পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুস বাণিজ্যের অভিযোগ
কোটা আন্দোলনের সহিংসতাকে ঘিরে রাজধানীর ৫০টি থানায় আড়াইশোর বেশি মামলায় প্রতিদিন আটক করা হচ্ছে শত শত মানুষ। অভিযোগ উঠেছে, অনেক নিরপরাধ মানুষকেও করা হচ্ছে গ্রেপ্তার, চলছে আটক বাণিজ্য। চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থীদেরও বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঠানো হয়েছে জেলহাজতে। কোর্টের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরেও জামিন করাতে ব্যর্থ অভিভাবকরা। তাই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে পড়েছেন শঙ্কায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর বকশীবাজারের সিএমএম কোর্টে সকাল থেকেই স্বজনদের অপেক্ষা প্রিয়জনকে একনজর দেখার আশায়। কোনো প্রিজনভ্যান আসলেই দৌড়ে যাচ্ছে তার কাছে, নিচ্ছেন খোঁজ। তবে সাক্ষাতে যেন আনন্দ নয়, ঝরছে চোখের পানি। ১১ দিন পর দিনমজুরের কাজ করা ভাইকে কোর্ট প্রান্তরে দেখে তাই ছোট্ট নাদিয়াও আবেগ আপ্লুত। ধরে রাখতে পারল না চোখের পানি।
কোর্টের আনাচে-কানাচে ঘুরছে এমন অনেক গল্পই। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও নিয়ে আসা হয়েছে সন্তানকে। জামিন করাতে না পারায় এখন কান্নাই অভিভাবকদের শেষ সম্বল।
তবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে গ্রেপ্তার হওয়া চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। রাজধানীর মিরপুর থেকে কমার্স কলেজের ফরহাদ, সামিরসহ আটক করা হয় এইচএসসি তিন পরীক্ষার্থীকে। তবে গ্রেপ্তারের রাতে একজনকে ছেড়ে দিলেও ফরহাদের অভিভাবকদের ঘুরতে হচ্ছে কারাগারে থেকে শুরু করে আদালতের বারান্দায় বারান্দায়।
এসব পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি না হলেও ডিএমপি বলছে, বাণিজ্য নয়- সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই করা হচ্ছে গ্রেপ্তার। তবে এমন গণগ্রেপ্তারের সমালোচনা করছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার তালুকদার বলেন, ‘এই ধরনের কোনো সংবাদ যদি পুলিশ কমিশনারের কানে আসে তাহলে শুধু প্রত্যাহার নয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বেলার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থী আদালতের বারান্দায় ঘুরে বেড়াচ্ছে জামিন পাওয়ার জন্য। তার অপরাধ কী? খুন, সন্ত্রাসী বা ডাকাতি করেছে। কিছুই করেনি। তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেমেছে। এ জন্য তাকে আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরতে হবে কেন?’
মন্তব্য করুন