• ঢাকা সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo
রূপগঞ্জে বাবুল হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫ জন
শীতলক্ষ্যায় কলসি বাঁধা লাশ, জানা গেল রহস্য
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নিখোঁজের দুই দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে ওমর আলী (৬৫) নামের এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌপুলিশ। শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে উপজেলার তারাব পৌরসভার নোয়াপাড়া এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ওই বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  ওমর আলী রূপগঞ্জ উপজেলার গন্ধর্বপুর এলাকার মৃত ফৈজদ্দিনের ছেলে। নিহতের ছেলে শফিকুল ইসলাম দাবি করেন, সম্পত্তিকে কেন্দ্র করেই তার বাবা ওমর আলীকে হত্যা করে গুমের উদ্দেশ্যে কলসির সঙ্গে বেঁধে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ইছাপুড়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (উপপরিদর্শক) আমিরুল সিকদার জানান, শনিবার সন্ধ্যার দিকে তারাব পৌরসভার নোয়াপাড়া এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীতে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার গলায় একটি পানি রাখার কলসি বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার পর গুমের জন্য মরদেহটির গলায় কলসি বেঁধে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে যায়। পরে ছেলে শফিকুল ইসলাম তার বাবা ওমর আলীর মরদেহ শনাক্ত করেন। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর আগে, ১৫ নভেম্বর শুক্রবার সকাল থেকে ওমর আলী নিখোঁজ রয়েছে মর্মে ছেলে শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওমর আলীর আরেক ছেলে রফিকুল ইসলাম একই এলাকার লিপি আক্তার নামের এক নারীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই রফিকুল ইসলাম ও লিপি আক্তার মিলে নানাভাবে অত্যাচার ও ভয়ভীতি করতেন ওমর আলীকে। এছাড়া উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরাও করতেন। এ কারণে রফিকুল ইসলামকে ত্যাজ্যপুত্র করে দেন বাবা ওমর আলী। গত প্রায় ৬ মাস আগে ছেলে রফিকুল মারা যায়। এরপর লিপি আক্তারের কোনো জায়গা জমি না থাকায় ওমর আলী নিজ বাড়িতে একটি ছাপড়া ঘরে এক মাসের জন্য লিপি আক্তারকে থাকতে দেন। একমাস পার হওয়ার পর লিপি আক্তারকে ছাপড়া ঘর ছেড়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করে শফিকুল ইসলাম ও তার বাবা ওমর আলী। এ নিয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর লিপি আক্তারসহ লিপি আক্তারের বাপের বাড়ির লোকজন মিলে শফিকুল ইসলামকে বেধরক মারপিট করে। এ ঘটনা নিয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে শফিকুল ইসলাম। সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা নিয়ে কয়েক মাস ধরেই লিপি আক্তারের সঙ্গে ওমর আলী ও শফিকুল ইসলামের বিরোধ চলে আসছে। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) মেহেদী ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে নৌপুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। হত্যাকাণ্ড উদঘাটন ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কাজ করছে। আরটিভি/এএএ/এআর  
তিন দিন নিখোঁজের পর ৭ টুকরো লাশ মিলল শিল্পপতির
লেকে মিলল যুবকের ৭ টুকরো লাশ
স্ত্রীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডা, গলায় ফাঁস দিলেন স্বামী
রূপগঞ্জে বিস্ফোরণ, বাঁচানো গেল না দগ্ধ ২ ভাইকে
গাজী টায়ার্স ভবনে মেলেনি জীবিত বা মৃত মানুষের অস্তিত্ব
নারায়গঞ্জের রূপগঞ্জে দুর্বৃত্তের আগুনে বিধ্বস্ত গাজী টায়ার্সের ছয় তলা ভবনের কোথাও জীবিত বা মৃত কোনো মানুষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞরা।  বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। নিচ তলার ভেতরে বেশ কয়েক জায়গায় এখনও আগুন জ্বলতে দেখা গেলেও এটা আর ছড়ানো আশঙ্কা নেই বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস।  এর আগে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তদন্ত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে উপজেলার রূপসি এলাকায় আগুনে পোড়া ভবনটি পরিদর্শনে যান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বুয়েটের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা। বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক রাকিব আহসান সময় সংবাদকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভবনটির ৪, ৫ ও ৬ তলার ছাদের বেশ কিছু অংশ ধসে তিন তলার ছাদের ওপর পড়েছে। যে কারণে দুই তলা থেকে ছয় তলা পর্যন্ত ভেতরে তল্লাশি করা বা এই মুহূর্তে ভেঙে ফেলাও সম্ভব নয়। যে কোনো সময় পুরো ভবনটি ধসে পড়তে পারে। বর্তমান অবস্থায় ভবনটি রাজধানীর বিজয় সরণির র‍্যাংগস ভবনের চেয়েও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই শুধুমাত্র নীচতলার বেইজমেন্টে তল্লাশি করার পরামর্শ দেন অধ্যাপক রাকিব আহসান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন, জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হামিদুর রহমান, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেল, গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ছাইফুল ইসলাম, কলকারখানা অধিদফতরের উপ মহাপরিদর্শক রাজীব চন্দ্র ঘোষ, তিতাসের উপ মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মঞ্জুর আজিজ মোহন ও পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার হরেন্দ্র নাথ বর্মনসহ কমিটির অন্য সদস্যরা। বুয়েটের অধ্যাপক ও তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলে বেলা ১১টার ভবনটির নীচতলার বেইজমেন্টে নিখোঁজদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। ভেতরের বিভিন্ন অংশ তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয়। তবে এ সময় কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মান্নান জানান, ভেতরে কোনো মরদেহ বা মানবদেহের কোনো ধরণের অংশবিশেষ পাওয়া যায়নি। তাই উদ্ধার অভিযান আপাতত শেষ করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী তাদের পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালিত হবে। তবে ফায়ার সার্ভিসের তল্লাশি অভিযানের সময় নীচতলার ভেতরে বেশ কয়েক জায়গায় এখনও আগুন জ্বলতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে আব্দুল মান্নান বলেন, ভেতরে কিছু কেমিক্যাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় স্বল্প পরিমাণে আগুন জ্বলছে। তবে এতে ভয়ের কোনো কারণ নেই। এই আগুন আর ছড়াতে পারবে না। তবে পরিস্থিতি ঠিক রাখতে আমরা কারখানার ভেতরেই অবস্থান করব। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরবর্তী যে নির্দেশ দেবেন, সে অনুযায়ী আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালিত হবে। উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীকে নারায়ণগঞ্জ আদালত ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওইদিনই রূপগঞ্জের রূপসী এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করে বিএনপি ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় শত শত মানুষ গাজী টায়ার কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে মেশিনপত্র ও আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী লুটপাট করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ২৫ আগস্ট রাত ৯টার দিকে ভবনের নীচতলায় দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিলে ছয় তলা পর্যন্ত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সেসময় শতাধিক মানুষ ভবনটির ভেতরে আটকা পড়েন বলে দাবি করে আসছেন স্বজনরা। খবর পেয়ে ওইদিন রাত থেকেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট। দীর্ঘ ২২ ঘণ্টা চেষ্টার পর গত ২৬ আগস্ট সন্ধ্যায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
গাজী টায়ার কারখানার সামনে স্বজনদের অপেক্ষার চতুর্থ দিন
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গাজী টায়ার ভবনে আগুন তিন দিনেও নেভেনি। ছয় তলা ভবনটি যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কায়। আগুনে কতজন প্রাণ হারিয়েছেন তা মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন বলেন, স্থানীয় লোকজন নিখোঁজ ব্যক্তিদের ১৭৪ জনের তালিকার কথা বললেও আমাদের জানা নাই। মঙ্গলবার ওই এলাকায় নিখোঁজদের নিয়ে কাজ করা ছাত্ররা ৯৯ জনের নাম, ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি টানিয়ে দেয়। তাদের নিখোঁজ বলা হচ্ছে। ভবনের সামনে এখনো অনেক লোকের ভিড়। তারা দাবি করছেন, তাদের স্বজনরা ওই ভবনে ছিলেন। কিন্তু তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মো. ডাবলু নামে একজন জানান, তার ভাই ওই এলাকায় ছিলেন, তবে আগুন লাগার পর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।  সালেহা বেগম নামে একজন বলেন, আমরা ছেলে অটোরিকশা ড্রাইভার। সে-ও ওই এলাকায় ছিল। বাসা থেকে গাজী টায়ারে যাওয়ার কথা বলে বের হয়। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় সাংবাদিক আমীর হোসাইন জানান, আগুন লাগার পর থেকে ছাত্ররা ফায়ার সার্ভিসের সাথে কাজ করছে। তারা মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯৯ জন নিখোঁজের তালিকা করেছেন। তবে এটা প্রশাসন বা ফায়ার সার্ভিসের তালিকা নয়। ফায়ার সার্ভিসের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার বলেন, আমরা কোনো নিখোঁজের তালিকা করিনি। আমরা আগুন লাগার পর ১৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছি। কোনো মৃতদেহ আমরা এখনো পাইনি। উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন বলেন, আসলে ছয়তলা ভবনটি পুরো পুড়ে গেছে। এখানে রাবার ও কেমিকেল থাকায় আমরা ১৬টি ইউনিট নিয়ে কাজ করেও আগুন নেভাতে পারিনি। এখন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পুরো নেভাতে সময় লাগবে। তিনি জানান, সরকারের পতনের দিন (৫ আগস্ট) থেকেই কারখানাটি বন্ধ ছিল। ফলে ভবনে প্রতিষ্ঠানটির কোনো লোক ছিল না। গত ২৫ আগস্ট রাত ১০টার দিকে গাজী টায়ার কারখানার ছয়তলা ভবনের নিচতলায় আগুন লাগে। এরপর থেকে শত শত মানুষ এসে সেখানে জড়ো হচ্ছেন। গত ২৪ আগস্ট রাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী, গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজীকে গ্রেপ্তারের পর নারায়ণগঞ্জের আদালত তার ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। খবর পেয়ে সর্বশ্রেণির মানুষ কারখানাটিতে গণহারে লুটপাট চালায়। আগুন লাগার সময়ও লুট করতে গিয়ে শতাধিক মানুষ ভেতরে আটকা পড়েন বলে স্থানীয়রা জানান। গাজী টায়ারের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট থেকেই আসলে গাজী টায়ার ভবন এলাকায় লুটপাট শুরু হয়। চত্বরে মোট ছয়টি ভবন। আরো চারটি শেড আছে। ফ্যাক্টরি ভবনটি ছয় তলা। ওই ভবনটি ছাড়া বাকি ভবন ও শেডে আগেই ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয়। যে যার মতো মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। গেলাম দস্তগীর গাজী গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২৫ তারিখ ফ্যাক্টরি ভবনে আগুন দেওয়া হয়। কিন্তু ওই ভবন বা অন্য কোনো ভবনে আমাদের কোনো কর্মচারি ছিল না। গেটে কয়েকজন নিরাপত্তা প্রহরী ছিলেন৷ তারা লোকজন আসতে দেখে আগেই চলে যান। ভিতরে কেউ যদি তখন থেকে থাকেন তারা আমাদের লোক নয়, তারা হয়ত লুটপাট করতে এসে ভবনে ঢুকেছিল। গাজী টায়ার কারখানাটি রূপগঞ্জের রপসী এলাকায়। ৯৬ বিঘা জমির ওপরে ২০১৩ সালে টায়ারের কারখানাটি করা হয়। কারখানায় দুই হাজার ৩০০ শ্রমিক কাজ করতেন। ছয় তলা ভবনটির প্রথম তিনটি ফ্লোরে ফ্যাক্টরি এবং বাকি তিনটি ফ্লোরে গোডাউন ছিল। এখানে কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি। কারখানায় লুটপাট ও আগুনের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। ফায়ার সার্ভিস জানায়, কেউ আগুন দিয়েছে না কোনো কারণে আগুন লেগেছে তা তারা তদন্ত করে দেখছেন। কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা-ও তদন্তের পর বলা যাবে। নারায়ণগঞ্জের অ্যাডিশনাল এসপি আমির খসরু বলেন, আসলে ওই ভবনটি পুরোপুরি ভস্মীভূত হওয়ার আগে উদ্ধার কাজ চালানো যাবে না। এখনো থেকে থেকে আগুন জ্বলছে। রাবার ও কেমিক্যালের কারণে ফায়ার সার্ভিস ভবনের ভেতরে যেতে পারছে না। তারা বাইরে থেকে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর নিখোঁজদের ব্যাপারে তিনি বলেন, আগুন লাগার পর স্থানীয়রা ১৭০-১৮০ জন নিখোঁজ বলে তালিকা দেন। তবে আসলে কতজন নিখোঁজ তা বলা যাচ্ছে না।
রূপগঞ্জে শেখ হাসিনা-গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় জনকল্যাণ স্কুলের সামনে স্কুলছাত্র রোমান মিয়া (১৭) নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী, তার ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা গাজীসহ ৪৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার (২১ আগস্ট) সকালে এ ঘটনায় নিহতের খালা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় হুকুমের আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী, তার ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা গাজী। নিহত রোমান রূপগঞ্জের চনপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি চনপাড়া নব কিশালয় স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জোবায়ের হোসেন। তিনি বলেন, মামলায় ৪৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অভিযোগে বাদী রিনা বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের খবরে ছাত্র-জনতার আনন্দ মিছিল চলছিল। এ সময় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পিস্তল, আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রূপগঞ্জের চনপাড়া এলাকার জনকল্যাণ স্কুলের সামনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়। এ সময় আসামিরা ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তাদের গুলিতে গুরুতর আহত হয় রোমান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পূর্বগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘স্কুলছাত্র রোমান মিয়া হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আপত্তিকর অবস্থায় নারীসহ এসআই আটক
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আপত্তিকর অবস্থায় এক নারীসহ রূপগঞ্জ থানার এসআই মিরাজ মোল্লাকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। রোববার (১৮ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার সদর ইউনিয়ন এলাকার রতন মিয়ার ভাড়াটিয়া বাড়ি থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।   স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, রোববার (১৮ আগস্ট) বিকেলে এসআই মিরাজ মোল্লা এক নারীকে তার ভাড়াটিয়া ঘরে নেয়। এ সময় স্থানীয় জনতা বিষয় টের পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করলে এসআই মিরাজ মোল্লা ও ওই নারীকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন। পরে রূপগঞ্জ থানায় জানানো হলে রূপগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেন। রূপগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত জোবায়ের হোসেন বলেন, থানায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিতে আসা এক নারীকে তার বাসায় যেতে বলেন। পরে এলাকাবাসী তাকে আটক করে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে  মিরাজকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ঘটনা তদন্তাধীন। তবে মিরাজকে সাময়িক প্রত্যাহার করেছি। বাকিটা এসপি মহোদয় দেখবেন।
শেখ হাসিনার বিচার দাবিতে রূপগঞ্জে বিএনপির বিক্ষোভ
গণহত্যার দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দোষীদের বিচারের দাবিতে রূপগঞ্জে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপজেলার ভুলতা গোলচত্বর এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু।  ভুলতা এলাকার কর্মসূচিতে বেলা ৩টার দিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ড এবং পাড়ামহল্লা থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে কর্মসূচিস্থলে আসতে থাকেন। এসময় হাজার হাজার লোকের উপস্থিতিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা গোলচত্বর এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিক্ষোভ সভায় বক্তারা বলেন, ভারতে বসে শেখ হাসিনা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে বাংলাদেশকে অস্থির করে তুলতে চাইছেন। এই সরকারের নির্দেশে অনেক মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত প্রত্যেককে চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। তারা আরও বলেন, শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় আমেরিকায় বসে বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতকে চাপ দিতে বলেছেন। তিনি হয়তো ভুলে গেছেন বাংলাদেশ একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ করে বক্তারা বলেন, আমার ভাইদের রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচার মুক্ত নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তাদের এই ঋণ আমরা কোনোদিন ভুলবো না। সভায় উপজেলা বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের জেলার ও উপজেলার শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন ।
পরীক্ষার হলে ছাত্রের পকেটে মিলল গাঁজা, অতঃপর...
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে পকেটে করে গাঁজা নিয়ে এসে ধরা খেয়েছেন এক পরীক্ষার্থী। এ ছাড়া মোবাইল ফোন, নকলের চিরকুটসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে আটক হয়েছেন আরও দুই শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে দুজন বহিষ্কার হলেও গাঁজা রাখায় জেলে যেতে হয়েছে ওই পরীক্ষার্থীকে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে উপজেলার ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্র সচিব ও ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজ অধ্যক্ষ ড. আব্দুল আউয়াল মোল্লা। তিনি বলেন, আজ এইচএসসির ইংরেজি প্রথমপত্র পরীক্ষা চলছিল। তখন শ্রাবণ মোল্লা নামে এক পরীক্ষার্থী গাঁজাসহ হলে প্রবেশ করেন। যা অন্যায়। এ সময় পাঁচরুখি কলেজের ওই ছাত্রকে মাদক আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিমন সরকার। তিনি আরও বলেন, একই কলেজের পরীক্ষার্থী সাইদ ও সলিমদ্দিন চৌধুরী কলেজের পরীক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম তুরজুকে নকলের দায়ে বহিষ্কার করেন ইউএনও আহসান মাহমুদ রাসেল। এ বিষয়ে ইউএনও আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, পরীক্ষার হলে নকলের চিরকুট, মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করায় দুজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া এক পরীক্ষার্থীর কাছে গাঁজা পাওয়ায় তাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ছয়মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে।