ভেজাল খাদ্যের প্রভাব, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যভ্যাস ও শরীরে হরমোনের নিঃসরণের ওঠানামার জন্যই মূলত হার্ট অ্যাটাক হয়। জীবনযাত্রা সম্পর্কে সচেতন না হলে একটা সময়ের পর হতে পারে হৃদরোগ। শরীরের প্রতি যত্ন না নিলে আশঙ্কা থেকে যায় হার্ট অ্যাটাকের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) জানিয়েছেন বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর প্রধান কারণ মূলত হৃদরোগ।
এদিকে ‘ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি’র গবেষকদের মতামত অনুযায়ী, মানুষের শরীর দিনের বেলায় বেশি সক্রিয় থাকে। সারাদিনের কাজের কারণে শরীরের সব শক্তি ব্যয় হয়ে যায়, আর তাই রাত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। পরিশ্রমের জন্য তখন শরীর একদম প্রস্তুত থাকে না। ফলে ঘুম পায়। শরীর ভেতর থেকে যখন বিশ্রাম নেয়, ওই সময় রক্তচাপ এবং হৃদ্স্পন্দনের হার সবচেয়ে বেশি থাকে। হৃদযন্ত্রের কার্যকলাপও জটিল হয়ে পড়ে তখন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ‘হার্ট অ্যাটাক যেকোনো বয়সেই হতে পারে। সকালের দিকে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে।’ ভোরের দিকে শরীরে সাইটোকিনিন হরমোনের নিঃসরণ সবচেয়ে বেশি হয় যার ফলে হৃদযন্ত্র দুর্বল থাকলে ‘অ্যারিথমিয়া’ নামক অবস্থার সৃষ্টি হয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
হৃদরোগ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভোর ৪টা থেকে সকাল ১০টার মধ্যে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে। ওই সময়টাতে অ্যাড্রিনালিন গ্রন্থি থেকে অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ বেড়ে যাওয়ার ফলে করোনারি ধমনীতে চাপ সৃষ্টি হয়। সকালে রক্তের ‘পিএআই-১’ কোষগুলো অধিক সক্রিয় থাকে। এই সক্রিয়তার কারণে রক্তজমাট বেঁধে যায়। হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম প্রধান কারণ এটি।
চিকিৎসকরা এ বিষয়ে আরও জানান, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি এড়াতে দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। সেই সঙ্গে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবারও খেতে হবে।
এ ছাড়াও ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, নিয়মিত ধূমপান এবং মদ্যপানের অভ্যাসের কারণে কম বয়সেই হার্ট অ্যাটাক হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।