• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo
ক্ষুদ্র আগাছা থেকে জাতিসংঘের প্রতীক হয়ে উঠল যে ফুল!
কাক যখন কথা বলে অবিকল মানুষের কণ্ঠে!
পৃথিবীতে কত পাখি আছে যারা কথা বলতে পারে। কিন্তু আপনি কি কখনো কথা বলা কাক দেখেছেন? কাক বলতে সাধারণত মনে হয় শুধু কা কা ডেকে বিরক্ত করার পাখি। কিন্তু সেই কা কা বলা প্রাণীটা যদি হঠাৎ আপনার নাম ধরে ডাকে, আর সেটা যদি হয় কোনো মানুষের কণ্ঠে! তাহলে চমকে উঠবেন নিশ্চয়ই।  কিন্তু রাশিয়ার রাজধানি মস্কোর কাছে একটি প্রাণী স্টুডিওর ১৪ বছরের কাক কারলুশা পুরো ব্যাপারটাই অন্যরকম করে তুলেছে। সে শুধু ডাকেই না, কথা বলে, মজা করে, আর এমনভাবে মানুষের কথা নকল করে, যে সবাই তাক লেগে যায়! চিড়িয়াখানার এক কর্মচারীকেতো কারলুশা এমনভাবে চমকে দিয়েছিল যে তিনি প্রথমে বুঝতেই পারেননি, এটা কাক না কি তার বস! কারলুশা যখন প্রথমবার নাম ধরে ডাকতে শুরু করল, তখন সেই কর্মচারী নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।  স্টুডিওর প্রধান আনা পোনোমারেভা জানান, আমরা ওকে শেখাইনি, সে নিজেই বেছে নিয়েছে স্টুডিওর প্রধানের কণ্ঠ। আর প্রথম শব্দ ছিল পাশা! কারলুশার কথা বলার দক্ষতা এতই নিখুঁত যে সে কণ্ঠস্বরের ব্যক্তিত্ব ও সুর অনুকরণ করতে পারে। আনা নিজেও প্রায়ই বিভ্রান্ত হন, যখন কারলুশা তার নাম ধরে ডাকে। শুধু তাই নয়, কারলুশা প্রায়ই টিভি সিরিজ আর বিজ্ঞাপনে অংশ নেয়। শ্যুটিংয়ের সময় অনেক মজার ঘটনা ঘটে। যেমন, কারলুশা কেবল কথা বলে না, সঠিক সময়ে হাসতেও জানে। কোনো শুটিংয়ে থাকলে সে অভিনেতাদের কৌতুকে হাসে, আর সেটা এতটাই স্বাভাবিক যে শুটিং সেটের সবাই মুগ্ধ হয়ে যায়। রাশিয়ার অভিনেতা ইউরি স্টয়ানোভের কৌতুকের প্রতিক্রিয়ায় কারলুশার সেই হাসি পুরো শুটিং সেটকেই মাতিয়ে তোলে। কিন্তু কারলুশা মোটেও সহজ স্বভাবের পাখি নয়। আনা জানালেন, সে খুবই জেদি। অন্য কেউ কাছে আসতে চাইলে ঠোকর দেয়, শুধু আমিই ওকে আদর করতে পারি। খাবার খেতেও তার আলাদা মজা! সে খাবারকে শুধু পেট ভরানোর জন্য নয়, বিনোদনের অংশ হিসেবেই নেয়। সে খাবার লুকায়, আবার বের করে। একেবারে মানুষের ন্যায় স্বভাব।  কারলুশার এই অনন্য প্রতিভা আর দুষ্টুমি মিলে তাকে করেছে চিড়িয়াখানার অন্যতম আকর্ষণ। দর্শনার্থীরা আসে শুধু কারলুশার কথা শোনার জন্য। সে তো আর সাধারণ কাক নয় সে যে এক প্রকৃত স্টার। কারলুশা ছাড়া কভচেগ অ্যানিমাল স্টুডিওর আরও অনেক প্রাণী বিভিন্ন টিভি বিজ্ঞাপন, মিউজিক ভিডিও, আর অনুষ্ঠানেও অংশ নেয়. আরটিভি/এফআই
চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী থেকে হাজার কোটির মালিক আ.লীগ নেতা দিলীপ
ফুটপাতে উধাও মুজিব কোট
সাদা নয়, গোলাপি লবণ সংগ্রহে যত অদ্ভুত রহস্য!
প্যারিসের রোমান্টিকতা আজও কেন এত জলজ্যান্ত  
স্বাদ ও মধুরতায় শীতের কুয়াশায় তৈরি পানীয়
কুয়াশা! সবাই জানি এটি কেবল শীতের সকালে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এনে দেয়। কিন্তু কুয়াশা এখন হয়ে উঠেছে এক অমৃতের মূল উপাদান।  চিলির এক উদ্যোক্তা এই কুয়াশা থেকে তৈরি করেছেন এক ধরনের নতুন বিয়ার। এই অভিনব উদ্যোগ তাকে এনে দিয়েছে প্রশংসা আর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ভাবছেন, কীভাবে সম্ভব? চলুন, শুনে নেওয়া যাক। পেনা ব্লাঙ্কা পর্বতের পরিচিতি ‘কুয়াশার মরুদ্যান’ হিসেবে, যেখানে বছরের অধিকাংশ সময়েই এই কুয়াশা দেখা যায়। কারকুরো জানান, এই জায়গায় বিশেষ আবহাওয়ার কারণে কুয়াশা অনেকটাই ঘন হয়ে থাকে, আর সেখান থেকেই এসেছে তার এই ধারণা। তিনি একটি তিন মিটার উচ্চতার বিশেষ জাল স্থাপন করেছেন পর্বতে, যা কুয়াশার ফোঁটাগুলোকে ধরে ফেলে। এরপর সেই তরল কুয়াশা সংগ্রহ করে নিয়ে আসা হয় তার ব্রুওয়ারিতে, যেখানে এটি বিয়ারে পরিণত হয়। এই বিয়ার একবার দেখলেই চোখ আটকে যাবে এর গাঢ় রঙে। কিন্তু, শুধু রং নয়, এর স্বাদেও আছে চমক। কারকুরো জানালেন, আমরা চাই, এই বিয়ারটিকে এমনভাবে তৈরি করতে, যেন এর স্বাদে পেনা ব্লাঙ্কার মাটি, পরিবেশ, আর মানুষের সংস্কৃতি ধরা পড়ে, ঠিক যেমনটা ওয়াইনের টেরোয়ার থাকে। তার মতে, এই কুয়াশার পানি একেবারে নরম, যেন প্রায় পাতন করা পানির মতো, কিন্তু এর ভেতরে থাকে কিছু বিশেষ খনিজ, যা এই বিয়ারকে অন্য যে কোন সাধারণ পানীয় থেকে আলাদা করে। চিলির এই অভিনব উদ্যোগ বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। এই বিয়ার শুধুমাত্র এক নতুন পানীয় নয়, বরং প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে তৈরি হওয়া এক গল্প। যেভাবে এই বিয়ার তৈরি হচ্ছে, তা যেমন পরিবেশবান্ধব, তেমনি পানীয়প্রেমীদের জন্যও একটা নতুন অভিজ্ঞতা। কারকুরোর এই উদ্যোগ প্রমাণ করে, কল্পনার ডানায় ভর করে মানুষ প্রকৃতি থেকে কত কিছু শিখতে পারে, আর সেই জ্ঞান থেকেই সৃষ্টি হতে পারে নতুন কিছু। আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে কারকুরোর এই উদ্ভাবন। কুয়াশার এই বিয়ার নিয়ে তিনি বলছেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল কুয়াশার স্বাদকে বোতলে ভরতে, যাতে প্রতিটি সিপে কুয়াশার স্পর্শ পাওয়া যায়। এই অভিনব উদ্যোগ কেবল চিলির জন্য নয়, সারা বিশ্বের খাদ্য ও পানীয় প্রেমীদের কাছেও কৌতূহলের বিষয় হয়ে উঠেছে। প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে তৈরি এই বিয়ার একদিকে যেমন নতুন স্বাদের সন্ধান দেয়, তেমনি পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আরটিভি/এফআই
রহস্যময় এক হ্রদ, যেখানে প্রাণীরা নামলে হয় পাথর! 
এটি এমন একটি হ্রদ যে পানিতে নামলেই মারা যায় পাখিসহ অন্যান্য প্রাণী। শুধু তাই নয়, পানিতে থাকা লবণের কারণে মৃত প্রাণীরা জমে যায় পাথরের মূর্তির মতো। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও অন্য সব হ্রদের মতো সুন্দর নয় এই  হ্রদ। এটি মূলত এর অদ্ভুত রূপ ও ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের জন্য পরিচিত। বিস্ময়কর ভূতাত্ত্বিক স্থানটি পূর্ব আফ্রিকার তানজানিয়ায় অবস্থিত একটি লবণাক্ত হ্রদ। যার নাম লেক ন্যাট্রন। তবে রহস্যময় ও ভয়ংকর রক্তিম লাল রঙের চেহারার কারণে হ্রদটিকে ‘ডেডলি রেড লেক ও বলা হয়। কিন্তু আসলেই কি হ্রদটি প্রাণীদের পাথরে পরিণত করে? আজকের প্রতিবেদন জানাবো সেই গল্প।  রূপকথার কাহিনীর মতো মনে হলো এটি বাস্তব। লেক ন্যাট্রন হ্রদ তার অদ্ভুত ও ভয়ংকর সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। হ্রদের পানির রংও রক্তিম লাল, যা প্রথম দেখাতে এক ধরনের গা ছমছমে অনুভূতি দেয়। এমন রং হওয়ার কারণ, হ্রদের পাশে থাকা ‘ওল ডোইনিও লেংগাই’ নামের আগ্নেয়গিরি। এটিই একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, যা ন্যাট্রোকার্বোনাটাইট নামে খুব বিরল একটি কার্বোনাইট লাভা নির্গত করে। সোডিয়াম কার্বোনাইট, সঙ্গে অন্যান্য উচ্চ ঘনত্বের সব খনিজ পদার্থ পাহাড় বেয়ে হ্রদে প্রবেশ করে হ্রদকে রক্তিম লাল রঙে রূপ দেয়।  আর এই পদার্থগুলো পানির পিএইচ স্তরকে এতটাই বেশি ক্ষারীয় করে তোলে যে হ্রদের পানিতে কোনো প্রাণী টিকতে পারে না। বিজ্ঞানীরা জানান, লেক ন্যাট্রনের পানির পিএইচ স্তর ১০.৫, যা জীবিত প্রাণীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ফলে এই হ্রদে নামলে পাখি বা কোনো প্রাণী দ্রুত মারা যায় এবং পানিতে থাকা উচ্চ লবণের কারণে পাথর বা মমির মতো জমে যায়। বছরের বেশির ভাগ সময় হ্রদের পানির তাপমাত্রা থাকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। ফলে পানি দ্রুত বাষ্পীভূত হয়  আর তলদেশে পড়ে থাকে তরল লাভা।  এছাড়া প্রাচীন মিসরীয় মমিকরণ পদ্ধতিতে সোডিয়াম কার্বনেট ব্যবহার করা হয়েছিল। এই সোডিয়াম কার্বনেট, যা মূলত 'ন্যাট্রন' নামে পরিচিত। প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া এটি মিসরীয়রা মৃতদেহ সংরক্ষণে ব্যবহার করত। ন্যাট্রন মূলত মৃতদেহের পানি শোষণ করে তার পচন রোধ করে।  বিশ্বাস করা হয়, লেক ন্যাট্রনের পানিতে প্রাণ হারানো যেসব প্রাণী পাথর বা মমিতে রূপ নিয়েছে তারাও একই পদ্ধতির শিকার । তবে এ বিষয়ের কোনো শক্ত প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। তবে এখানেই শেষ নয়, এই ভয়ংকর হ্রদের আরও একটি অদ্ভুত দিক আছে। এটি পূর্ব আফ্রিকার লেসার ফ্লেমিঙ্গোদের জন্য প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করে। প্রায় ২৫ লাখ ফ্লেমিঙ্গো এখানে বংশবৃদ্ধি করে, কারণ হ্রদে প্রচুর নীলাভ-সবুজ শৈবাল পাওয়া যায়, যা তাদের প্রধান খাদ্য। এই ফ্লেমিঙ্গোরা হ্রদের কঠিন পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়। তারা হ্রদের পানিতে বেঁচে থাকতে পারে। ফলে এই হ্রদে ফ্লেমিঙ্গোরা পাথরে পরিণত হয় না। আরটিভি/এফআই/এআর
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন / রেমিট্যান্স বৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক খাতে বড় পরিবর্তন
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয় সাড়ে ১৫ বছর দেশ পরিচালনা করা আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ৮ আগস্ট ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। ১৬ নভেম্বর এই সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হয়েছে।  বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, ব্যাংকিং খাতে সুশাসনসহ অর্থনৈতিক খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। উল্লেখযোগ্য সফলতা হলো, নতুন বাংলাদেশ গড়তে ১০টি সংস্কার কমিশন গঠন, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, সরকার বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে সংস্কার, দুর্বল ব্যাংককে সহায়তা, বিদেশি ঋণ পরিশোধ, নতুন টাকা না ছাপানো, অযাচিত প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ স্থগিত, ব্যাংক, পুঁজিবাজারে সংস্কার কমিশন, অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র কমিটি গঠন, বিচার ব্যবস্থা, সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, সুশাসন আনার ক্ষেত্রে যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে বিশেষ করে ব্যাংকের ভেতরে যে কর্পোরেট গভর্নেন্স, এ বিষয়ে ইতিবাচক একটি পদক্ষেপ এসেছে।  তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন শুল্ক কমানো এবং কর ছাড় দেওয়ার বিষয়টিও ইতিবাচক। এ ছাড়া বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রেও এক ধরনের প্রাথমিক স্থিতিশীলতা এসেছে। এদিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, বাহিনীগুলোর সংস্কার, মূল্যস্ফীতি, দুর্নীতি দূর করা ও রাজনৈতিক দলের সংস্কারের ক্ষেত্রে এখনও গুণগত পরিবর্তন সম্ভব হয়নি।  বিশ্লেষকরা বলছেন, সাফল্যের পাশাপাশি অনেকগুলো সমস্যাও রয়েছে। কর ছাড় দিয়েও নিত্যপণ্যের দাম কমানো যাচ্ছে না। পুলিশ ও আনসার বাহিনীতে শৃঙ্খলা ফেরেনি, জনপ্রশাসনে শুদ্ধি অভিযান শেষ হয়নি, রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। এসবে বিশেষ নজর দিতে হবে।  এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশরাফ কায়সার বলেন, দ্রব্যমূল্য হলো প্রথম চ্যালেঞ্জ। কারণ, মানুষ বাজারে গিয়ে সঠিক দামে পণ্য কিনতে না পারলে তারমধ্যে হতাশা তৈরি হবে এবং একসময় সে বিক্ষুব্ধ হয়ে যাবে।  তিনি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম সরকার অনেক তীব্র গতির হবে, তৎপরতা দেখাবে—কিন্তু সেভাবে দেখিনি। প্রশাসনকে ঢেলে না সাজানোর কারণে পদেপদে তার খেসারত দিতে হচ্ছে। রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশের সব সেক্টরে আমূল পরিবর্তন সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারের সামনে এখন চ্যালেঞ্জ দ্রুত সংস্কার শেষে নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা। আরটিভি/আরএ/এআর
পানির ওপর ৩৬০ ডিগ্রিতে ঘুরছে মেকানিকের স্বপ্নের ঘর
ঘরে জানালার পাশে বসে আছেন। মৃদু বাতাসে উড়ছে আপনার চুল, মনের আনন্দে কফির কাপে দিচ্ছেন চুমুক। আর পাহাড়ের অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করছেন, কিন্তু আবার ফিরে তাকাতেই দেখলেন সমুদ্র। ভেবে ভেবে ক্লান্ত, কিন্তু উত্তর খুজে পাচ্ছেন না। কীভাবে সম্ভব! এটা কি কোন ম্যাজিক?  শুনতে রূপকথার মতো লাগলেও, ভিয়েতনামের বাক জিয়াং প্রদেশের মেকানিক গুয়েন ভ্যান লুয়ং এই ম্যাজিককে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। ৫৭ বছর বয়সী এই মানুষটি শুধুমাত্র একটি ঘর নয়, বরং তার জীবনের একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করেছেন। তার ঘরটি সারাক্ষণ ঘোরে  তাও আবার ৩৬০ ডিগ্রি। আর জানলে আরও অবাক হবেন জলাধারের ওপর স্থাপিত এই বিশেষ বাড়ি এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।  এই অদ্ভুত এবং অভিনব ঘরের পেছনের গল্পটা আরও চমকপ্রদ। প্রায় চার বছর ধরে নিখুঁত পরিকল্পনা আর কঠোর পরিশ্রমের পর, ২০১৬ সালে তিনি এই বাড়ির কাজ শেষ করেন। ১০০ বর্গমিটারের এই বাড়িটি ১৪ মিটার ব্যাসের জলাধারের ওপর তৈরি একটি বিশেষ কংক্রিটের ভিত্তির ওপরে ভাসে। বাড়িটি মাত্র ১০ মিনিটে পুরোপুরি একবার ঘুরে যেতে সক্ষম, এবং এটি চালাতে খরচ হয় মাত্র ০.৭ অ্যাম্পার বিদ্যুৎ, যা প্রায় দুইটি ১০০ ওয়াটের ফ্যানের সমান। কিন্তু কেন এই বিশেষ বাড়ি? লুয়ং নিজের মতো করে এক স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেছেন , আমি এখন প্রায় ৬০-এ পা দিচ্ছি, আর চাইছি এমন কিছু রেখে যেতে, যা আমাকে মনে করিয়ে দেবে, আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে। এই ঘরটি তার জীবনের সেই বড় স্বপ্ন, যা শুধু ঘোরে না, জলাধারের ওপরে ভাসতে থাকে, একদম একটি নৌকার মতো। তবে বাড়িটি তৈরি সহজ ছিল না। লুয়ং নিজে বলেছিলেন, ঘরটি তৈরির সময় তাকে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়েছিল। হালকা হলেও শক্তিশালী কাঠামো তৈরি করার জন্য তিনি বিশেষ কংক্রিট ব্যবহার করেছিলেন। তার এই উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার জন্য ২০২২ সালে ভিয়েতনাম ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অফিস তাকে পেটেন্ট প্রদান করে।  লুয়ং-এর এই ঘর শুধু প্রযুক্তিগত কীর্তি নয়, এটি মানুষের অদম্য ইচ্ছাশক্তি এবং স্বপ্নের এক প্রতীক। এটি ঘোরে, ভাসে, এবং স্মৃতিতে থেকে যায় একটি মানুষের জীবনযাপনের সবচেয়ে সুন্দর উদাহরণ। আরটিভি/এফআই
পুরোনো যন্ত্র থেকে মিলছে কেজি কেজি স্বর্ণ
ফেলে দেওয়া পুরোনো রিমোট টেলিভিশন, ল্যাপটপ কিংবা মোবাইল ফোনের ভেতর লুকিয়ে আছে স্বর্ণ। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন! পুরোনো এসব ইলেকট্রিক যন্ত্র থেকে এই শ্রমিকরা সংগ্রহ করছেন ২৪ ক্যারেটের সোনা, আর তা বিক্রি করেই চলছে তাদের সংসার। কেউ কেউ মাসে পুরোনো এসব যন্ত্র থেকেই সংগ্রহ করেন একশ থেকে দেড়শ গ্রাম স্বর্ণ। তারপর তা নিয়ে যান স্বর্ণ গলানোর কারখানায়। তারা পরীক্ষা শেষে তা দিয়ে বানান নানান ডিজাইনের গয়না।  আফগানিস্তানের সীমান্ত শহর স্পিন বলডাকের শ্রমিকরা প্রতিদিন এমনই এক স্বপ্ন নিয়ে শুরু করেন তাদের কাজ—পুরোনো ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ভেঙে খুঁজে বের করেন স্বর্ণের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা। এই স্বর্ণেই তাদের জীবনযাত্রার একমাত্র ভরসা। তবে এই পেশার পিছনে রয়েছে এক অবর্ণনীয় সংগ্রাম আর জীবনের ঝুঁকি। কিন্তু সমস্যা হলো, আধুনিক যন্ত্রগুলোতে এখন আর আগের মতো স্বর্ণ ব্যবহার হয় না। বরং সস্তা ধাতু দিয়ে তৈরি হয়। তবুও, এই শ্রমিকরা বিশ্বাস করেন হয়তো আজকের দিনেই তাদের ভাগ্য খুলে যাবে! শুধু লাভের আশাই নয়, এই কাজ করতে গিয়ে শ্রমিকরা তাদের জীবনকে প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মুখে ফেলছেন। বিষাক্ত ধাতু, ধুলোবালি আর রাসায়নিক পদার্থের ভেতরেই তারা কাজ করেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। স্বাস্থ্যবিধি মানার সুযোগ নেই, নিরাপত্তার কোন বালাই নেই। তবুও, তারা থেমে নেই, কারণ পেটের ক্ষুধা তাদের সামনে আরও বড় বাস্তবতা।  বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আধুনিক ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি থেকে স্বর্ণ পাওয়ার সম্ভাবনা দিনে দিনে কমছে। যন্ত্র থেকে সংগৃহীত স্বর্ণ যায় বাজারে, সেখানে কারিগররা এ দিনে কেউ গলান ১ থেকে ২ কেজি স্বর্ণ। সস্তা ধাতুর ব্যবহার বেড়েছে, ফলে এই পেশার ভবিষ্যৎ ক্রমশ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। কমে কারিগরদের স্বর্ণ গলানোর কাজও।  কারিগররা বলেন, জাপানি ইলেকট্রনিক বিভিন্ন পণ্যে স্বর্ণ থাকে, কিন্তু চীনা ইলেকট্রনিক পণ্যে তেমন স্বর্ণ থাকে না। তাই এই গ্রাম থেকে আসা স্বর্ণের পরিমাণও কমছে। সম্ভবত প্রতি সপ্তাহে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ গ্রাম স্বর্ণ বাজারে আসে। তবুও আফগান শ্রমিকরা ভেঙে পড়ছেন না। তারা জানেন, অল্প কিছুই পাওয়া গেলেও একদিন তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরবেই। আর এমন আশা নিয়েই প্রতিদিনই বসে যান পুরোনো যন্ত্র নিয়ে।  আরটিভি/এফআই/এসএ
১০ হাজার ফুট ওপর থেকেও যেভাবে শিকার দেখতে পায় ঈগল
আকাশের রাজা ও শিকারের শক্তিমান যোদ্ধা ঈগল। এই পাখির উড়ার গতি, শক্তিশালী নখ আর শিকারের অসাধারণ কৌশল যে কোনো প্রকৃতিপ্রেমীকে মুগ্ধ করে। কিংবদন্তি গল্প আর বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ভরপুর ঈগল। বলা হয় এটি  শুধু একটি শিকারি পাখিই নয়, বরং এটি শক্তি ও সাহসের প্রতীক। তাইতো এই পাখিকে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, রাশিয়া ও আলবেনিয়া শক্তি ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করেছে। এছাড়া মেক্সিকো, পোল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ায়ও ঈগল জাতীয় ঐতিহ্য ও গৌরবের প্রতীক। আজ জানাবো সেই ঈগলের রহস্যময় জীবন ও তার শিকারের অসাধারণ গল্প। অবিশ্বাস্য দৃষ্টিশক্তি: প্রথমেই বলি ঈগলের দৃষ্টিশক্তি। যা আল্লাহর সৃষ্টির এক বিস্ময়কর ক্ষমতা। গবেষণা বলছে মানুষের তুলনায় ঈগলের চোখ ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি শক্তিশালী, যার ফলে তারা অনেক দূর থেকে শিকারকে দেখতে সক্ষম। গবেষণায় বলা হয়, কিছু প্রজাতির ঈগল প্রায় ২ মাইল তথা ১০ হাজার ৫০০ ফুট উপরে থেকেও ছোট শিকারকে দেখতে পারে। তাদের চোখের বিশেষ কোষ আলোর প্রতি সংবেদনশীল এবং রঙের প্রতি অত্যন্ত সতর্ক। এই দৃষ্টিশক্তি ঈগলকে শিকারের জন্য আরো দক্ষ করে তোলে, যেকোনো পরিস্থিতিতে তারা শিকার ধরতে পারে। দেহের গঠন এবং ওজন: পূর্ণবয়স্ক ঈগলের দৈর্ঘ্য সাধারণত ৩০ থেকে ৩৫ ইঞ্চি হয়, এবং এর ওজন ৩ থেকে ৭ কেজির মধ্যে থাকে। হার্পি ঈগলের মতো কিছু প্রজাতি প্রায় ৯ কেজি পর্যন্ত ওজন ধারণ করতে পারে। তবে তাদের হালকা পালক এবং শক্তিশালী ডানা ঈগলকে সহজেই আকাশে উড়তে এবং দ্রুতগতিতে শিকার ধরতে সাহায্য করে। তাদের শারীরিক গঠন শিকার ধরার ক্ষেত্রে অদ্বিতীয় করে তুলেছে।  শক্তিশালী নখ এবং গতি: ঈগল আকাশ থেকে প্রায় ১২০-১৫০ মাইল প্রতি ঘণ্টা গতিতে শিকার ধরতে ডাইভ দেয়। তাদের পায়ের নখর এতটাই শক্তিশালী যে এর সাহায্যে শিকারকে মুহূর্তেই ছিন্নভিন্ন করা যায়। একটি প্রাপ্তবয়স্ক ঈগলের নখ প্রায় ৪০০ পাউন্ড চাপ প্রয়োগ করতে পারে, যা শিকারের মাংস ছিঁড়ে ফেলতে যথেষ্ট। শিকার ধরার কৌশল: ঈগল প্রধানত জীবন্ত শিকার ধরতে পছন্দ করে। খরগোশ, মাছ, শেয়াল থেকে শুরু করে ছোট হরিণ পর্যন্ত তাদের শিকারের তালিকায় রয়েছে। মৎস্য ঈগল পানির ওপরে উড়ে গিয়ে পানির নিচে থাকা মাছ শিকার করার ক্ষেত্রে অসাধারণ দক্ষতা দেখায়। তারা পানির ওপরে উড়তে উড়তে মাটির কাছাকাছি থাকা শিকারকে মুহূর্তের মধ্যে ধরে নেয়। বিশ্বজুড়ে প্রজাতি: বিশ্বজুড়ে ঈগলের প্রায় ৬০টি প্রজাতি রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রজাতি দেখা যায় ইউরেশিয়া এবং আফ্রিকায়। উত্তর আমেরিকায় মাত্র দুটি প্রজাতি আছে—বেল্ড ঈগল এবং গোল্ডেন ঈগল। প্রতিটি প্রজাতি আলাদা আচার-আচরণ এবং শিকার ধরার কৌশলে বিশেষ পারদর্শী। ঈগলের বাসা: ঈগলের বাসা পৃথিবীর অন্যতম বড় পাখির বাসাগুলোর মধ্যে একটি। বেল্ড ঈগলের বাসা প্রস্থে প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট এবং ওজনে প্রায় এক টন হতে পারে। তারা বছরের পর বছর ধরে একই বাসা ব্যবহার করে এবং প্রতি বছর এটি বড় হতে থাকে। ঈগল প্রকৃতির এক অনন্য সৃষ্টি। তার শক্তি, বুদ্ধিমত্তা, এবং শিকারের দক্ষতা তাকে প্রকৃতির শিকারি পাখিদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় করে তুলেছে। ঈগলের জীবনের প্রতিটি অধ্যায় আমাদের শেখায় সাহস, ধৈর্য্য, এবং শিকারের জন্য সঠিক কৌশল প্রয়োগের গুরুত্ব। আরটিভি/এফআই
দোকানের মালিক গরু চন্দ্রমণি, শাড়ির ব্যবসা তুঙ্গে  
প্রতিদিন সকাল সকাল দোকানে এসে হাজির এই অতিথি! কোনো ঝামেলা ছাড়াই ঘণ্টার পর ঘণ্টা চুপচাপ বসে থাকে। আর তার কারণে দোকানে বাড়ছে ক্রেতার সংখ্যা। ভাবছেন এ আবার কেমন অতিথি? এ অতিথি কোনো মানুষ নয়, একটি গরু। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। তবে ঠিক অতিথি নয়, ক্রেতাদের মতে শাড়ির দোকানের মালিক এই গরু, যার নাম ‘চন্দ্রমণি’। চন্দ্রমণি, রায়পুরের মহালক্ষ্মী মার্কেটের একটি শাড়ির দোকানের গরু। গত সাত বছর ধরে, এই ১২ বছর বয়সী গরুটি প্রতিদিন দোকানে আসে। ঠিক দুপুর তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে। কখনও আধ ঘণ্টা, কখনও দুই ঘণ্টা। দোকানে প্রবেশ করলেই শুরু হয় চন্দ্রমণির সাদরে অভ্যর্থনা, যেন সে সেখানকার আসল মালিক। আর এভাবেই সে মন জয় করেছে স্থানীয় লোকজন ও অন্যান্য দর্শনার্থীদের। চন্দ্রমণির এই প্রতিদিনের উপস্থিতি দোকানের ব্যবসাকেও ব্যাপক বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই ঘটনাটি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। লোকজন কৌতূহলী হয়ে আসছেন, কেউ চন্দ্রমণির সঙ্গে সেলফি তুলছেন, কেউ আবার শুধু তাকে দেখতে আসছেন। মজার ব্যাপার, চন্দ্রমণির এই বিশেষ মর্যাদা দোকানের ব্যবসায়ও এনেছে বাড়তি রমরমা!  প্রতিদিন চন্দ্রমণি আসায় দোকানের কর্মচারীরা বলেন, সে আমাদের মালিক, আমরা তাকে বিরক্ত করি না বরং সম্মানের সঙ্গে তাকে গ্রহণ করি। কিন্তু কেন চন্দ্রমণি পেল এত বিশেষ মর্যাদা? দোকানের মালিক পদম ডাকিলিয়া জানান, আমাদের জন্মের পর মা কয়েক বছর দুধ পান করান, কিন্তু গরু আমাদের জীবনের প্রতিটি দিনেই দুধ দেয়। দুধ, ঘি, দই— সবই তো আসে গরুর কাছ থেকে। এমনকি, যে ফসল আমরা খাই, তা গরুর বিষ্ঠা দিয়ে পবিত্র হয়। চন্দ্রমণির সঙ্গে আমাদের এই সম্পর্ক আধ্যাত্মিক আর ব্যবসায়িক—দুয়ের মিশ্রণ। চন্দ্রমণির প্রতিদিনের এই আগমন শুধু দোকানের জন্যই নয়, পুরো বাজারের জন্য একটি বিশেষ আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। দোকানের মালিক পদম ডাকিলিয়া মনে করেন, এটি আধ্যাত্মিক বিপণনের এক অনন্য উদাহরণ। ক্রেতারাও মজা করে বলেন, চন্দ্রমণি তাদের দোকানের নতুন মালিক! তাই তারাও সাদরে গ্রহণ করেন তাকে। তবে এই ঘটনার মজার দিকের পাশাপাশি রয়েছে আরও এক বার্তা, চন্দ্রমণি যেন সবাইকে শেখাচ্ছে, কীভাবে সহজ-সরল ভালোবাসায় গড়া সম্পর্ক জীবনে আনে সুখ আর শান্তি। আরটিভি/এফআই-টি