রেষ্ঠ দিন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাদের বিশেষ দিন হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে শনিবার ও রোববার। 

বিজ্ঞাপন
Advertisement

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমাদের আগমন সবার শেষে। কিন্তু আমরা কিয়ামতের দিবসে থাকব সবার প্রথমে। আমরা জান্নাতে প্রবেশকারীদের মধ্যে অগ্রগামী থাকব। তবে তাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে আমাদের পূর্বে এবং আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে তাদের পর। তারা মতবিরোধ করেছে, আর আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সেই সত্যের হিদায়াত দিয়েছেন যা নিয়ে তারা মতভেদ করেছে। এটাই সেই দিন— যে সম্পর্কে তারা মতবিরোধ করেছে এবং আল্লাহ আমাদেরকে এ ব্যাপারে হেদায়াত করেছেন। আমাদের বিশেষ দিন জুমার দিন। ইহুদিদের পরের দিন, খৃষ্টানদের তার পরের দিন। (সহিহ মুসলিম: ১৮৫৩)

আরটিভি/একে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |