ফেডারেশন কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আবাহনীর কাছে হতাশাজনক হারে কিছুটা ব্যাক-ফুটে চলে যায় ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। যদিও রোববার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে টিকে রইলো শন লেনের শিষ্যরা।
অন্যদিকে নতুন মৌসুম শুরুর আগেই আর্থিক দুরবস্থার কারনে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল তবে সব সংশয় দূর করে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করে ফেডারেশন কাপে। তবে মাঠের পারফর্মেন্সে নিজেদের প্রমাণ করতে পারলো না কাতো ইউসেকোরা। মোহামেডানের কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার পথ কঠিন করে ফেললো তারা।
পুরা ম্যাচেই মোহামেডান নিজেদের শক্তিমত্তার পরিচয় দিতে থাকে। যার শুরুটা হয় ৪ মিনিটেই গোল মিসের মধ্য দিয়ে। অধিনায়ক উরু নাগাতার পাস থেকে ডি বক্সের মধ্যে সহজ সুযোগ পেলেও গোলকিপারকে ফাঁকি দিতে পারেনি স্ট্রাইকার আমির হাকিম বাপ্পী।
ম্যাচের ১৯ মিনিটের মাথায় ডান পাশ থেকে মোহামেডান অধিনায়ক উরু নাগাতার পাস থেকে ডি বক্সে বল পায় সাহেদ মিয়া কিন্তু তার দুর্বল শট আবারো গোলকিপার প্রিতমের বিশ্বস্ত হাতে জায়গা পায়।
২৪ মিনিটে আতিকুজ্জামানের লম্বা থ্রু ডি -বক্সে পৌঁছালে আমিনুর রহমান সজীবের আলতো ছোঁয়া গোলকিপার সহজেই লুফে নেয়।
২৭ মিনিটে প্রথম বারের মতো আক্রমণে যায় মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদ। বাম পাশ থেকে উজবেকিস্তানের আকবার আলি খোলদারোভের বাড়ানো বল ক্যামেরুনের বেকামেঙ্গার শট গোল কিপার ফিরিয়ে দেয়।
এরপর ফিরতি বল তারিকুলের দূর পাল্লার শট গোলের নিশানা খুঁজে পায়নি, যার ফলে গোল বঞ্চিত হতে হয় মুক্তিযোদ্ধাকে। ৩৩ মিনিটের মাথায় আবারো গোলের সহজ সুযোগ মিস করে মোহামেডান।
এবার গোল মিসের মহড়ায় আবারো যোগ দেন আমিনুর রহমান সজীব। ডি-বক্সের মধ্য থেকে নেওয়া ডান পায়ের শট আবারো রক্ষা করেন মুক্তিযোদ্ধার গোলকিপার প্রীতম।
৪২ মিনিটে ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে মোহামেডানের নুরাতকে ফাউল করলে ফ্রি কিক পায় সাদা-কালোরা। ফ্রি কিক থেকে বাম পায়ের দারুণ শটে গোলকিপারকে ফাঁকি দিয়ে সাদা-কালোদের উদযাপনের সুযোগ করে দেন হাবিবুর রহমান সোহাগ। এর ফলে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় মোহামেডান।
৬৩ মিনিটে মিনহাজুল আবেদীনের কর্নার থেকে কাতো ইউসেকোর বাড়ানো বল ডি-বক্সের মধ্য থেকে আকবর আলী খোলদারোভের শট গোলবারের উপর দিয়ে গেলে আবারো হতাশ হতে হয় মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদকে।
তবে ম্যাচের ৬৮ মিনিটে আর হতাশ করেনি মুক্তিযোদ্ধার ফরোয়ার্ডরা। ডান পাশ থেকে সুজন মিয়ার বাঁকানো ক্রস থেকে ডি বক্সের মধ্যে দারুণ এক হেডে গোলকিপারকে বোকা বানিয়ে ম্যাচে সমতা ফেরান মুক্তিযোদ্ধার আকবার আলি খোলদারোভ।
মুক্তিযোদ্ধার স্বস্তির নিঃশ্বাসে আবারো চেপে ধরে মোহামেডান। ৭৫ থেকে ৮৩, এই ৮ মিনিটে তিন গোল করে অন্যরকম এক মোহামেডানকে দেখা যায়।
ম্যাচের ৭৫ মিনিটে কর্নার থেকে আসা বল উরু নাগাতার মাথা ছুঁয়ে আতিকুজ্জামানের দারুণ হেডে গোলকিপারকে ফাঁকি দিয়ে গোলের দেখা পায় সাদা-কালোরা। যার ফলে ২-১ এ গোলে এগিয়ে যায় শন লেনের শিষ্যরা।
এরপর ৮০ ও ৮৩ মিনিটে দুই গোল করে ৪-১ গোলের লিড এনে দেন নাইজেরিয়ান মোহাম্মদ আবিওলা নুরাত। ম্যাচে দুই গোল করে ম্যাচ সেরা পুরস্কার পেয়েছেন আবিওলা নুরাত।
মোহামেডানের হয়ে আবিওলা নুরাত দুইটি, হাবিবুর রহমান সোহাগ ও আতিকুজ্জামান একটি করে গোল করে। মুক্তিযোদ্ধার হয়ে একটি গোল করেন আকবর আলি কোলদারোভ।
এদিকে গ্রুপ ‘ডি’ এর অন্য দল ঢাকা আবাহনী তাদের প্রথম ম্যাচে মোহামেডান কে হারিয়ে ফুরফুরে মেজাজে আছে। তাদের শেষ ম্যাচ আগামী ৩০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদের বিপক্ষে। এই ম্যাচ জিতলেই কোয়ার্টার ফাইনালে পা দিবে ঢাকা আবাহনী।
এমআর/