নেতানিয়াহু বাহিনীর হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ নামে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের অন্তত দেড় শতাধিক স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমাদি বাহিদি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, দেড় শতাধিক স্থানে এই হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে তাসনিম নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইরান বিশেষ করে নেভাতিম ও ওভদা ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে। কারণ এই ঘাঁটি দুটোই ছিল ইরানে হামলা চালাতে ব্যবহৃত প্রধান কেন্দ্র এবং কমান্ড ও ওয়ারফেয়ার ঘাঁটি। এ ছাড়া রাজধানী তেল আবিবের কাছে টেল নোফ ঘাঁটি, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও শিল্প স্থাপনাতেও হামলা চালানো হয়।
সংবাদ সংস্থাটির খবরে আরও বলা হয়, অপারেশনটি কয়েকটি পর্বে শেষ হয় এবং মোট কয়েকশ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। যা অনেক স্থানে প্রবল বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড ঘটায়।
হামলার কথা স্বীকার করে ইরানি কমান্ডাররা জানিয়েছেন, এটি ছিল ইরানি ভূখণ্ড এবং পারমাণবিক বিশেষজ্ঞ ও সেনা কমান্ডারদের ওপর অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক হামলার জবাব।
তারা আরও জানান, দেড় শতাধিক স্থানে আঘাত হেনে ইরান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, যে কোনো হামলা বা অপরাধ বিনাদণ্ডে পার পাবে না।
বিষয়টি নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে ইরানি বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইসরায়েল যে অপরাধ করেছে, তার জন্য ভয়াবহ ও যন্ত্রণাদায়ক পরিণতি অপেক্ষা করছে।
এর আগে, গত ১২ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।
হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও ৬ জন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ অন্তত ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নেতানিয়াহু বাহিনীর হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে শুক্রবার রাতে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। অন্তত কয়েকশ মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এতে ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং অন্তত চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের মিসাইল হামলা শুরু হতেই নিজের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান ও উচ্চপদস্থ মন্ত্রীদের সঙ্গে নিয়ে মাটির নিচে বাংকারে আশ্রয় নিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
আরটিভি/আইএম/এস