গ্রস ডমেস্টিক প্রোডাক্ট-এর সমন্বিত রুপ হলো জিডিপি। এটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (সাধারণত এক বছর) একটি দেশের মধ্যে উৎপাদিত এবং বাজারে বিক্রি হওয়া সব পণ্য ও পরিষেবার মোট আর্থিক মূল্যের প্রতিনিধিত্ব করে। অর্থনৈতিক কার্যকলাপের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পরিমাপ হলো জিডিপি। জিডিপি আমাদেরকে দেশের আর্থিক বৈষম্যের পরিমাপ জানাতে পারে না; এমনকি পরিবেশের ঝুঁকি কেমন অথবা জনগণ সুখে আছে কি নেই কোনোকিছুই এর মাধ্যমে জানা যায় না। কারণটা হলো জিডিপি’র মাধ্যমে শুধুমাত্র দেশের অর্থনীতির আকার জানা যায়। এটি অর্থনীতির আকারের একটা হিসাব মাত্র।
এটাও বলা দরকার, জিডিপি কোনো দেশের সামগ্রিক বিষয় জানার জন্য কোনো ইনডেক্স বা সূচক নয়। জিডিপি পরিবেশের ডেটাও না, এটা সাইকোলজিক্যাল কোনো ডেটা না যে, মানুষের সুখের পরিমাপ করা যাবে। আমরা অনেকেই দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে জিডিপি’র তুলনা করে থাকি। এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন এর মতামত হলো : জিডিপি (Gross Domestic Product)-বাইবেল, কোরআন, রামায়ণ বা মহাভারতের মতো অতটা গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নয়। তিনি আরও বলেন, অর্থনীতির আকার বা সূচক, যেভাবেই বলা হোক না কেন, ভবিষ্যতে হয়তো জিডিপির কোনো প্রাসঙ্গিকতাই থাকবে না।
অমর্ত্য সেনের মতে, জিডিপি নিয়ে নাক সিঁটকানো মানুষ দুই প্রকার। এক প্রকার হলো চিপায় পড়ে, অন্য প্রকার হলো না বুঝে। তিনি জানান, ১৯৩৪ সালের আগে জিডিপি-এর মতো কিছু ছিলো না। তবে গত শতাব্দীর প্রায় পুরোটা সময় একটি দেশের অর্থনৈতিক মূল্যায়নে জিডিপি গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। অর্থনীতির সূচক নিয়ে ব্রিটিশ আমলে সেভাবে গুরুত্ব দিয়েও বিবেচনা করা হয়নি। একটা দেশের আয়তন বুঝতে আমরা বর্গমাইল বা বর্গ কিলোমিটার হিসাব করলেই পেয়ে যাই। কিন্তু একটা দেশের অর্থনীতির আকার বা সাইজ কীভাবে বুঝব? একটি দেশের ভেতরে যত অর্থনৈতিক কার্যক্রম চলছে, এটার সমষ্টিকে আমরা জিডিপি বলতে পারি। আপনি এক কাপ কফি বা চা খেলেন। এটাও জিডিপিতে সংযুক্ত হয়। সেলুনে চুল কাটতে গেলেন সেটার ভ্যালুও যুক্ত হয়। ডাক্তার দেখালেন সেটাও সংযুক্ত হয়। আর্থিক মূল্যের সব লেনদেন জিডিপিতে সংযুক্ত হয়।
জিডিপি কীভাবে হিসাব করা হয়?
জিডিপি পরিমাপের সূত্র : জিডিপি = ব্যক্তিগত খরচ + মোট ব্যক্তিগত বিনিয়োগ + সরকারি বিনিয়োগ + সরকারি ব্যয় + (রপ্তানি-আমদানি)। এই হিসাবটা মূলত তিনটি পদ্ধতিতে করা হয়। ১. এক্সপেন্ডিচার মেথড (Expenditure Method) বা খরচ হিসাব করে। ২. আউটপুট বা প্রোডাকশন মেথড (Output or Production Method) ৩. ইনকাম (Income Method) বা আয় মেথড। সারা বিশ্বে এক্সপেন্ডিচার বা খরচের হিসাব করে জিডিপি বের করার পদ্ধতি বেশি ব্যাবহার করা হয়। এতে একটা সূত্র আছে : GDP = C + G + I + NX ‘সি’ মানে হলো “কনসাম্পশন”। মানে একটি দেশে যত মানুষ আছে সবাই ভোগের জন্য যে খরচ করে সেটা। আপনি চাল-ডাল কেনা, ডাক্তার দেখানো, ছেলেমেয়ের শিক্ষার পেছনে ব্যয় থেকে শুরু করে, সারা বছর যত ধরনের খরচ করেছেন সেটা। ‘জি’ মানে হলো “Government Expenditures”। ব্যক্তির হিসাব বাদ দিয়ে সরকার যে খরচ করে যেমন অবকাঠামো নির্মাণ, বেতন দেওয়া, পেনশন দেওয়া, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনাসহ যত খরচ করে সব। ‘আই’ মানে হলো “Investment”। সারাদেশে ব্যক্তিগত ভোগ বাদে বিভিন্ন খাতে যত সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ হয় তার সমষ্টি। আর সর্বশেষ ‘এনএক্স’ হলো “নিট রপ্তানি”। যদি রপ্তানি, আমদানির থেকে বেশি হয়; তবে জিডিপি’তে বেশি অংশ যোগ হয়; এর বিপরীত হলে বিয়োগ হয়। অর্থাৎ, জিডিপি’র মাধ্যমে একটি দেশে ঘটে যাওয়া আর্থিক লেনদেনের সাইজ জানা যায়। আর এর মাধ্যমেই বোঝা যায় কোন দেশের অর্থনীতি কতটা বড়। অনেকে মনে করেন, জিডিপি দিয়ে সবকিছু করে ফেলবেন। মনে রাখা দরকার, জিডিপি-এর হিসাবের ওপর অতটা প্রত্যাশা না করাই ভালো।
জিডিপি ও জিডিপি প্রবৃদ্ধি কী?
জিডিপি : একটি দেশের অভ্যন্তরে এক বছরে চূড়ান্তভাবে উৎপাদিত দ্রব্য ও সেবার বাজারের সামষ্টিক মূল্যই হচ্ছে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি বা গ্রস ডমেস্টিক প্রডাক্ট)। জিডিপি প্রবৃদ্ধি : জিডিপি প্রবৃদ্ধি বলতে নির্দিষ্ট সময়ে একটি দেশের অর্থনীতিতে পণ্য ও সেবার উৎপাদন বৃদ্ধিকে বোঝায়। সাধারণত কোনো দেশের মোট দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধির শতকরা হারকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কয়টি খাতকে জিডিপি পরিমাপে ধরা হয়? বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আসে প্রধানত পাঁচটি খাত থেকে। সেগুলো হলো- উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা, পরিবহন, নির্মাণ এবং কৃষি।
জিপিডিতে সংযুক্ত নতুন খাতসমূহ হলো-মোবাইল ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং, গরু ও হাঁস-মুরগি, নার্সারি, লটকন, ড্রাগন, স্ট্রবেরি, ক্যাপসিকাম, মাশরুম, আবাসন, ক্যাবল টেলিভিশন, ইন্টারনেট, হেলিকপ্টার।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি দিয়ে কি উন্নয়নের পরিমাপ করা যায়?
জিডিপির মাধ্যমে একটি দেশের অর্থনীতির আকার এবং শক্তি প্রকাশ করা হয়। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী এটাই অর্থনৈতিক সামর্থ্য বা শক্তি নির্ধারণের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য এবং বহুল প্রচলিত একটি পদ্ধতি। কিন্তু বর্তমানে যে পদ্ধতিতে জিডিপি নির্ধারণ করা হচ্ছে, তা অসঙ্গতিপূর্ণ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে অযৌক্তিকও বটে। কারণ এভাবে হিসাবকৃত জিডিপির মাধ্যমে একটি দেশের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায় না। তাছাড়া বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের সরকারই তার অর্থনৈতিক সাফল্য প্রদর্শনের জন্য জিডিপির আকারকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়ে থাকে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নির্ণায়ক সূচক হিসেবে জিডিপি (গ্রস ডমেস্টিক প্রোডাক্ট) বহুল প্রচলিত এবং সম্ভবত একমাত্র উপায়। কিন্তু জিডিপির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার সত্যিকার প্রতিফলন ঘটে না। এজন্য সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সাধারণ মানুষের জীবনমান সত্যিকারভাবে প্রতিফলিত করার জন্য জিডিপি নির্ধারণের বর্তমান পদ্ধতির সংস্কার-আধুনিকায়ন, প্রয়োজনে পরিবর্তন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি দিয়ে একটি দেশের উন্নয়ন পরিমাপ করার অর্থনৈতিক যুক্তি ভীষণভাবে দুর্বল হয়েছে বহু আগেই। অথচ সাম্প্রতিককালে এই উপমহাদেশে এখনো জিপিডি নিয়ে রাজনীতি করতে দেখা যায়! সেই প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার আগে জিডিপি দিয়ে উন্নয়ন পরিমাপের ব্যাপারটা কতটা যৌক্তিক, সেটি একটু দেখে নেওয়া যাক।
জিডিপির প্রবৃদ্ধি এবং সেটির ভিত্তিতে হিসাব করা মাথাপিছু আয়, উন্নয়নের নির্দেশক হিসেবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আসছে গত কয়েক দশক থেকেই। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক কাজ হয়েছে ২০০৮ সালে। সেই সময়ের বিশ্বমন্দার মধ্যেই ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি দু’জন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিৎজ এবং অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিখ্যাত ফরাসি অর্থনীতিবিদ জাঁ পল ফিটুসিকে দায়িত্ব দেন, জিডিপিভিত্তিক অর্থনৈতিক পরিমাপের সমস্যা এবং এর বিকল্প নিয়ে প্রস্তাবনা দিতে। ২০১০ সালে বের হয় এ তিন লেখকের গবেষণার ফল ‘মিসমেজারিং আওয়ার লাইভস: হোয়াই জিডিপি ডাজনট অ্যাডআপ’ শিরোনামের বইয়ে। বইটির শিরোনামই আমাদের বলে দেয় জিডিপির প্রবৃদ্ধি এবং মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে করা অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিমাপ করার সনাতন পদ্ধতিতে রাষ্ট্রের বেশিরভাগ মানুষের সত্যিকারে ভালো থাকা পরিমাপ নয়। তাই বিকল্প পরিমাপ পদ্ধতি জরুরি। এর ফলে জিডিপির প্রবৃদ্ধি এবং মাথাপিছু আয়ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি দেখানোর প্রবণতা বিশ্বে এখন প্রায় বিলুপ্তই হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের মতো দেশগুলোতে এখনো ‘সেকেলে’ চর্চাটাই চলছে। ক্ষমতাসীনদের কাছে এটিই একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয়! উদ্বেগের বিষয়, নানা ধরনের পদ্ধতিগত দুর্বলতার কারণে একটি দেশের অর্থনীতির সব অর্জন জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারছে না। বাংলাদেশের জিডিপির আকার এবং প্রবৃদ্ধির যে হার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদর্শন করা হচ্ছে, প্রকৃত জিডিপির আকার এবং প্রবৃদ্ধির হার তার চেয়ে অনেক বেশি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জিডিপিতে অনানুষ্ঠানিক খাতের কর্মকাণ্ডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে যেসব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হচ্ছে এবং নারীরা পরিবারের জন্য যে কাজ করছে, তার আর্থিক মূল্য জিডিপিতে যুক্ত হচ্ছে না! একটি সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে যে অনানুষ্ঠানিক আর্থিক কর্মকাণ্ড সম্পাদিত হয় এবং নারীরা পরিবারের জন্য যে অবদান রাখে, তার মূল্যায়ন করা হলে জিডিপির আকার অন্তত ৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেতো। এ পরিসংখ্যানে হয়তো অতিরঞ্জন থাকতে পারে। তবে একথা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না যে, নারীদের গৃহকর্ম এবং অন্যান্য অনানুষ্ঠানিক কাজের কোনো মূল্যায়ন বর্তমান পদ্ধতিতে নিরূপিত জিডিপিতে প্রতিফলিত হচ্ছে না! অথচ নারীদের সব কাজই আর্থিকভাবে মূল্যায়িত হতে পারে। নারীরা যে শিশুদের বুকের দুধ পান করান, তারও আর্থিক মূল্যায়ন হতে পারে। যেহেতু নারীদের গৃহকর্ম এবং অন্যান্য পারিবারিক ও সামাজিক কাজের কোনো মূল্যায়ন জিডিপিতে হয় না, তাই তারা সামাজিকভাবে বড়ই অসহায় অবস্থায় রয়েছেন! আমরা অনেকেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে উল্লসিত হই; কিন্তু একবারও কী ভেবে দেখেছি যে, এ প্রবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ কতটুকু?
জিডিপি ও জিএনপি এর মধ্যে পার্থক্য
জিডিপি : এটি একটি দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিমাণকে বোঝায়। এই কর্মকাণ্ড সেই দেশের নাগরিক অথবা বিদেশি যে কেউ সম্পাদন করতে পারে। যতক্ষণ এই কর্মকাণ্ড দেশের অভ্যন্তরে হচ্ছে ততক্ষণ সেটা জিডিপিতে যোগ হবে। জাপানিজ মিৎসুবিশি বা মালয়েশিয়ার নামকরা প্রোটন কোম্পানি এসে যদি চট্টগ্রামে জমি লিজ নিয়ে কারখানা বসায়, তবে সেই খরচও বাংলাদেশের জিডিপিতে যোগ হবে। তাদের কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের মূল্যও বাংলাদেশের জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হবে। তাদের উপার্জিত অর্থ যদি বাংলাদেশেই তারা খরচ বা পুনরায় বিনিয়োগ করে, সেটাও বাংলাদেশের জিডিপিতে যোগ হবে। অন্যদিকে একজন প্রবাসী বাংলাদেশি যদি দেশে টাকা পাঠান তবে সেটা জিডিপিতে যোগ হবে না। কারণ সেটা দেশের বাইরে অর্জিত হয়েছে। তবে তার পাঠানো টাকা দেশে তার স্বজনেরা যখন খরচ বা বিনিয়োগ করেন- সেটা জিডিপিতে যুক্ত হয়।
জিএনপি : দেশের নাগরিকদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে জিএনপি’তে (গ্রস ন্যাশনাল প্রোডাক্ট) হিসাব করা হয়। পৃথিবীর কোন দেশে বসে তিনি এটা করছেন সেটা বিবেচ্য নয়। মিৎসুবিশি বা প্রোটন কোম্পানির বাংলাদেশে অর্জিত অর্থ, বাংলাদেশের জিএনপি থেকে বাদ যাবে। এটা সংশ্লিষ্ট দেশের জিএনপিতে যোগ হবে। একইভাবে একজন প্রবাসী বাংলাদেশির পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশের জিএনপিকে সমৃদ্ধ করবে। এভাবে ওয়ালটন, প্রাণ বা ইনসেপটার বিদেশে উৎপাদিত পণ্যের মূল্যও বাংলাদেশের জিএনপিকে বড় করবে। জিডিপি এবং জিএনপির সম্পর্ক নিচের সূত্র দিয়ে বুঝতে কিছুটা সুবিধা হবে- জিডিপি = দেশের অভ্যন্তরে ভোগ করা পণ্যের মূল্য + সর্বমোট বিনিয়োগ + সরকারের যাবতীয় খরচ + (রপ্তানি - আমদানি)। জিএনপি = জিডিপি + (বিদেশে নিজ দেশের নাগরিক/সংস্থা কর্তৃক সম্পাদিত অর্থনৈতিক কর্মের মূল্য - নিজ দেশে বিদেশি নাগরিক/সংস্থা কর্তৃক সম্পাদিত অর্থনৈতিক কর্মের মূল্য)।
মাথাপিছু জিডিপি এবং জিডিপি-পিপিপি কী?
অর্থনীতিবিদরা প্রায়ই ‘মাথাপিছু জিডিপি’ শব্দটি উল্লেখ করে থাকেন। এই সূচকটি রাষ্ট্র বা একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলি শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। একটি সাধারণ সূত্র ব্যবহার করে এই সূচকটি গণনা করা খুবই সহজ : মাথাপিছু জিডিপি = মোট জিডিপি / দেশে বসবাসকারী নাগরিকের সংখ্যা। এই প্যারামিটারটি বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা তুলনা করতেও ব্যবহৃত হয়। আসলে, এই সূচকটিকে নিখুঁত এবং নির্ভুল হিসেবে বিবেচনা করা যায় না। কারণ যেহেতু গণনায় ব্যবহৃত ডেটা পর্যায়ক্রমে পরিবর্তিত হয় এবং সবসময় কনস্ট্যান্ট বা স্থির বা বাস্তব অবস্থায় থাকে না। জিডিপি-পিপিপি হলো আরেকটি সূচক শব্দ। এই ধারণার অধীনে, ক্রয়-ক্ষমতার সমতা এনক্রিপ্ট করা হয়। এই সূচকটি বিভিন্ন দেশে এবং বিভিন্ন আর্থিক ইউনিটে ডেটা তুলনা করতেও ব্যবহৃত হয়। অন্যকথায়, পিপিপি-তে জিডিপি হলো এক রাষ্ট্রের একজন নাগরিক তার আয়ের জন্য অন্য রাষ্ট্র থেকে পণ্য কেনার ক্ষমতা।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক তুলনা পরিচালনা করার সময়, জাতিসংঘ প্রায় ৭০০টি মৌলিক পণ্য, ২৫০টি বিনিয়োগের বস্তু, ১৫টি নির্মাণাধীন বস্তুর তুলনা করে থাকে। আশা করা যায়, জিডিপি এবং প্রাসঙ্গিক বেশকিছু বিষয়ের উপর সম্যক ধারণা দেওয়া গেছে।