দশ গুণীজন পেলেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার
সাহিত্যের নানা ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন দশ গুণীজন।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমি চত্বরে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- কবিতায় কবি মাকিদ হায়দার, কথাসাহিত্যে ওয়াসি আহমেদ, প্রবন্ধ ও গবেষণায় স্বরোচিষ সরকার, অনুবাদে খায়রুল আলম সবুজ, নাটকে রতন সিদ্দিকী, শিশুসাহিত্যে রহিম শাহ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণায় রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম, বিজ্ঞান-কল্পবিজ্ঞানে নাদিরা মজুমদার, আত্মজীবনী-স্মৃতিকথা-ভ্রমণকাহিনি ফারুক মঈনুদ্দিন, ফোকলোরে সাইমন জাকারিয়া।
এমকে
মন্তব্য করুন
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের ‘ভ্রমণকাহিনি’ প্রকাশিত
সিনিয়র সাংবাদিক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের ভ্রমণ বিষয়ক বই ‘ভ্রমণকাহিনি’ প্রকাশিত হয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে ঝুমঝুমি প্রকাশন। প্রচ্ছদ এঁকেছেন চিত্রশিল্পী মামুন হোসাইন।
বইটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চাইলে মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘বইটিতে আপাতত পাঁচটি দেশ- মালদ্বীপ, তুরস্ক, সৌদি আরব, দুবাই ও মালয়েশিয়া ভ্রমণের অভিজ্ঞতার গল্প থাকবে। গল্পগুলো পাঠের মাধ্যমে কল্পনায় দেশগুলো ঘুরে বেড়ানোর অনুভূতি লাভ করবেন পাঠকরা।’
বিশেষ করে সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনাতে পবিত্র হজ পালনকালে নানা অভিজ্ঞতার টুকরো টুকরো গল্প হজ গমনেচ্ছুসহ অন্যদের অনেক অজানা তথ্য জানার আগ্রহ মেটাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল আরও বলেন, ‘বইটি পাঠকপ্রিয়তা পেলে আগামী বইমেলায় সুইজারল্যান্ড, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের ভ্রমণ গল্প নিয়ে আরও একটি ভ্রমণগ্রন্থ প্রকাশের পরিকল্পনা আছে।’
সাংবাদিকতা পেশায় দুই যুগেরও বেশি সময় কাটিয়ে দিলেও এটি তার প্রকাশিত দ্বিতীয় বই। এর আগে ২০২৪ সালের বইমেলায় সাংবাদিকতা জীবনের বিভিন্ন জানা-অজানা নেপথ্যের ঘটনা নিয়ে ‘যাপিত জীবনের গল্প’ নামে একটি বই প্রকাশিত হয়।
অধুনালুপ্ত ‘দৈনিক বাংলার বাণী’র মাধ্যমে মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের সাংবাদিকতার পথচলা শুরু। পরে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি জাতীয় পত্রিকা ‘দৈনিক যুগান্তর’ ও ‘দৈনিক সমকাল’ এর রিপোর্টিং বিভাগে তার এক যুগেরও বেশি সময় কেটেছে। তারপর ইংরেজি জাতীয় দৈনিক ‘ঢাকা ট্রিবিউন’ হয়ে বর্তমানে তিনি দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে প্ল্যানিং এডিটর হিসেবে কর্মরত আছেন।
আগ্রহীরা বইটি সংগ্রহের জন্য বইমেলা ও রকমারি ডটকমসহ দেশের বিভিন্ন অনলাইন বুকশপে যোগাযোগ করতে পারেন।
আরটিভি/আইএম
ছড়ার জাদুকর জগলুল হায়দারের জন্মদিন আজ
আধুনিক বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের জনপ্রিয় ছড়াকার জগলুল হায়দারের ৬০তম জন্মদিন আজ। ১৯৬৫ সালের ৮ অক্টোবর জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। খ্যাতিমান ছড়াকার জগলুল হায়দার প্রায় দুই যুগ থেকে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করে চলেছেন নিত্যনতুন বিষয় ও সময়কে ধারণ করে।
‘ছাগলশুমারি, ‘দলীয়করণ’, ‘নতুন স্লোগান’, ও ‘জার্নি’র মতো অসংখ্য পাঠকনন্দিত ছড়া লিখে তিনি রয়েছেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। দীর্ঘ সময় দেশের জাতীয় দৈনিক ও অনলাইনগুলো সমৃদ্ধ হতো তার শিশুতোষ, সমসাময়িক, রম্য এবং সিরিয়াসধর্মী ছড়ায়। এছাড়া তিনি নিয়মিত লিখে চলেছেন কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ এবং সমকালীন বিষয়ের কলাম বয়ান। উত্তরাধুনিক ছড়া তাঁর নতুন সৃষ্টি। ‘বিজ্ঞান ছড়ার জনক’ হিসেবে সমালোচকরা তাকে স্থান দিয়েছেন। ভক্তরা তাঁকে ভালোবেসে দিয়েছেন ‘ছড়ার জাদুকর’, ‘ছড়াসম্রাট’ খেতাব।
ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার জগলুল হায়দার। এ ছাড়া সম্প্রতি মব কালচারের বিরুদ্ধে সচেষ্ট তিনি। সমকালীন সব ইস্যুতে তার ছড়া কলামের মতোই শক্তিশালী। সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানে অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে অগ্রসর ভূমিকা রেখেছেন। ফ্যাসিবাদবিরোধী ছড়ার বই হায়দারি হাঁক লিখে তোপের মুখে পড়েন বিগত আমলে।
জগলুল হায়দারের জগলুল সমগ্র ছাড়াও প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৬০টি। উল্লেখযোগ্য বইগুলো হলো— জগলুল সমগ্র ১ ও জগলুল সমগ্র ২, হায়দারি হাঁক, মায়ের পায়ে বেহেশত লুটায়, স্বাধীনতা সবার, চুম্বক, বাংলার মুখ বাংলার মিথ, টুইন টাওয়ার রুইন টাওয়ার, সুফিয়ানা, পলিটিকা, আন্তনেটের ডটকম, স্বাধীনতার কাব্যইতিহাস, সে কালের গল্প এ কালের ছড়া, অদ্ভুত বদ ভূত, মিট্টি মেধার কার্টুন ছড়া, ফাংকোলো, প্রিপেইড ভালোবাসা, তা রা রা তা রা রা তারারে, পল্টনে পটকা, ভালোবাসার পয়জন, রাজনীতি ভাঁজনীতি, স্বপ্ন সমান আকাশ আমার, জলটুপ শ্রাবণে, ভাবতে ভাবতে একটা ছেলে, উড়তে উড়তে একটা ঘুড়ি, অনার করলে অনার পাবি, পাওয়ার প্লে, ভালোবাসার একশ লিরিক, বিকেল খেকো টাওয়ার, ভালোর আকাশ আলোর আকাশ, মা, বাংলাদেশের প্রেমের ছড়া, বাংলাদেশের ভ্যালেনটাইন ছড়া।
জগলুল হায়দার বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত গীতিকার। লিখেছেন অসংখ্য গান। তাঁর কথা ও সুরে মনির খানের গাওয়া ‘লক্ষ টাকায় খাট কেনা যায়-ঘুম কেনা যায় যায় কি বলো?’ শ্রোতা-বোদ্ধামহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সম্প্রতি হায়দার টিউন নামে ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রকাশ হয়েছে ১০টি গান। যা প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী আগুন, ফজলুর রহমান বাবুসহ তরুণ প্রজন্মের সংগীতশিল্পীরা গেয়েছেন। এছাড়াও রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে তার কথা ও সুরে দ্রোহের গান ‘অ্যাগেইন স্টপ জেনোসাইড’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। জগলুল হায়দারের লেখা পথনাটক ‘নাড়াই’-এর এ পর্যন্ত ৯০টির মতো প্রদর্শনী হয়েছে।
ছড়াশিল্পী জগলুল হায়দার বাংলাদেশ ছড়া একাডেমির উদ্যোক্তা পরিচালক, সাহিত্য সংগঠন ম্যাজিক লন্ঠনের সম্পাদক। সাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন রেবতী বর্মণ সম্মাননা স্মারক, ফুটতে দাও ফুল সাহিত্য সম্মাননা, শ্রীপুর সাহিত্য পুরস্কার, শহীদ সৈয়দ নজরুল সাহিত্য পদক, পদক্ষেপ সাহিত্য পুরস্কার, স্বপ্নসিঁড়ি সাহিত্য সম্মাননা ইত্যাদি।
ছড়াকার জগলুল হায়দারের জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশনা সংস্থা সংযোগ থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘জগলুল সমগ্র ২’। বাসাবোর সংযোগ কার্যালয়ে আজ ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় ‘জগলুল সমগ্র ২’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়েছে।
শাহ আলম সাজুর নতুন উপন্যাস ‘মাকে মনে পড়ে’
কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক শাহ আলম সাজু লেখালিখি করছেন দীর্ঘদিন ধরে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার প্রকাশ পেয়েছে নতুন উপন্যাস ‘মাকে মনে পড়ে’। ১৯২ পৃষ্ঠার বইটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অনন্যা। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। মূল্য রাখা হয়েছে ৪০০ টাকা।
সাজু বলেন, ‘উপন্যাসটি মূলত মাকে নিয়ে। এটি মায়ের গল্প। সব মায়ের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতেই এই বই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বইটি যে কোনো মানুষকে স্মৃতিকাতর করবে। চোখের জলে ভাসাবে। মায়ের কথা খুব করে মনে পড়বে। বইটি পাঠকদের পড়ার অনুরোধ করছি।’
‘মাকে মনে পড়ে’ সাজুর ৫৫তম বই। ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয়। বড়দের পাশাপাশি কিশোর উপন্যাস লিখেছেন ২৫টি। তার সবচেয়ে জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ হচ্ছে ‘চার গোয়েন্দা’।
লেখালিখির বাইরে সাজু পেশায় একজন সাংবাদিক। দুই দশক ধরে এই পেশায় যুক্ত আছেন। বর্তমানে দেশের একটি প্রথম সারির পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে নিযুক্ত আছেন তিনি।
আরটিভি / এএ
বাংলা একাডেমির সভাপতির পদত্যাগ
বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) তিনি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বলে জানিয়েছেন একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আজ সেলিনা হোসেন পদত্যাগপত্রে সই করেছেন। তবে সভাপতির পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার একটা প্রক্রিয়া আছে, সেটি সম্পন্ন না হলে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বলতে পারছি না যে, তিনি পদত্যাগ করেছেন। এটি যেহেতু প্রক্রিয়াধীন, তাই পদত্যাগপত্র গৃহীত হলে আমরা সবাইকে জানাবো।
পদত্যাগের বিষয়ে সেলিনা হোসেন জানান, বাংলা একাডেমি থেকে কর্মকর্তারা তার বাসায় গিয়েছিলেন। তিনি কর্মকর্তাদের কাছে পদত্যাগপত্র সই করে দিয়েছেন।
২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন একাডেমির সভাপতি পদে ৩ বছরের জন্য নিয়োগ পান। ওই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে, তিনি ৩৪ বছর চাকরিজীবন কাটিয়েছেন বাংলা একাডেমিতে।
সেলিনা হোসেন কথাসাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক, গবেষক এবং প্রাবন্ধিক। পাশাপাশি একাধিক মেয়াদে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
উপন্যাসে অবদানের জন্য ১৯৮০ সালে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’ পান। ২০০৯ সালে ভাষা ও সাহিত্যে ‘একুশে পদক’ এবং ২০১৮ সালে সাহিত্যে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ পান।
আরটিভি/এমএ
ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আবদুল গফুর অন্যায়ের প্রশ্নে ছিলেন আপসহীন
কিংবদন্তি ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আবদুল গফুর ভাষা আন্দোলন ও সার্বভৌমত্বের আন্দোলনে সবসময় সামনে থেকে দৃঢ়তার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অন্যায়ের প্রশ্নে তিনি ছিল আপসহীন। দেশের যেকোনো ক্রান্তিকালে তার মতো মানুষকে জাতি আজীবন স্মরণ করবে। তমদ্দুন মজলিসের নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলন করায় মামলা-হামলা-জুলুমসহ বহু নির্যাতনের শিকার হয়েও কখনো স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে মাথা নত করেননি।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে মহান ভাষা আন্দোলনের সম্মুখ সারির সৈনিক প্রবীণ সাংবাদিক প্রয়াত অধ্যাপক আবদুল গফুরের জীবন ও কর্ম শীর্ষক সভা ও দোয়া মাহফিলে আগত বক্তারা এসব মন্তব্য করেন।
আলোচকরা বলেন, অধ্যাপক আবদুল গফুরের মৃত্যুতে জাতির এমন ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। তার জীবন যাপন ছিল খুবই সাদাসিধে। সদা হাস্যোজ্বল আবদুল গফুর কাউকে আঘাত দিয়ে কথা বলতেন না। রব্বানী দর্শনের আদর্শ পালন করা আবদুল গফুর সারাজীবন বাঙালি জাতির মানুষের অন্তরে থেকে যাবে যুগ যুগ ধরে।
তমদ্দুন মজলিসের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন সাবেক সচিব ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক ডিজি আ জ ম শামসুল আলম, সাবেক কূটনীতিক ড. মসউদ মান্নান, বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার, তমদ্দুন মজলিসের সিনিয়র সহসভাপতি ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী, সাধারণ সম্পাদক মেজর (অব) জামিল আহমেদসহ কবি-সাহিত্যিক, লেখক-সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ-রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা।
ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আবদুল গফুর ১৯২৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার রাজবাড়ির দাদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর সাত মাস।
১৯৪৫ সালে স্থানীয় মইজুদ্দিন হাই মাদরাসা থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৪৭ সালে কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ভর্তি হন। ভাষা আন্দোলন শুরু হলে আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে অংশগ্রহণ তিনি। তিনি ভাষা আন্দোলনের স্থপতি সংগঠন তমদ্দুন মজলিসের প্রতিষ্ঠাকালীন সংগঠক হিসেবে কাজ করে আমৃত্যু অভিভাবক পরিষদের সভাপতি হিসেবে কাজ করে গেছেন। সৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি।
১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পেশাজীবনে এই ভাষা দৈনিক ১৯৫৯ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দারুল উলুমের (ইসলামিক একাডেমি) সুপারিনটেনডে হিসেবে কাজ করেছেন। পরে তিনি এক বছর চট্টগ্রামে জেলা যুবকল্যাণ অফিসার হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬৩ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ এবং ১৯৭২ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত আবুজর গিফারী কাজে শিক্ষকতা করেন।
মরহুম আবদুল গফুর ১৯৮০ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রকাশনা পরিচালক ছিলেন। তিনি দৈনিক ইনকিলাবের ফিচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখার জন্য ২০০৫ সালে একুশে পদক পান।
গুণী এ মানুষ দৈনিক মিল্লাত, দৈনিক আজাদ, দৈনিক দেশ, দৈনিক ইনকিলাব, ইংরেজি দৈনিক শিপন, দৈনিক নাস্তা পত্রিকায় কাজ করেছেন।
আরটিভি/এএইচ-টি
‘বাংলা আমার’-এর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘প্রিয় পঙক্তিমালা’
সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলা আমার’-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘প্রিয় পঙ্ক্তিমালা’ অনুষ্ঠান।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে ‘প্রিয় পঙ্ক্তিমালা’ শিরোনামে অনুষ্ঠান আয়োজন করে সংগঠনটি।
অনুষ্ঠানে বাংলা আমার-এর আবৃত্তি, সঙ্গীত ও নৃত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন এবং আমন্ত্রিত আবৃত্তিশিল্পীরা আবৃত্তি পরিবেশন করেন।
আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন বাংলা আমার-এর উপদেষ্টা আবৃত্তিশিল্পী মজুমদার বিপ্লব, অতিথি হিসেবে ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী রফিকুল ইসলাম, মাসুম আজিজুল বাসার এবং জনাব আলি আকবর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠের সদস্য রঞ্জু নাহার মনি।
বাংলা আমার-এর সভাপতি মেহেদী হাসান আকাশ বলেন, সুস্থ মানসিক বিকাশে সংস্কৃতি চর্চার কোনো বিপল্প নেই। নিয়মিত সংস্কৃতি চর্চার মানুষের মানবিক মূল্যবোধ তৈরি হয়। ‘বংলা আমার’ শিশু-কিশোর এবং বড়দের নিয়ে প্রায় ৭ বছর ধরে নিয়মিত সংস্কৃতি চর্চা করে চলেছে। দীর্ঘদিন ধরে আবৃত্তি অঙ্গনে একটা গুমট ভাব তৈরি হয়ে আছে। আজকের এই আয়োজন শুধু আবৃত্তি বা গান-নৃত্য পরিবেশনের জন্য না, এটি শিল্পীদের একটি মিলনমেলাও।
আমন্ত্রিত আবৃত্তিশিল্পী হিসেবে আবৃত্তি করেন সাজেদুল করিম সুজন, গাজী তরিকুল ইসলাম, হুর-এ-জান্নাত, মাহিনুর মুমু, পলি পারভীন, ঋতুরাজ ফিরোজ, রশিদ কামাল, মাহমুদা সিদ্দিকা সুমি, নাজমুল আহসান তরুণ, নাসিমা খান বকুল ও কাজী রাজেশ প্রমুখ।
এ ছাড়া বাংলা আমার-এর সদস্য দুলাল মাহমুদ, আবিদুর রহমান ফাহিম, মৃন্ময় চৌধুরী, তাহমিনা আক্তার ছবি, জুবায়ের হোসেন, লুৎফুন্নাহার সোনিয়া, আরিফা বেগম, কান্তা আরিফিন, তমালিকা রায় চৌধুরী, স্বর্ণলতা ঘোষ, লিপি সরকার প্রমুখও আবৃত্তি পরিবেশন করেন।
ক্ষুদে সদস্য হিসেবে ছিল মো. আনাস কবির, আরুষি রাজশ্রী গাইন, ফারওয়াহ ইসলাম মুনাদ, তাহরিম তারেক ইহান, আয়েশা জাবীন, ফাইজা ফারাহ আরিশা, ফাইরুজ লুবাবা, রিদওয়ানা আয়াত, জুন নুরাইন খান জামিয়া, সিয়ারা নূর দাহমা, সাফওয়ানা জাহান, শেখ মানহা মাহমুদ, আরিবাহ্ সিদ্দিক, শানুম জারিন, সামাইরা হক, আওসাফ আনোয়ার, আবু বকর, মিশেল মাহবিন সৌর্হাদ্য, শাহীদ কাউসারুল আনোয়ার, ফাতেমা আক্তার, তরু, রুয়াব, মহিমা, অথিন, তাহিফা জাহান তুবা, ফাবিহা তাসফিয়া, আশফিয়া হাবীব, জাহবিয়া হাবিব, মৈত্রী সরকার, আরাধ্যা সেনগুপ্ত, আলিজা হাসান, আবেদা যারীন, আয়মান ফারজানা আরিশা, নাজিফা তাসনিম রহমান, ইব্রা বিনতে মাহমুদ, জ্যাসিনা আয়াত মালিক, তাসফিয়া রহমান মানহা, অপরাজিতা সরকার, তহুরা সাফরিন রিদা, লিয়ানা, আবৃত্তি কুন্ডু, রাইয়ান আহসান, আয়ান জামান রুবাই, তাসকিন বিন মুশফিক, সাদিয়া তাসনিম সাফা, রিশান আহসান, রওশান আসফিয়া, সুহাদা মাঈনুল মানহা, ফারিহা আমিন, জান্নাতুল ফেরদৌস মিনহা, সাদ বিন মোস্তাফা, সাবাউন, উমাইযা মাহরীন প্রমুখ।
বিশ্ব সাহিত্যকেন্দ্রে আজ মাহফুজামঙ্গল উৎসব
৩৬ বছর পূর্তিতে কবি মজিদ মাহমুদ রচিত ‘মাহফুজামঙ্গল’ কাব্যগ্রন্থ নিয়ে সমধারা আয়োজন করছে ‘মাহফুজামঙ্গল উৎসব-২০২৪’।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ব সাহিত্যকেন্দ্র ভবনের প্রধান মিলনায়তনে উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম। কবি, প্রাবন্ধিক ও গবেষক মজিদ মাহমুদকে নিয়ে এটি সমধারার দ্বিতীয় প্রয়াস। ২০১৭ সালে ‘মজিদমঙ্গল’ শিরোনামে একটি আলেখ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সমধারা। ২০২৪ সালে তিনি কবিতায় সমধারা সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
উৎসব সূচিতে থাকছে- ‘মাহফুজামঙ্গল’ ৩৬ বছরের পাঠ প্রবন্ধ নিয়ে ‘মজিদ মাহমুদের বোধ ও মাহফুজামঙ্গল উদযাপন’ শিরোনামে সমধারার বিশেষ সংখ্যার পাঠ উন্মোচন ও মুক্ত আলোচনা।
এ ছাড়া ‘মাহফুজামঙ্গল’ থেকে নির্বাচিত কবিতা নিয়ে আবৃত্তি প্রযোজনা ‘মাহফুজামঙ্গলনামা’ উপস্থাপন। প্রযোজনায় কবি মজিদ মাহমুদের সাহিত্যজীবন কর্মের পাশাপাশি মাহফুজামঙ্গল কাব্যগ্রন্থ থেকে ২৫টি কবিতা ও রবীন্দ্রসংগীত স্থান পেয়েছে। প্রযোজনায় বিশেষ শিল্পী হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন কবি মজিদ মাহমুদ। গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন সমধারা সম্পাদক সালেক নাছির উদ্দিন।
মজিদ মাহমুদ কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক। তিনি সমকালীন বাংলা ভাষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কবি ও চিন্তাশীল প্রাবন্ধিক হিসেবে বিবেচিত। মাহফুজামঙ্গল, বল উপাখ্যান, আপেল কাহিনিসহ বেশকিছু জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা তিনি। ‘মাহফুজামঙ্গল’ যেন সম্মোহিত অবস্থায় লেখা একটি কাব্যগ্রন্থ। বারবার পাঠের পর শিহরিত হতে হয়। পৃথিবী সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকে এ মহাবিস্তারের সামনে দাঁড়িয়ে কবি এমন সব কথা উচ্চারণ করেছেন যা এক শাশ্বত প্রেম ও প্রার্থনার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিন যুগ ধরে কাব্যগ্রন্থটি মনোযোগের কেন্দ্রে অবস্থান করছে। মজিদ মাহমুদের রচনা কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশন, ইন্ডিয়ান রিভিউ, সিঙ্গাপুর আনবাউন্ডসহ দেশি-বিদেশি স্বনামখ্যাত জার্নাল ও পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে থাকে। ইংরেজি ছাড়াও ফরাসি, চায়না ও হিন্দি ভাষায় তার বই অনূদিত হয়েছে। তিনি ২০০৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এশিয়ার নোবেলখ্যাত ম্যাগসাইসাই পুরস্কারের জুরি ছিলেন। তার আটটি গ্রন্থ লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের মাধ্যমে বিশ্বের ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত আছে। ইতোমধ্যে তার ২৩টি কাব্যগ্রন্থ, ২২টি প্রবন্ধ গ্রন্থসহ ৬০টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। মজিদ মাহমুদ সময়ের সন্তান। তিনি এই সময়ের, এই সমাজের, এই দেশের। ৩৬ বছর আগে রচিত তার অমর সৃষ্টি ‘মাহফুজামঙ্গল’ কাব্য। কাব্যরসিক বিদগ্ধজনরা ‘গত শতাব্দীর সর্বশেষ মঙ্গল কাব্য’ অভিধায় শনাক্ত করেছেন এ কাব্যকে।