• ঢাকা শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১
logo
জুমার দিনের বিশেষ মর্যাদা
‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ কখন, কেন পড়বেন
‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ অর্থ ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো ভরসা নেই, কোনো ক্ষমতা বা শক্তি নেই।’ অর্থাৎ মানুষের সক্ষমতা, শক্তি ও সাহস যত বেশিই থাকুক না কেন, আল্লাহর তাআলা না চাইলে মানুষ কিছুই করতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা শক্তি ও তাওফিক না দিলে মানুষ কোনো ভালো কাজ করতে সক্ষম নয়, কোনো গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতেও সক্ষম নয়। ইসলামে বাক্যটি অনেক মূল্যবান ও ফজিলতপূর্ণ। হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (স.) একবার আমাকে বললেন, ‘তোমাকে জান্নাতের অন্যতম ধনভাণ্ডারের কথা কি বলে দেব?’ আমি বললাম, অবশ্যই বলে দিন, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেন- لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ ‘লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’। (বুখারি: ২৯৯২; মুসলিম: ২৭০৪, তিরমিজি: ৩৩৭৪; আবু দাউদ: ১৫২৬) ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ কেন পড়বেন মানুষের ব্যক্তিগত শক্তি, সামর্থ্য, ক্ষমতা ও সাহস আল্লাহ তাআলার দান এবং তা যত বেশিই হোক না কেন আল্লাহ তাওফিক না দিলে কোনো ধরনের উপকারে আসবে না—এর স্বীকারোক্তি হিসেবেই বাক্যটি পাঠ করা হয়। অর্থাৎ আল্লাহর সত্ত্বা সবকিছুর ঊর্ধ্বে, সব শক্তিধর বস্তু আল্লাহ তাআলার সামনে একেবারে তুচ্ছ ও ছোট—এটিই লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ পাঠের অন্যতম কারণ। ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ কখন পড়বেন হাদিসে বিভিন্ন সময় লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ পাঠ করার কথা পাওয়া যায়। যেমন— নিজের সক্ষমতার বাইরে কোনো পরিস্থিতি ও কাজের মুখোমুখি হলে এই ব্যাকটি পড়তে হয়। এ ছাড়াও শয়তানের প্রতারণা ও আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য এই দোয়াটি পড়া হয়।  উবাদা বিন সামেত (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি এই দোয়া পড়ে আল্লাহ তাআলার কাছে নিজের গুনাহ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করবে অথবা যেকোনো দোয়া করবে, আল্লাহ তাআলা তার দোয়া কবুল করবেন। দোয়াটি হলো- لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ الْحَمْدُ لِلَّهِ وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَلا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ وَلا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ إِلا بِاللَّهِ উচ্চারণ: ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু-লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লু শাইয়িন কাদির, আলহামদুলিল্লাহি ওয়া সুবহানাল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’ অর্থ: ‘এক আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোনো ইলাহ নেই। তিনি এক, তাঁর কোন শরিক নেই। রাজ্য তাঁরই। যাবতীয় প্রশংসা তাঁরই। তিনিই সবকিছুর উপরে শক্তিমান। যাবতীয় হামদ আল্লাহরই জন্য, আল্লাহ তাআলা পবিত্র, আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোনো ইলাহ নেই। আল্লাহ মহান, আল্লাহ ছাড়া কোনো ভরসা নেই; কোনো ক্ষমতা বা শক্তি নেই।’ (সহিহ বুখারি: ১১৫৪) আজানের দুই বাক্য হাইয়া আলাস সালাহ ও হাইয়া আলাল ফালাহের উত্তরেও এই বাক্যটি পাঠ করা হয়। আবু জর (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুল (স.) আমাকে একবার বললেন—‘আমি কি তোমাকে জান্নাতের গুপ্তধনগুলোর একটির সন্ধান দেবো না? আমি বললাম, হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল। তিনি বলেন, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ’। মুয়াজ্জিন আজানের সময় যখন ‘হাইয়া আলাস সালাহ ও হাইয়া আলাল ফালাহ’ বলে তখন ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলতে হয়। (মুসলিম: ৫৭৮, আবু দাউদ: ৪৪৩) ঘর থেকে বের হওয়ার সময়ও লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ পড়া সুন্নত এবং এর প্রতিদান অনেক। হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এই দোয়াটি পড়বে আল্লাহ তাআলা তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবেন এবং শয়তানও তার থেকে দূর হয়ে যাবে। দোয়াটি হলো— بِسْمِ اللَّهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ উচ্চারণ: ‘বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলালাহ, লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’ অর্থ: আল্লাহর নামে, আল্লাহ তাআলার ওপরই নির্ভর করলাম, আল্লাহ তাআলার সাহায্য ছাড়া বিরত থাকা ও মঙ্গল লাভ করার শক্তি কারো নেই। (আবু দাউদ: ৪৪৩১; তিরমিজি: ৩৪২৬) উল্লেখিত সময়গুলো ছাড়াও তথা যেকোনো সময় লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বাক্যটির জিকির করা যায়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, পৃথিবীর বুকে যে ব্যক্তি বলে, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ তার অপরাধগুলো ক্ষমা করে দেওয়া হয়, যদিও তা সাগরের ফেনারাশির মতো (বেশি পরিমাণ) হয়। (জামে তিরমিজি: ৩৪৬০) হাজিম ইবনে হারমালা (রা.) বলেন, আমি নবী (স.)-এর কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনি আমাকে বলেন, ‘হে হাজিম! তুমি অধিক সংখ্যায় لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللهِ ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বাক্যটি পড়ো। কেননা তা হলো জান্নাতের গুপ্তধন। (বুখারি: ৪২০৪, ৬৩৮৪, ৬৪০৯, ৭৩৮৬, মুসলিম: ৫৮৯) আরটিভি/একে
রজব মাসের ফজিলত ও দোয়া
উত্তাল সমুদ্রের চারপাশে মানুষের ঢল, এ যেন আরেক জাহেলিয়াত!
দোয়া বেশি কবুল হয় যে সময়ে
জুমার দিনে যে সময় দোয়া কবুল হয়
তীব্র শীতে অজু করার ফজিলত
পবিত্রতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো অজু। এটি ছাড়া নামাজ হয় না। সবসময় অজু অবস্থায় থাকা সওয়াবের কাজ। অজুর অনেক ফজিলত রয়েছে। বিশেষ করে তীব্র শীতে অজু করার ফজিলত অনেক বেশি। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালবাসেন। (সুরা বাকারা: ২২২) আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, যখন কোন মুসলমান বান্দা অজু করে এবং তার চেহারা ধুয়ে নেয়, তখন তার চেহারা থেকে পানির সঙ্গে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে তার চোখ দিয়ে কৃত সব গুনাহ বের হয়ে যায় যা সে চোখ দিয়ে দেখেছে।  যখন সে তার দুই হাত ধৌত করে, তখন তার দুই হাত দিয়ে করা গুনাহ পানির সঙ্গে বা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে বের হয়ে যায় যা তার দুই হাত দিয়ে ধরার কারণে সংঘটিত হয়েছে। সে যখন তার দুই পা ধৌত করে, তার পা দিয়ে কৃত গুনাহ পানির সঙ্গে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে বের হয়ে যায় যে পাপের জন্যে তার দুই পা হেঁটেছে। এভাবে সে সব গুনাহ থেকে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়। (সহিহ মুসলিম: ২৪৪) তীব্র শীতে বা কষ্টকর অবস্থায় ভালোভাবে অজু করার ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে আরেকটি হাদিসে। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) একদিন সমবেত সাহাবিদের উদ্দেশে বললেন, আমি কি তোমাদের এমন আমলের কথা বলব যে আমল করলে আল্লাহ গোনাহসমূহ মাফ করে দেবেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন? সাহারা বললেন, ‘অবশ্যই, হে আল্লাহর রাসুল!’ তখন আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, কষ্টকর অবস্থায় পরিপূর্ণরূপে অজু করা, দূরত্ব অতিক্রম করে মসজিদে যাওয়া, এক ওয়াক্তের নামাজ আদায় করে পরবর্তী ওয়াক্তের নামাজের জন্য অপেক্ষা করা। (সহিহ মুসলিম: ৪৯৪) এমনকি শীতের সময় নামাজ পড়ার ব্যাপারেও রয়েছে সুখবর। হজরত আবু বকর ইবনে আবু মুসা (রা.) তার বাবার সূত্রে বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি দুই শীতের নামাজ (ফজর ও এশা) আদায় করবে; সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (বুখারি ৫৭৪) আরটিভি/এফএ
সরকারি অর্থে কোনো অতিথিকে হজে নেওয়া হবে না: ধর্ম উপদেষ্টা
সরকারি অর্থে কোনো অতিথিকে হজে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) হজ ব্যবস্থাপনার সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।  ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এজেন্সিগুলাের সহায়তায় হজ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। হজ কার্যক্রম কারও প্রভাবিত করার সুযোগ নাই। তিনি বলেন, সরাসরি হজ কার্যক্রমে অংশ নিতে এজেন্সির সর্বনিম্ন হজযাত্রী নির্ধারণের ক্ষেত্রে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। হজ এজেন্সি প্রতি ন্যূনতম হজযাত্রী নির্ধারণ করে থাকে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।   খালিদ হোসেন বলেন, এজেন্সি প্রতি সর্বনিম্ন হজযাত্রীর কোটা কমানোর বিষয়ে আমি ও আমার মন্ত্রণালয় চেষ্টা করেছি।  হজ দ্বি-রাষ্ট্রিক কার্যক্রম, এ কথা ভুলে গেলে চলবে না। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোও আমাদের মনে রাখতে হবে।  তিনি বলেন, আল্লাহর মেহমান হজযাত্রীরা যেন কোনো সংকট কিংবা অনিশ্চয়তার মুখোমুখি না পড়েন সেটি অবশ্যই আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। এ সময় হজ এজেন্সি মালিক বা পরিচালকদের দু-এক দিনের মধ্যেই সৌদি সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক লিড এজেন্সি গঠনসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার অনুরোধ জানান ধর্ম উপদেষ্টা। আরটিভি/আরএ/এস
প্রথমবার ঢাকায় আসছেন কাবার সাবেক ইমাম ড. বুখারি
পবিত্র কাবা শরিফের সাবেক ইমাম ও সিনিয়র মুহাদ্দিস, মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা বোর্ডের ফকিহ ড. শায়েখ হাসান বিন আবদুল হামিদ বুখারি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন। ফেনী রঘুনাথপুর দারুল উলুম মুহিউস সুন্নাহ মাদরাসার মুহতামিম ও যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বেলাল একাডেমি মসজিদের খতিব মাওলানা সালাহউদ্দিন জাহাঙ্গীর গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সফরের প্রথম দিন ১৭ জানুয়ারি ফেনীর রঘুনাথপুর দারুল উলুম মুহিউস সুন্নাহ মাদরাসার দশম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে জুমার নামাজের ইমামতি করবেন। জুমার নামাজের পর তিনি হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় ফিরে আসবেন। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে জাতীয় মসজিদে মাগরিবের নামাজের ইমামতি করবেন। জানা গেছে, আন্তর্জাতিক কিরাত সংস্থা বাংলাদেশের আমন্ত্রণে এবং মহাসচিব শায়েখ সাদ সাইফুল্লাহ মাদানির আহ্বানে ৩ দিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন ড. শায়েখ হাসান বিন আবদুল হামিদ বুখারি। আগামী ১৭ জানুয়ারি (শুক্রবার) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পূর্ব চত্বরে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশ, সৌদি আরব, মিশর, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইংল্যান্ড, ভারত ও পাকিস্তানের প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার, বিশ্ববরেণ্য কারিরা অংশ নেবেন। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে সরকারের উপদেষ্টা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকবৃন্দ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। উল্লেখ্য, ড. শায়েখ হাসান বিন আবদুল হামিদ বুখারি একজন প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার। তিনি কাবা শরিফের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ও সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ড. শায়েখ হাসান। হাদিস ও ইসলামিক ফিকহের উপর গভীর জ্ঞান রাখেন তিনি।আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার বক্তৃতা ও লেখালেখির জন্য সুপরিচিত তিনি। ড. শায়েখ হাসান কর্মজীবনের শুরুতে ২০০০ সাল থেকে ২০০৩ পর্যন্ত মসজিদ আল হারামাইন শরিফের অভ্যন্তরীণ একাডেমি শিক্ষক ছিলেন। ২০০৪ সাল পর্যন্ত উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট এর প্রভাষক ছিলেন তিনি। পরে ২০০৮ সাল, ২০১৫ সালে দুই বার বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। মক্কা নগরী তাহফিজুল কোরআনের শিক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করছেন ড. শায়েখ হাসান। হারামাইন পরিচালনা পরিষদে খণ্ডকালীন পরামর্শয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন তিনি। উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অনুষদের সদস্য ড. হাসান বুখারিকে ২০১৫ সালে পবিত্র মক্কা হারামাইন শরিফের অতিথি ইমাম হিসেবে নামাজ পড়ানো সুযোগ করে দেন বর্তমান বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ। আরটিভি/এফএ/এআর
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঘোষণা
বিশ্ব ইজতেমা আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পূর্ব নির্ধারিত সময়েই হবে বলে জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। শনিবার (৪ জানুয়ারি) কাকরাইল মারকাজ মসজিদে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ৩১ জানুয়ারিতেই প্রথম পর্বের ইজতেমা হচ্ছে। এ বিষয়ে কার্যক্রম চলমান আছে। কোনো সমস্যা নেই। তবে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা সাদপন্থীরা করতে পারবে কি না তা প্রশাসনই ঠিক করবে। এর আগে, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের হত্যাকাণ্ডসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের দায়ে সাদপন্থীদেরকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া আগামী ১০ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ও ২৫ জানুয়ারি দেশের সব পর্যায়ের প্রতিনিধিত্বশীল আলেমদের নিয়ে ওলামা সম্মেলন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আরটিভি/এফএ/এআর
ইসলাম যে ১৪ নারীকে বিয়ে করতে নিষেধ করেছে
নারী ও পুরুষের পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ একটি স্বাভাবিক মানবিক প্রবৃত্তি। এই আকর্ষণকে বৈধভাবে রূপ দেওয়ার একমাত্র হালাল পথ হলো বিয়ে। মহান আল্লাহ মুসলমানদের জন্য বিয়েকে বৈধ করেছেন, যাতে তারা গুনাহ থেকে দূরে থেকে শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারে। সেই সঙ্গে জেনাকে করেছেন হারাম।  বিয়ে নিয়ে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন, নিশ্চয় আপনার পূর্বে অনেক রসুলকে প্রেরণ করেছি। আমি তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করেছি। (সুরা রাদ ৩৮) ইসলামে যে ১৪ নারীকে বিয়ে করা হারাম পবিত্র কুরআনের সুরা নিসার ২৩ থেকে ২৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ১৪ জন নারীকে একজন পুরুষের জন্য বিয়ে করা হারাম ঘোষণা করেছেন। এই ১৪ জন নারী হলেন, ১. নিজের মা, ২. দাদি, নানি ও তাদের ওপরের সবাই, ৩. নিজের মেয়ে, ছেলের মেয়ে, মেয়ের মেয়ে ও তাদের গর্ভজাত কন্যাসন্তান, ৪. সহোদর, বৈমাত্রেয় (সৎ মায়ের মেয়ে) ও বৈপিত্রেয় (সৎ বাবার মেয়ে) বোন, ৫. বাবার সহোদর বোন এবং বাবার বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোন (ফুপু), ৬. যে স্ত্রীর সঙ্গে দৈহিক মিলন হয়েছে, তার পূর্ববর্তী বা পরবর্তী স্বামীর ঔরসজাত কন্যাসন্তান, স্ত্রীর আপন মা, নানি শাশুড়ি ও দাদি শাশুড়ি, ৭. মায়ের সহোদর বোন এবং মায়ের বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোন (খালা), ৮. ভাতিজি অর্থাৎ সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাইয়ের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কন্যাসন্তানরা, ৯. ভাগ্নি অর্থাৎ সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোনের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কন্যাসন্তানেরা, ১০. দুধ মেয়ে (স্ত্রীর দুধ পান করেছে এমন), সেই মেয়ের মেয়ে, দুধ ছেলের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কোনো কন্যাসন্তান এবং দুধ ছেলের স্ত্রী, ১১. দুধ মা এবং তার দিকের খালা, ফুপু, নানি, দাদি ও তাদের ঊর্ধ্বতন নারীরা, ১২. দুধবোন, দুধবোনের মেয়ে, দুধভাইয়ের মেয়ে এবং তাদের গর্ভজাত যেকোনো কন্যাসন্তান। অর্থাৎ দুধ সম্পর্ককে রক্ত সম্পর্কের মতোই গণ্য করতে হবে, ১৩. ছেলের স্ত্রী, ১৪.  অন্যের বৈধ স্ত্রীকে বিবাহ করা হারাম। আরটিভি/একে
ইসলামে রাগ কমানোর উপায়
রাগ নেই, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। রাগ মানিবক আবেগের অংশ বিশেষ। তবে অনিয়ন্ত্রিত রাগ মারাত্মক ক্ষতিকারক।  এক সাহাবি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাকে অল্প কথায় কিছু নসিহত করুন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, রাগ বর্জন করো। সাহাবি কয়েকবার বললেন, আরও নসিহত করুন। প্রত্যেকবারই রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, রাগ বর্জন করো। -বোখারি শরীফ আবু যার (রা.)–এর বরাতে বলা হয়েছে একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের বললেন, যদি তোমাদের কেউ দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় রাগান্বিত হয়, তবে সে যেন বসে পড়ে। যদি এতে রাগ চলে যায়, তবে ভালো; নয়তো সে শুয়ে পড়বে। আতিয়াহ (রা.) থেকে বর্ণিত; আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, রাগ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। আর শয়তান আগুন হতে সৃষ্ট। আগুনকে পানিই নেভাতে পারে। কাজেই তোমাদের কেউ রাগান্বিত হলে সে যেন অজু করে। ইসলাম মানুষকে রাগ নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দিয়েছে। ইসলাম মনে করে, রাগ মানুষকে জ্ঞান, বিবেক ও ধর্মের পথ থেকে বিচ্যুত করে দেয়। রাগের কারণে মানুষের আচার-আচরণ ও চিন্তায়া খারাপ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। তাই রাগান্বিত অবস্থায় ক্ষমা করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। বিশেষ করে কোনো ব্যক্তি যদি প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষমতা থাকার পরও প্রতিশোধ না নেয় এবং ক্ষমা করে দেয়, তাহলে তার এ কাজটি ইসলামের দৃষ্টিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত। ইসলামের ইতিহাসে দেখা যায়, বড় বড় মনিষীরা ক্ষমা করার ক্ষেত্রে ছিলেন অগ্রগামী। তারা রাগান্বিত হলে সূরা আল ইমরানের ১৩৪ নম্বর আয়াতটি তেলাওয়াত করতেন। এ আয়াতে বলা হয়েছে, যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল সব অবস্থায়ই অর্থ-সম্পদ ব্যয় করে এবং যারা ক্রোধ দমন করে ও অন্যের দোষ-ত্রুটি মাফ করে দেয়। এ ধরনের সৎলোকদের আল্লাহ অত্যন্ত ভালোবাসেন। মহান ও আধ্যাত্মিকভাবে পরিশুদ্ধ ব্যক্তিরা সব সময় অন্যের জন্য দোয়া করেন। মানুষকে সংশোধন করে দেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে আবেদন জানান। তাদের কথা হলো, কোনো আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধব আপনার ওপর রেগে থাকলে ক্ষুব্ধ লোকটির কাছে গিয়ে নম্রভাবে তাকে সান্ত্বনা দিন, তার ক্ষোভ উপশমের ব্যবস্থা করুন, যাতে সে শান্ত হয়। এমনটি করলে ক্ষুব্ধ ব্যক্তিটির ক্ষোভ কমবে, তার কোনো ক্ষতি করার পরিকল্পনা থাকলে তা থেকে সরে আসবে। রাগ নিয়ে ইসলামের এমন অবস্থানের পরও কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে ক্ষোভকে সঠিক বলে রায় দিয়েছে। সমাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, জুলুম ও বৈষম্য দূর করা এবং মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অপরাধী ও জুলুমবাজদের মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে রাগ বৈধ। জাতীয়, ধর্মীয় ও মানবিক আদর্শ ও মূল্যবোধ রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনে রাগকে কাজে লাগাতে হবে। তবে অন্যায় দমন করতে যেয়ে অন্যায়কে যাতে প্রশ্রয় না দেওয়া না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বস্তুত রাগ মানুষের জীবনকে সহজেই বিষাক্ত করে তুলতে পারে। রাগের মাথায় এমন সব কাজ ঘটে যেতে পারে- যা ব্যক্তি, সমাজ তথা গোটা বিশ্বের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ। তাই রাগ হলে আলেমরা ‘আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম’ পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এক হাদিসে বলা হয়েছে, যখন তোমাদের কারও রাগ আসে, তখন সে দাঁড়িয়ে থাকলে যেন বসে পড়ে। তাতে যদি রাগ দমে না যায়, তাহলে সে যেন শুয়ে পড়ে। -তিরমিজি আর মুসলিম শরীফের এক হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে রাগের সময় নিজেকে সামলে নিতে পারে, সেই প্রকৃত বাহাদুর।   আরেক হাদিসে বলা হয়েছে, রাগ দেখানোর সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, আল্লাহতায়ালা তাকে কিয়ামতের দিন পুরস্কৃত করবেন। রাগ দমনের সওয়াব আল্লাহ বলেন, ভালো ও মন্দ (দুই-ই) সমান হতে পারে না। ভালো দিয়ে মন্দকে বাধা দাও। এতে তোমার সঙ্গে যার শত্রুতা সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মতো। এ-চরিত্র তাদেরই হয় যারা ধৈর্যশীল, এ-চরিত্র তাদেরই হয় যারা মহাভাগ্যবান। যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে উসকানি দেয় তবে তুমি আল্লাহর স্মরণ নেবে, তিনি সব শোনেন, সব জানেন। (সুরা হামিম সিজদা, ৩৪-৩৬) নবীজি (সা.) বলেন, যে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও রাগ দমন করে, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার অন্তরকে সন্তুষ্টি তারা পূর্ণ করে দেবেন। নবীজি (সা.) আরও বলেন, সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যে তার রাগ দমন করে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাঁর গোটা সৃষ্টির সামনে তাকে ডাকবেন এবং তাকে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী হুর নির্বাচন করতে দেবেন। (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৭৭৭) আরটিভি/একে
যশোরের মাহফিলে যোগ দিতে মিজানুর রহমান আজহারীর আহ্বান
আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে যশোরে তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যশোর শহরের পুলেরহাটের আদ-দীন সোকিনা মেডিকেল কলেজ মাঠে বুধবার (১ জানুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এই মাহফিলে শেষ দিন শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বক্তব্য দেবেন বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী। তাই তিনি খুলনা বিভাগের বন্ধুদের মাহফিলে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ড. মিজানুর রহমান আজহারী তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মাহফিল নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘খুলনা বিভাগের বন্ধুরা, ইনশাআল্লাহ আগামীকাল (শুক্রবার) থাকবো যশোরের পুলের হাটে, আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে। আসুন, দেখা হবে, কথা হবে।’ আয়োজক কমিটির সদস্য আদ-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজের পাবলিক রিলেশন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম তারেক বলেন, তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের তৃতীয় দিনে প্রধান অতিথি ড. মিজানুর রহমান আজহারী বয়ান করবেন। তার আগমন উপলক্ষে সব রকমের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। এ মাহফিলে ৭ থেকে ১০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে রাত্রিযাপন করতে পারবে না কেউ। আয়োজকরা জানান, ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের জন্য আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনের নিজস্ব ১৫০ বিঘা জমিসহ আশপাশের আরও ২০০ বিঘা জমিজুড়ে মাহফিলের জন্য মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে। যার দৈর্ঘ্য ৮৫০ ফুট আর প্রস্থ ৬৫০ ফুট। মাহফিলের ময়দানে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য রয়েছে চারটি গেট। রয়েছে মাইক এলইডি স্কিন ও ২ লাখ লাইটের ব্যবস্থা। মাহফিলের প্রথম দিন অর্থাৎ বুধবার আলোচনা করেছেন আল্লামা মামুনুল হক ও আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ। আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিন আলোচনা করবেন মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী ও মুফতি আমির হাজমা। শেষ দিন শুক্রবার আলোচনা করবেন শায়খ আহমাদুল্লাহ ও ড. মিজানুর রহমান আজহারী। আরটিভি/এফএ/এস