• ঢাকা রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
logo
‘বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের বাজারে দেশীয় কোম্পানির আধিপত্য’
চামড়াখাতে ন্যূনতম মজুরি নিয়ে সিপিডির নতুন প্রস্তাব
ট্যানারি শিল্পের জন্য শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার ৭৭৬ টাকা প্রস্তাব দিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। একইসঙ্গে মজুরি দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রেডিং সিস্টেম যথাযথ করার প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি। শ্রমিকদের খাদ্যমূল্য ও মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় এ প্রস্তাব দিয়েছে সিপিডি। শনিবার (৪ মে) সিপিডির ধানমন্ডির কার্যালয়ে ‘ট্যানারি শিল্পে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব প্রস্তাবনায় উঠে আসে। সিপিডির গবেষণা পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেমের নেতৃত্ব গবেষণা পরিচালনা করা হয়। সিপিডির সিনিয়র গবেষক তামিম আহমেদ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা ও ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদসহ খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বক্তব্য রাখেন। শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি প্রস্তাবনায় সিপিডি বলছে, শ্রমিকদের খাদ্যমূল্য ২০ হাজার ৫৬৪ ও নন-ফুড মূল্য ১২ হাজার ৮৮১ টাকা হিসেবে মাসে মোট ৩৩ হাজার ৪৪৫ টাকা প্রয়োজন। সেই হিসেবে সিপিডি মনে করছে ন্যূনতম মজুরি হওয়া উচিত ২২ হাজার ৭৭৬ টাকা। একইসঙ্গে আমাদের প্রস্তাব থাকবে গ্রেডিং সিস্টেম ঠিক করে একটি গ্রেডে আনা। এই খাতে গ্রেড উন্নয়নের সুযোগ কম, কারণ একেকটি গ্রেডের কাজ একেক রকম। যেহেতু পদোন্নতির সুযোগ নেই, তাই গ্রেডের মধ্যে কয়েকটি ভাগ, যেমন: যেমন-গ্রেড-৫ এর এ, বি ও সি করে সাবগ্রেড করার প্রস্তাব রয়েছে। এর ফলে পদোন্নতির সুযোগ থাকবে ও শ্রমিকদের কাজে উৎসাহ বৃদ্ধি পাবে। গোলাম মোয়াজ্জেম তার বক্তব্যে বলেন, ২০২৩ সালের চামড়া জাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছিল ১.২ বিলিয়ন ডলার। যার ভিতরে ট্যানারি শিল্প থেকে এসেছে ১২৩ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি খুঁজছে সে হিসাবে চামড়াজাত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের গবেষণায় এই খাতে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার ৭৭৬ টাকা প্রস্তাব এসেছে, আমরা জানি শ্রমিকদের দাবি ২৫ হাজার টাকা আর মালিকদের প্রস্তাবনা ১৫-১৬ হাজার টাকা। আমি আশা করছি মজুরি বোর্ড সকল পক্ষে প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে। সিডিপির গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১১ সালে সর্বপ্রথম ট্যানারি শিল্পের জন্য ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়েছিল, যার পরিমাণ ৮ হাজার ৭৫০ টাকা। ২০১৮ সালে সেটা বৃদ্ধি করে শহর অঞ্চলের জন্য ১৩ হাজার ৫০০ টাকা ও গ্রাম অঞ্চলের জন্য ১২ হাজার ৮৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে যে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেটা কতগুলো প্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়ন করা হয়েছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। সিপিডি’র গবেষণায় দেখা গেছে ২০২৪ সালে এসেও দেখা গেছে ৬০ শতাংশ কারখানা ওই বেতন দিচ্ছে না। প্রতিবছর ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি পাওয়ার কথা থাকলেও সেটা বিবেচনায় বাস্তবায়ন হার অনেক কম পাওয়া গেছে। সিপিডি অ্যাংকর মেথডে ৩৫টি ট্যানারির ওপর গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে।   
৯৫ শতাংশ কারখানা বোনাস দিয়েছে  
এক চার্জে ৯০০ কিলোমিটার চলবে শাওমির গাড়ি
বাংলাদেশে ফের নকিয়া ফোন উৎপাদন শুরু
সেন্টার ফর এনআরবি’র সঙ্গে আলোচনায় বিমানমন্ত্রী
আধুনিক যুগেও প্লাস্টিকের বিকল্প নেই : মোরশেদ আলম
বেঙ্গল গ্রুপ ও আরটিভির চেয়ারম্যান আলহাজ মোরশেদ আলম বলেছেন, আধুনিক যুগেও প্লাস্টিকের বিকল্প নেই। তবে মান ও দাম ঠিক রেখে এই শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যুগের সাথে তাল মেলাতে না পারলে পিছিয়ে পড়তে হবে।   শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ১৬তম আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) এই মেলার আয়োজন করেছে। মোরশেদ আলম বলেন, প্লাস্টিক খাতকে সামনে আরও এগিয়ে যেতে হবে। এ জন্য আমাদের ভবিষ্যতে নতুন নতুন বাজার খুঁজতে হবে। আমাদের আশপাশের দেশগুলোতে খোঁজ করতে হবে।  বেঙ্গল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে প্লাস্টিক শিল্প ৪০ হাজার কোটি টাকার। অনেক মানুষের সংগ্রামের ফসল এটি। যা নতুন প্রজন্ম আরও উপরে নিয়ে যাবে। দেশের প্লাস্টিক পণ্যের প্রচার, প্রসার ও রপ্তানি বাড়ানোর লক্ষ্যে বিশ্বের ২০টি দেশের অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে এই মেলা। যেখানে প্লাস্টিকের বিভিন্ন উপাদান, মেশিনারিজ, কেমিক্যাল প্রদর্শন ও ক্রয়ের আগাম কার্যাদেশ দেওয়া-নেওয়া হচ্ছে। চারদিনব্যাপী এই মেলা হয় আজ (২৭ জানুয়ারি)। মেলায় দেশী-বিদেশী প্রায় এক হাজার কোম্পানি অংশ নেয়।
বাংলাদেশের প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২৬ শতাংশ
প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়ছে। বর্তমানে বিশ্বের ১২৬টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশে উৎপাদিত প্লাস্টিক পণ্য। বিশ্ববাজারে রপ্তানি করা বাংলাদেশি পণ্যগুলোর মধ্যে প্লাস্টিকের অবস্থান ১২তম।  বর্তমানে বছরে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী রপ্তানি করে বাংলাদেশ। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ১৬ কোটি ৬২ লাখ মার্কিন ডলারের প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। পরের অর্থবছরেই তা বেড়ে দাঁড়ায় ২০ কোটি ৯৮ লাখ ডলারে। অর্থাৎ এক অর্থবছরের ব্যবধানে প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ২৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। সেজন্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ বছরে ৮৫ হাজার কোটি টাকার প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিআইডিএ) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৫ হাজার ৩০টি প্লাস্টিক কারখানা আছে। এরমধ্যে ৯৮ শতাংশই ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মালিকানায়। স্থানীয় বাজারে বছরে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকার প্লাস্টিক পণ্য বিক্রি হয়। এরমধ্যে পিভিসি পাইপ বিক্রি হয় ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ ছাড়া প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার গৃহস্থালী সামগ্রী বিক্রি হয়। প্লাস্টিক শিল্পখাত নিয়ে যে পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে তার প্রথম ধাপ হলো ধারাবাহিকভাবে ১৫ শতাংশ হারে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। সরকারের লক্ষ্য, ২০২৮ সালের মধ্যে প্লাস্টিক এবং প্যাকেজিং শিল্পের বাজার ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারে উন্নীত করা। গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত প্লাস্টিক শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-২০২৩ তে এসব লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, ২০২৮ সালের মধ্যে এই খাতে পাঁচ লাখ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক এবং প্যাকেজিং পণ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে শতভাগ বর্জ্যমুক্ত জাতি (জিরো ওয়েন্ট নেশন) হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার ঘোষণাও রয়েছে নীতিমালায়। এই খাতের জন্য নীতিমালার অধীনে কিছু প্রণোদনাও রাখা হয়েছে। সে অনুযায়ী, সরকার প্লাস্টিক পার্ক এবং ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের পাশাপাশি মূলধনী সরঞ্জাম, খুচরা যন্ত্রাংশ এবং আনুষাঙ্গিক শুল্কমুক্ত আমদানিতে প্রথম ১০ বছরের জন্য আয়কর অব্যাহতি দেবে। এছাড়া বন্দরে পণ্য লোডিং, আনলোডিং, স্টোরেজ বা ক্যাপিটাল ইকুইপমেন্ট আমদানিতে রপ্তানি শুল্ক, শুল্ক, কর ও ফিতে বিশেষ ছাড় দেওয়া হবে।
ইইউর কাছে ন্যায্যমূল্য দাবি করলো শিল্প মালিকরা
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কর্মকর্তারা বলেছেন, মানবাধিকার ও পরিবেশ সুরক্ষায় বাংলাদেশকে ডিউ ডিলিজেন্স মানতে হবে। সেটা না মানলে নিষেধাজ্ঞা ও জরিমানা করা হবে। এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে ব্র্যান্ডগুলোকে বাধ্য করা হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের উৎপাদকরা জানিয়েছেন, নিয়মকানুন মানলে খরচ বেশি হবে। সেজন্য ক্রেতাদের কাছ থেকে পণ্যের ন্যায্যমূল্য পরিশোধ করতে হবে। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ‘আইনের যথাযথ পরিপালন’ শীর্ষক বৈঠকে এসব কথা বলেন দেশের তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের ব্যবসায়ীরা। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) এই বৈঠকের আয়োজন করে। আইবিএফবি সভাপতি হুমায়ুন রশীদের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডেপুটি হেড অব ইইউ মিশন বার্নড স্প্যানিয়ার। বৈঠকে আলোচক ছিলেন, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান, নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন এবং আইবিএফবি সহসভাপতি এম এস সিদ্দিকী। 
দেশের রাস্তায় নামছে ৩৫০ সিসির রয়্যাল এনফিল্ড
অবশেষে বাংলাদেশের রাস্তায় নামতে চলেছে ৩৫০ সিসির ক্ষমতাসম্পন্ন রয়্যাল এনফিল্ড মোটরসাইকেল। আগামী জুলাই মাসে দেশে বিশ্বখ্যাত এই ব্র্যান্ডের চারটি মডেলের মোটরসাইকেল বিক্রি শুরু হবে। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) স্থানীয় প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ইফাদ মোটরস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ইফাদ গ্রুপের পরিচালক তাসকিন আহমেদ বলেন, ক্লাসিক, বুলেট, হান্টার এবং মিটিওর নামের এই চারটি মডেল স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হবে এবং দাম নির্ভর করবে বিনিময় হারের ওপর। তবে আমরা যতটা সম্ভব দাম কম রাখার চেষ্টা করব। চট্টগ্রামে ইফাদ মোটরসের কারখানায় বছরে ৪০ হাজার মোটরসাইকেল তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। এর আগে, ২০২৩ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশের রাস্তায় ৩৭৫ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি দেয় সরকার। এরপর দেশে বাজাজ মোটরসাইকেলের প্রস্তুতকারক উত্তরা মোটরস ইতোমধ্যেই ২৫০ সিসির ক্ষমতাসম্পন্ন পালসার এন ২৫০ মডেলের বাইক বাজারে ছেড়েছে। এখন রাস্তায় নামার অপেক্ষায় রয়েছে ৩৫০ সিসির রয়্যাল এনফিল্ড মডেলের মোটরসাইকেলগুলো।
টেক্সটাইল ও পোশাকের বৈশ্বিক শিল্প পাওয়ার হাউসে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি
বাংলাদেশ তার অর্থনীতিকে পাট ও জীবিকা নির্বাহের উপর নির্ভরশীলতা থেকে টেক্সটাইল ও পোশাকের বৈশ্বিক শিল্প পাওয়ার হাউসে পরিণত করেছে, দারিদ্র্যের হার অর্ধেক করেছে এবং মোট দেশজ উৎপাদনকে উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি করেছে। এছাড়া বাজারমুখী নীতি, বেসরকারিকরণ, বাণিজ্য উদারীকরণ এবং কৌশলগত বৈদেশিক বিনিয়োগ বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ও শিল্প প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করার মূল চাবিকাঠি ছিল। বাংলাদেশের লক্ষ্য যেহেতু তার অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করা এবং ভ্যালু চেইনে আরোহণ করা, তাই আফ্রিকা পোশাক শিল্পের পরবর্তী সীমানা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে, যা একই ধরনের প্রবৃদ্ধির সুযোগ এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিল্পায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন থেকে উপকৃত হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ব্লগে এমন কথাগুলো লিখেছেন ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশনের (আইএফসি) ম্যানুফ্যাকচারিং ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ট্রেড সাপ্লায়ার ফাইন্যান্স- এর গ্লোবাল ম্যানেজার ফেমি আকিনরেবিয়ো।  তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭০-এর দশকের শুরুতে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। নয় মাসের যুদ্ধে তারা সবেমাত্র পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এটি একটি অত্যন্ত দরিদ্র, ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল যা মূলত পাট উৎপাদন এবং জীবিকা নির্বাহের উপর নির্ভরশীল কিন্তু তার জনগণকে খাদ্য জোগানে অক্ষম। ১৯৭৪ সালে এটি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে দেশ। ওই সময় দেশটির পশ্চিমাঞ্চল সফররত বিশ্বব্যাংকের একজন অর্থনীতিবিদ একে ‘পরমাণু হামলার পরের সকালের মতো’ বর্ণনা করেছিলেন। তারপরে, এক দশকেরও কম সময়ের মধ্যে, বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য একটি সরকারী প্রচারণা ফলপ্রসূ হয়েছিল এবং বাংলাদেশ এমন একটি পথে যাত্রা শুরু করেছিল যা দেশটিকে কৃষি অর্থনীতি থেকে শিল্প পাওয়ার হাউসে রূপান্তরিত করবে। টেক্সটাইল এবং পোশাক উৎপাদন এমন একটি অলৌকিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রত্যাবর্তন হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে যা আজ উন্নয়নশীল দেশগুলো অনুকরণ করার চেষ্টা করে। শিল্পের বেসরকারিকরণ এবং বাণিজ্য উদারীকরণসহ বাজারমুখী নীতিতে বাংলাদেশের পরিবর্তনের ফলে পোশাক রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে।  রেডি-টু-ওয়্যার পোশাক বৃদ্ধির ‘ইঞ্জিন’ হয়ে ওঠে এবং সুতির টি-শার্ট, প্যান্ট, পুলওভার এবং ডেনিম তার প্রিয় স্পট হয়ে ওঠে। গত ১০ বছরে বাংলাদেশ তার অর্থনীতিকে বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম দেশে উন্নীত করেছে, দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে এবং লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান করেছে। কোভিড-১৯ মহামারীর আগের দশকে অর্থনীতি বার্ষিক ৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বেড়ে প্রায় ২ হাজার ৫০০ ডলারে উন্নীত হয়েছিল, যা প্রতিবেশী ভারতকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এ ধরনের ট্র্যাক রেকর্ড আজ আফ্রিকার উদীয়মান অর্থনীতির ঈর্ষার কারণ। শিল্পায়নের জন্য কোনও ‘এক-আকারের-ফিট-অল’ রেসিপি নেই। তবে বৃহত্তর, স্বল্প ব্যয়বহুল কর্মীবাহিনী, পর্যাপ্ত পুনর্নবীকরণযোগ্য সম্পদ এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিযুক্ত দেশগুলোতে পরবর্তী প্রজন্মের টেক্সটাইল এবং পোশাক শক্তি গড়ে তুলতে যা লাগে তার বেশিরভাগই রয়েছে। আর বাংলাদেশের বিপরীতে আফ্রিকায় দেশীয় তুলার বাড়তি সুবিধা রয়েছে।  ২০২২ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের রফতানি করা সুতির টি-শার্টের ২০ শতাংশ উৎপাদন করেছে, যার মূল্য ৯ বিলিয়ন ডলার, যদিও ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ লেবেল লাগানো তুলার ২ শতাংশেরও কম উৎপাদিত হয়েছে। এটি সম্ভবত একটি সুখকর বিশ্বাস যে, আফ্রিকার পোশাক শিল্প সম্প্রসারণে আগ্রহ একক খাতের নির্ভরতা থেকে বৈচিত্র্যময় হওয়ার বাংলাদেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষার সাথে মিলে যায়। চূড়ান্তভাবে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের লক্ষ্য উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়া। যদিও বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশই আসে শুধু পোশাক থেকে। এটি একটি উল্লেখযোগ্য ভাবে সফল শিল্পায়ন নীতির জন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য, যার মধ্যে রয়েছে, রফতানি অঞ্চলগুলোতে যন্ত্রপাতি আমদানির শুল্কমুক্ত অনুমতি দেওয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করা। এই কৌশল, যার জন্য বাংলাদেশ বিখ্যাত, একটি অত্যাধুনিক পোশাক খাত তৈরি করেছিল যা ৩ হাজার ৫০০ টিরও বেশি কারখানায় ৪০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান করে এবং ১৬৭টি দেশে ৪৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করে। পোশাক কাটা, সেলাই ও একত্রিত করা কঠিন এবং ক্লান্তিকর ও সস্তা শ্রমের উপর নির্ভর করে রফতানি-নেতৃত্বাধীন বৃদ্ধির মডেলগুলো চিরকাল স্থায়ী হয় না। অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের সাফল্যের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এবং এর পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপে রয়েছে। পোশাক শিল্পে মূলত নারী শ্রমশক্তির আধিপত্য রয়েছে, যারা কারখানার ফ্লোর থেকে অনেক দূরে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি থেকে উপকৃত হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ সফরে এসে আমি সেটা প্রত্যক্ষ করেছি। ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএফসি) মধ্যে একটি সহযোগিতায় বেটার ওয়ার্ক এবং জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি অ্যান্ড রিটার্নসের মতো কর্মসূচি কারখানায় কাজের পরিবেশ উন্নত করেছে, লিঙ্গ বৈচিত্র্যকে উন্নত করেছে এবং নারীদের জন্য ব্যবস্থাপনার সুযোগ তৈরি করেছে। এই অভিন্ন সমৃদ্ধির সামাজিক প্রভাব সুদূরপ্রসারী। বাংলাদেশের তিন-চতুর্থাংশ নারী শিক্ষিত, তারা তাদের আঞ্চলিক প্রতিবেশীদের তুলনায় শিক্ষা গ্রহণ, উচ্চ বেতনের চাকরি এবং স্বাস্থ্যবান সন্তান ধারণের সম্ভাবনা বেশি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামান্য সহায়তায় উন্নয়নের সামাজিক ও টেকসই সুফল পোশাক উৎপাদনকারী দেশগুলোর পরবর্তী ক্লাস্টারে স্থানান্তরিত হবে। এটি এমন একটি উন্নয়নের ধারা যা আমরা আগেও দেখেছি। বাংলাদেশের সৃষ্টির গল্প শুরু হয়েছিল অনেকটা সেভাবেই। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশী কোম্পানি দেশ গার্মেন্টস লিমিটেড এবং দক্ষিণ কোরিয়ার দাইয়ু একটি যৌথ উৎপাদন চুক্তি স্বাক্ষর করে। কোরিয়ান কোম্পানিগুলো টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্পকে ছাড়িয়ে যাচ্ছিল। তারা স্বীকার করেন যে, বাংলাদেশের সস্তা শ্রমশক্তি তাদের সাশ্রয়ী মূল্যের পোশাক ব্র্যান্ডের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিধি বাড়াতে সহায়তা করতে পারে। ব্যবস্থাটি ছিল একটি দ্বিপাক্ষিক সফল প্রক্রিয়া। বাংলাদেশের জিডিপি ১৯৮০ সালের ১৮ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২০২২ সালে ৪৬০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে এবং এটি আজ বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টেক্সটাইল এবং পোশাক রফতানিকারকদের মধ্যে অন্যতম। এখন, আইএফসি পরবর্তী বড় শিল্প রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করছে। এই বিবর্তন দক্ষিণ দিকে আফ্রিকার দিকে তাকায়, যেখানে টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিল্পায়নের জন্য পরিস্থিতি পরিপক্ক। আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপরচুনিটি অ্যাক্টের মতো কর্মসূচি ইতোমধ্যে কেনিয়া, মিশর, ঘানা, ইথিওপিয়া, মাদাগাস্কার এবং অন্যান্য দেশে মার্কিন বাজার ও ব্যবসায় শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার প্রদান করেছে এবং টমি হিলফিগার, ইউনিক্লো, চিলড্রেনস প্লেস, কেলভিন ক্লেইন এবং ওয়ালমার্টের সরবরাহ চেইনের অংশ হয়ে উঠেছে। মরক্কোতে, যা ইউরোপ থেকে মাত্র একটি সংক্ষিপ্ত হাব, সংস্থাগুলো ইউরোপীয় বাজারে সরবরাহ করার জন্য জারার মতো ব্র্যান্ডের জন্য উৎপাদন করছে। এই ঐতিহাসিক সাপ্লাই চেইন রূপান্তরকে সমর্থন করার জন্য, আইএফসি ২০২৩ সালের জুনে একটি রোড শো স্পন্সর করেছিল যা আফ্রিকান নির্মাতাদের বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কায় আন্তঃআঞ্চলিক উৎপাদন অংশীদারিত্বের সুযোগগুলো সন্ধান করতে নিয়ে এসেছিল। এরই মধ্যে কিছু চুক্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আফ্রিকা আরও অনেক বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত যা টেকসই, স্থিতিস্থাপক এবং লাভজনক অর্থনৈতিক বিকাশকে চালিত করতে পারে এবং সম্ভবত গ্লোবাল সাউথে টাইগার অর্থনীতির একটি নতুন যুগের সূচনা করতে পারে।