সুড়ঙ্গে বাড়ছে ভিড়
কথায় আছে, ‘কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে’। বাংলার এই আঞ্চলিক প্রবাদটা মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে থাকার নামই তো পরিশ্রম। সেই পরিশ্রমের ভাগ্য খুঁজে পাওয়া গেল আফরান নিশোর মধ্যে। সিনেমার নাম যেখানে ‘সুড়ঙ্গ’ সেখানে বলার অপেক্ষা থাকে না দর্শকের চাহিদা কেমন থাকবে। ছোটবেলা থেকে এই নামের সঙ্গে জড়িয়ে অনেক গল্পই তৈরি হয়েছে। যা ঘোরে ঘিরে রাখার মতো সময়কে বয়ে নিয়ে গেছে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে। এখানেই সুড়ঙ্গের অবদান সব থেকে বেশি। কি জানি কি হয় ভাব খানা এমনই!
ছোটবেলার সেই গল্পের মতো না হলেও নির্মাতা রায়হান রাফীর নির্মাণে যে ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে তা আবহমান বাংলার কথাই তো বলছে। ছোট পর্দায় নিজের অভিনয় গুণে পেয়েছেন তারকাখ্যাতি। তবে বড় পর্দায় নিজের অস্তিত্বের জানান দিতে কোনও কমতিই রাখেননি। প্রথমবার বড় পর্দায় হাজির হলেও মনে হয়েছে একাধিক সিনেমায় এর আগেও অভিনয় করেছেন তিনি। চরিত্রের সঙ্গে মিশে গিয়ে একেবারে দর্শকের চোখের মণির মধ্য দিয়ে ছুঁয়ে দিয়েছেন হৃদয়ে।
এবারের ঈদুল আজহার মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলো দিয়ে আবারও দর্শক হলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। সিনেমার জয়গান চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যদিও এখনও হলরিপোর্ট হাতে আসেনি। তবে টিকিট নিয়ে চলছে হাহাকার। এর থেকেই বোঝা যায় বাংলা সিনেমার দর্শক আছে। সুড়ঙ্গের দিকে এগোচ্ছে দর্শক, বাড়ছে ভিড়।
সিনেমাটির প্রতিটি চরিত্রেরই প্রাণ কেন্দ্র ছিল গল্প। গল্প বলার এমন ভঙ্গি যদি নিয়মিত থাকে তাহলে যে বাংলার সিনেমা হলে আবারও প্রাণ ফিরে পাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সুড়ঙ্গে আফরান নিশোর বিপরীতে অভিনয় করেছেন তমা মির্জা। ওটিটি সিনেমা কিংবা ওয়েব সিরিজ দিয়ে নিজেকে অনেক আগেই মেলে ধরেছেন তিনি।
এবার তারই রেষ দেখা গেল সিনেমাটিতে। প্রেম, রহস্য, বাস্তবতা আর জীবনের সত্য ঘটনাই ফুটে উঠেছে সুড়ঙ্গে। যদিও নতুন কিছু নয় এর আগেও একাধিক সিনেমার গল্পে এমনটার দেখা মিলেছে তবে, মাঝ পথে তা থেমে গিয়েছিল। বেশ কয়েক বছর ধরেই নতুন করে বাংলা সিনেমার পাখা মেলেছে। অনবদ্য এই উড়াউড়ি চলুক এমনটাই চাচ্ছেন সিনেমা প্রেমীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার অধিকাংশ শো হাউসফুল যাচ্ছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে ২৮টি সিনেমা হলে। তবে সিনেমাটি মুক্তির দ্বিতীয় দিনে দর্শকদের ভিড় ও চাপের জন্য ১৫টি শো বাড়ানো হয়েছে মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে। ঈদের দিন মাল্টিপ্লেক্সগুলোর সাতটি শাখায় ৯টি শো ছিল। দ্বিতীয় দিনে শো ছিল মূলত ১৮টি। কিন্তু দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়ের জন্য ১৫টি শো বাড়ানো হয়েছে।
সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, মনির আহমেদ শাকিল, অশোক বেপারি প্রমুখ। আলফা আই ও চরকি প্রযোজিত সিনেমাটি ভারতেও মুক্তি পাবে খুব শিগগিরই।
বাংলাদেশের সিনেমা নিয়ে এমন উত্তেজনা শুরু হওয়ায় টনক নড়েছে বিদেশে। আর তাইতো বাংলাদেশি সিনেমা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করছেন ভিনদেশি প্রযোজকরা। আসন্ন দিনগুলোতে সিনেমার দর্শক এভাবেই বাড়তে থাকার আশা জেগেছে প্রতিটি সিনেমা প্রেমীর অন্তরে। যেন বাঙালিরা মাথা উঁচু করে আঙুল তুলে বলতে পারে, ঐ দেখেন আমার দেশের সিনেমা, বাংলা সিনেমা চলছে বিদেশি হলে।
মন্তব্য করুন