আবারও কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। স্বয়ং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ ও বিশাল মানববন্ধন করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদককে রাস্তা থেকে তুলে বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করেছেন তিনি। নানা ঘটনায় বিতর্কিত সদর উদ্দিন খানকে নিয়ে আতঙ্কিত দলটির শত শত নেতাকর্মী বিচারের দাবিতে এ মানববন্ধনে অংশ নেন বলে জানান।
শুক্রবার (২২ মার্চ) বেলা ১১টায় খোকসা বাসস্টান্ডে এ কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এদিকে সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খোকসার শমসপুর বাজারের পাশের রাস্তা থেকে কয়েকজন মিলে থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেনকে জোর করে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে আলমগীর হোসেন জানান, জোর করে তাকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খানের শমসপুরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সদর খান তাকে বেতের লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন। সদর খানের ভাই রহিম খানের পক্ষে উপজেলা নির্বাচনে ভোট করতে অস্বীকার করলে তার বুকের ওপর পা তুলে মুখে অস্ত্র ঢুকিয়ে নির্যাতন করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলেই সদর খান, তার ভাই রহিম খান ও রহিম খানের ছেলেসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আলমগীর হোসেনের ছেলে সজিব হোসেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করেন থানা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার বেলা ১১টায় খোকসা বাসস্টান্ডে সদর উদ্দিন খান ও রহিম খানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ ও বিশাল মানববন্ধন করেছেন নেতাকর্মীরা। এর আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল আক্তারের নেতৃত্বে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মী বাসস্টান্ডে আসেন।
খোকসা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এস এম এমদাদ হোসেন বলেন, কয়েকবার দল ও দলের প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াসহ নানা কারণে বিতর্কিত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খানকে দল থেকে বহিষ্কারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা। এতে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সহযোগী সংগঠনসহ ও স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানববন্ধনে অংশ নেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল আক্তার বলেন, গেল জাতীয় নির্বাচনেও খোকসা কুমারখালী আসনে নৌকার বিপক্ষে ভোট করেছেন সদর খান। তার বিরুদ্ধে গেলেই দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালান তিনি।
এ সময় দলীয় ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন তিনি।
বাদী পক্ষের অভিযোগ, থানা থেকে সদর খানের নাম মামলায় বাদ দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ বলেন, অভিযোগের তদন্ত চলছে। কোনো আসামিকে বাদ দেওয়া বা যোগ করার ব্যাপার নেই। তদন্তে যাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধেই মামলা নেওয়া হবে। ঘটনার প্রমাণ মিলেছে। দোষীদের আইনের আওতায় আনতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ।