স্ত্রী দাবিদার তরুণী নাসরিন সুলতানার সঙ্গে বিয়ের প্রমাণ না মেলায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে করা মামলায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানি ও তার মা নার্গিস আক্তারকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক তাবাসুম ইসলাম মামলার দায় থেকে তাকে অব্যাহতি দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক মো. ইয়াহিয়া অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে সানি ও তার মাকে অব্যাহতির আবেদন করে গত ১৭ আগস্ট চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, আরাফাত সানির সঙ্গে মামলার বাদীর যে বিবাহ ও কাবিন হয়েছে তার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। সানি ও নাসরিন একটি হোটেলে যাতায়াত করতেন। যে রেস্টুরেন্টে তাদের বিয়ে হয়েছে তার কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি। তার মা নার্গিস সুলতানা লোকজনকে নিয়ে মামলার বাদীকে মারধরের কথা বলেছেন তারও কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
আদালত সূত্র জানায়, ৭ বছর আগে পরিচয়ের সূত্র ধরে আরাফাত সানি ও স্ত্রী দাবিদার তরুণী নাসরিন সুলতানার মাঝে ঘণিষ্ঠতা হয়। ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর অভিভাবকদের না জানিয়ে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের ৩ বছরেও সানি ওই তরুণীকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘরে তুলে নেননি।
২০১৬ সালের ১২ জুন রাতে নাসরিন সুলতানা নামের একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে আসল ফেসবুক আইডিতে মেসেঞ্জারে সানি ও ওই তরুণীর অন্তরঙ্গ কিছু ছবি পাঠানো হয়। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন ওই তরুণী। ওই মামলায় ২২ জানুয়ারি সানিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৪ নং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে যৌতুকের জন্য মারধরের অভিযোগে ক্রিকেটার আরাফাত সানি ও মা নার্গিস আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করেন সানির স্ত্রী দাবিদার নাসরিন সুলতানা। এর আগে ভিন্ন ধারায় আরও দুটি মামলা করেন নার্গিস।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল, ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বরে ক্রিকেটার আরাফাত সানির সঙ্গে ৫ লাখ এক টাকা দেনমোহরে নাসরিনের বিয়ে হয়। বিয়ের ৬ মাস পর সানি তার কাছে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকার জন্য সানি তার স্ত্রীকে মারধর করেন এবং গালিগালাজ করে ভাড়া বাসায় রেখে যান।
পরবর্তীতে নাসরিন সানির সঙ্গে দেখা করলে তাকে বলেন, 'যৌতুকের টাকা না দিলে আমার মা তোমার সঙ্গে সংসার করতে দেবেন না এবং এ নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোমার পরিণতি খারাপ হবে। কারণ, তোমার কিছু অশ্লীল ছবি আমার মোবাইলে রয়েছে।'
এরপর তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সানির মা বাড়ি থেকে বের করে দেন এবং হুমকি দিয়ে বলেন, 'তোর সঙ্গে আমার ছেলে সংসার করবে না, তাই সম্পর্ক ছিন্ন করার ব্যবস্থা কর।'
তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ইয়াহিয়া প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করেন, মামলার বাদী ভুল তথ্য প্রদান করে মামলাটি দায়ের করেছেন। তাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ (সংশোধিত ২০১৩) এর ১১(গ) ৩০ ধারা মতে, আসামিদের অব্যাহতির আবেদন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হলো।
এএ/ডিএইচ