ঢাকাশনিবার, ০৯ আগস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২

নিজের গ্রাফিতি দেখে আবেগে যা বললেন স্যালুট দেওয়া সেই রিকশাচালক

আরটিভি নিউজ

বুধবার, ১৪ আগস্ট ২০২৪ , ১০:৫৩ পিএম


‘আমরা রক্ত দেখছিলাম। আন্দেলোনের সময় মাঝখানে ছিলাম। রক্ত দেখে আমাদের আর সহ্য হয় নাই। আমি তো মুক্তিযুদ্ধ দেখি নাই। ওই দিনই মুক্তিযুদ্ধ দেখছি। সেজন্য তাদেরকে দেখে স্যালুটটা দিছিলাম। আমার স্যালুটরে সমর্থন জানায়ছে ছাত্ররা। আবার রিকশাচালকরাও সমর্থন জানায়ছে’— এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর কামরাঙ্গীচরের রিকশাচালক সুজন।

বিজ্ঞাপন

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আহত ছাত্রদের বাঁচাতে নিজের রিকশায় ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দোয়েল চত্বর মোড় এবং শহীদ মিনার এরিয়ায় ছাত্রদের মিছিলের সময় নিজের রিকশার ওপরে দাঁড়িয়ে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের স্যালুট জানান তিনি। 

ওই সময়ের সুজনের দুটি ছবি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মুর্হূতেই ছবিগুলো ছড়িয়ে পড়ে চারদিক। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদী বার্তা লিখেছিলেন ছাত্ররা। তবে আন্দোলনে বিজয়ের পর সেসব লেখা মুছে বিভিন্ন গ্রাফিতি এবং দেয়ালচিত্র আঁকা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। যা এখনও চলমান রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় যারা সাপোর্ট করেছেন তাদেরই কিছু বক্তব্য দেয়ালে দেয়ালে তুলে ধরছেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে রিকশাচালক সুজনের স্যালুট দেওয়ার চিত্রাঙ্কনও করেন তারা। 

দেয়ালে নিজের সেই ছবি দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে সুজন বলেন, ‘এই ছবিটা আমার। দোয়েল চত্বরের মোড়ে এই স্যালুটটা দিছিলাম। আরেকটা শহীদ মিনারের ওইখানে দিছিলাম। ওই ছবিটা আমার ভাইরাল হয়ছে বেশি। আমার এই স্যালুটের পরে রিকশাচালকরাও মিছিল করছে। আন্দোলনের সময় ছাত্ররা আহত হইছে, আমরা ঢাকা মেডিকেলে নিয়া গেছি তাদের। ভাড়া নেই নাই। কোনো রিকশাচালকই ভাড়া নেয় নাই।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার খুব ভালো লাগতেছে। আমি যে ছাত্রদের পক্ষের লোক সেটা তারা মনে রাখছে। আমি এই দিক দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম যে আমার ছবি। সব মিলিয়ে আমার ভালো লাগতেছে। এখন রাস্তায় তেমন কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু আমাদের কাজ কম। এখন অটোরিকশা চলার কারণে পায়ের রিকশা চালায়া খুব একটা টাকা কামাইতে পারি না। এটাই আমাদের সমস্যা। আমরা এখন খুব কষ্টে আছি।’ 

বিজ্ঞাপন

সবশেষে সুজন বলেন, ‘এখন সরকারের কাছে একটা কাজ চাইতেছি। তারা যদি আমারে ছোটখাটো একটা কাজ দেয়, তাহলে আমার শাশুড়ির চিকিৎসাও করাইতে পারতাম আর আমার ৫ বছরের মেয়েটারেও পড়ালেখা করাইতাম। সরকারের কাছে এটাই আমার প্রত্যাশা। সরকার যেন আমারে একটা চাকরি দেয়।’   

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |