বহুদিন ধরে চলে আসা প্রথাকে কঠোর নিয়মের আবদ্ধে পালন করতে গিয়ে সময়ের আবর্তনে অচলায়তন বিদ্যায়তনের কোনো পরিবর্তন হয় না। এখানকার বিদ্যার্থীরাও কোনো প্রশ্ন ছাড়াই তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবতীয় নিয়ম ও অনুশাসন মেনে চলে। অচলায়তনের বাইরের জগতের সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই, এমনকি যোগাযোগ করার বিন্দুমাত্র আগ্রহ প্রকাশ পাওয়াটাও তাদের জন্য ‘মহাপাপ’-এর নামান্তর!
এই বিদদ্যায়তনের দুই শিক্ষার্থী-পঞ্চক ও মহাপঞ্চক। তারা আপন ভাই হলেও জীবন দর্শন বিপরীত। পঞ্চক বিদ্রোহী মনোভাবসম্পন্ন, যে সকল গতানুগতিকতাকে প্রশ্ন করে এবং অচলায়তনের নিয়মতান্ত্রিকতার ত্রুটিসমূহকে চিহ্নিত করে। অপরদিকে মহাপঞ্চক গতানুগতিক চিন্তাপ্রবাহে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে এবং বিদ্যায়তনের সকল নিয়মকেই বিনাপ্রশ্নে অনুসরণ করে।
এই দুই ব্যক্তির মধ্যকার যে ইচ্ছার দ্বন্দ্ব তা আরও দৃঢ়ভাবে প্রকাশিত হয় যখন অচলায়তনে একটি ছোট্ট ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুধুমাত্র নিয়মতান্ত্রিকতাকে অটুট রাখার স্বার্থে অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে থাকে। এরই মধ্যে প্রেক্ষাপটে উপস্থিত হন গুরু বা দাদাঠাকুর এবং বাইরের বাস্তব জগৎ ও সেই জগতের মানুষদের সঙ্গে অচলায়তনের বিদ্যার্থীদের পরিচয় ঘটে প্রায় যুদ্ধের ডামাডোলের ভিতর। পুরোনো চিন্তার প্রাচীন দেয়াল ভেঙে পড়ে আর শুরু হয় নতুনের স্পন্দন। বাকি গল্প জানতে হলে দেখতে হবে প্রাচ্যনাটের নতুন নাটক ‘অচলায়তন’।
নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় ও মঙ্গলদীপ ফাউন্ডেশন প্রণোদনায় প্রাচ্যনাটের ৪২তম প্রযোজনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন আজাদ আবুল কালাম।
এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সানজিদা প্রীতি, শাহানা রহমান সুমি, শাহেদ আলী সুজন, তৌফিকুল ইসলাম ইমন, শাখাওয়াত হোসেন রেজভী, জাহাঙ্গীর আলম, চেতনা রহমান ভাষা, প্রমুখ। সোমবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মঞ্চে মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে প্রাচ্যনাটের এই নাটকটি।