আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজধানীর বিপণন ও মার্কেট গুলোতে জমে উঠেছে কেনাকাটা। দেখে মনে হয় মার্কেটগুলোতে ঈদের আমেজ লেগেছে। পবিত্র মাহে রমজানের ১১তম দিন শেষ হয়েছে আজ। ঈদের ১৯ দিন বাকী থাকলেও বিভিন্ন মার্কেটে উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।
বুধবার (১২ মার্চ) রাজধানীর নিউমার্কেট, মিরপুরের ইসিবি চত্বর, উত্তরার আজমপুর, রাজলক্ষ্মী ও জসীমউদ্দিন এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
সরজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, মার্কেট এবং শপিংমলগুলোতে সকাল থেকে শুরু হচ্ছে ব্যস্ততা। মিলছে দেশি-বিদেশি নানা ধরনের ঈদের পোশাক। নানা ধরনের অফার এবং ঈদ স্পেশাল কালেকশন বিক্রি করা হচ্ছে জনপ্রিয় শপিংমলগুলোতে।
পোশাকের দোকানগুলোতে পুরুষদের পায়জামা-পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট, গেঞ্জি, টিশার্ট, নারীদের শাড়ি, থ্রিপিস, ওয়ান পিস, কুর্তা এবং বাচ্চা ও শিশুদের পায়জামা-পাঞ্জাবি, ফ্রক, গেঞ্জিসেটসহ আধুনিক ডিজাইনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। একইসঙ্গে কসমেটিকস, জুতা, ঘর সাজানোর সামগ্রী এবং গহনার দোকানগুলোতেও ভিড় জমাচ্ছেন মানুষজন।
দোকানিরা জানান, এ বছর ঈদের কেনাকাটা আগেভাগেই শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে ভিড়। এবার নারী, পুরুষ ও শিশুর জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের নতুন পোশাকগুলো বিক্রি হচ্ছে ব্যাপক হারে। এ ছাড়াও মসলিন, সিল্ক, জামদানি, কাতান, কাশ্মীরি কাজ করা শাড়ি ও লেহেঙ্গা, পুরুষদের পায়জামা-পাঞ্জাবি, টিশার্ট এবং শিশুদের জন্য নানা রঙের আরামদায়ক পোশাকের চাহিদা বেশি। গরমকে প্রাধান্য দিয়ে ক্রেতারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সুতি কাপড়কে প্রাধান্য দিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
এদিকে বেশ জমজমাট অবস্থা দেখা গেছে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব, নিউমার্কেট এবং এলিফ্যান্ট রোড এলাকায়। এসব এলাকাজুড়ে মার্কেট, শপিং মলের পাশাপাশি ফুটপাতেও বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের পোশাক, গহনা ও কসমেটিকস। এরমধ্যে নিউমার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, নূর ম্যানশন মার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট এবং নূরজাহান ম্যানশনে মহিলা ক্রেতার পরিমাণ বেশি দেখা গেছে। চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ও ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট, নুরজাহান সুপার মার্কেট এবং গ্লোব শপিং সেন্টারের শার্ট-প্যান্টের দোকানগুলোতে ভিড় বেশি ছিল তরুণ ক্রেতাদের। আর সায়েন্সল্যাবের বাইতুল মামুর জামে মসজিদ মার্কেট, প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারে পাঞ্জাবি-পায়জামার দোকান এবং এলিফ্যান্ট রোডের জুতার দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে।
এসব মার্কেটের বিক্রেতারা বলছেন, এবার মানুষের মধ্যে ছিনতাইয়ের একটি আতঙ্ক বিরাজ করছে, যার কারণে অনেকেই দিনের বেলাতে কেনাকাটা করার প্রতি ঝুঁকছেন। এতে করে আবার এই এলাকায় অন্য বছরের মতো মধ্যরাত পর্যন্ত কেনাকাটার পরিবেশে ভাটা পড়েছে। আবার ব্যবসায়ী ও দোকানিরাও কিছুটা আতঙ্কে সময় পার করছেন। সেজন্য, আগের তুলনায় এবারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বেশি জোরদার করার দাবিও জানিয়েছেন তারা।
ক্রেতারা বলছেন, বরাবরের মতোই ঈদকে সামনে রেখে কাপড়ের বাড়তি দাম চাইছেন বিক্রেতারা। স্কুলকলেজ রোজার শুরু থেকেই বন্ধ থাকার কারণে অনেকেই আগেভাগে কেনাকাটা করে গ্রামের বাড়িতে চলে যাবেন। সেই বিষয়টি বুঝতে পেরে দাম ছাড়তে চাইছেন না বিক্রেতারা।
নিউমার্কেট থানার আওতাধীন পুরো এলাকাজুড়ে কেনাকাটা করতে আসা মানুষজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসেন উদ্দীন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ঢাকার অন্য যেকোনো জায়গার চেয়ে নিউমার্কেট এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো, আমাদের এখানে অপরাধের পরিমাণ নগণ্য। তারপরও কেনাকাটা করতে আসা মানুষজনের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা আরও সতর্ক হয়েছি। পুরো এলাকাজুড়ে দশটি স্পটে অবজারভেশন ফোর্স কাজ করছে।
আরটিভি/একে