শিশুর চোখের ভুল চিকিৎসা: যা বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
সম্প্রতি রাজধানীর ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ আই হসপিটাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটে বাম চোখে সমস্যা নিয়ে ভর্তি হওয়া দেড় বছর বয়সী এক শিশুর ডান চোখে অপারেশনের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ ভুল চিকিৎসার ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে ক্ষমা চাওয়ার পরও গ্রেপ্তার হয়েছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক শাহেদারা বেগম। এবার ঘটনাটি ব্যাখ্যা করে এ ব্যাপারে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ আই হসপিটাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউট-এর পক্ষে বিজ্ঞপ্তিটিতে স্বাক্ষর করেন চিফ অপারেটিং অফিসার কাজী মেজবাহ উল আলম।
বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে, সম্প্রতি ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ আই হসপিটাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটে রোগীর শিশুর ভুল চোখে অস্ত্রোপচার ঘটেছে বলে দাবি করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন ভিত্তিহীন ও প্রকৃত ঘটনাকে সম্পূর্ণ বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। গণমাধ্যমে এটি অস্ত্রোপচার বলে খবর প্রচার করা হলেও মূলত, শিশুটির চোখের পাতার নিচের পাপড়ি সরানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ঘটনার পর জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালের নির্বাহী কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি ১৫ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৩টায় একটি বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে শিশুটির চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তদন্ত কমিটি প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারেন, ১৪ জানুয়ারি ইরতিজা আরিজ হাসান নামে ১৮ মাস বয়সী এক শিশু রোগীকে চোখের চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ আই হসপিটাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটে শিশু চক্ষু বিশেষজ্ঞ সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সাহেদ-আরা বেগমের কাছে আনা হয়। তিনি শিশুর চোখের পাতার নিচে ফরেন বডি (চোখের পাপড়ি) অস্তিত্ব খুঁজে পান, যা শিশুটির চোখের কর্ণিয়ার ক্ষতির কারণ হতে পারতো। তাই তিনি তা বের করে আনার পরামর্শ দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চিকিৎসাটি কোনো অস্ত্রোপচার ছিল না। ছোট শিশু বিধায় সামান্য ঘুমের ওষুধ দিয়ে চোখের পাতার নিচ থেকে ফরেন বডি সরানো হয়েছে। চোখের উপরিভাগের ঘর্ষণজনিত সমস্যা (Corneal Abrasion) হতে দ্রুত নিরাময়ের জন্য ওই শিশুটির চোখ ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়। এটি এ ধরনের চিকিৎসার স্বীকৃত ও প্রচলিত পদ্ধতি। পরবর্তী চিকিৎসা ব্যবস্থা যথাযথ অনুসরণ করা হলে শিশুটির চোখের কোনো দীর্ঘমেয়াদি বা স্থায়ী সমস্যা হবে না।
শিশুটির সঙ্গে থাকা মা-বাবাকে পরবর্তী চিকিৎসা ব্যবস্থা পুরোপুরি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রোগীর মা-বাবা এবং আত্মীয়স্বজন চিকিৎসা প্রক্রিয়ার পুরো অংশটি বুঝতে ভুল করেন। ফলে, তারা বাংলাদেশ আই হসপিটাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটের পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে যা যা বলেছেন তা ভিত্তিহীন এবং অপপ্রচারের শামিল। এ ছাড়া গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রচার করেছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত।
আরটিভি/এসএইচএম/এস
মন্তব্য করুন