এডিস মশা ও করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে নগর ভবন মিলনায়তনে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে, মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ ইস্যুতে ঢাকাবাসীর যৌক্তিক দাবির আন্দোলনকে পুঁজি করে সরকার সৃষ্ট নাগরিক ভোগান্তির সুরাহার জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নির্দেশনাও দেওয়া হয়।
বৈঠকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন আঞ্চলিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, আন্দোলনের মাঝে নাগরিক সেবা দিতে (আমার) নির্বাচিত মেয়র ইশরাক হোসেনের নির্দেশনা বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কর্তা ব্যক্তিরা তাদেরকে বাঁধা দিয়ে এসেছে। যাতে চলমান আন্দোলনে নাগরিক ভোগান্তির সব দায়ভার ইশরাক হোসেনের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায়। তারপরও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সেসব অবৈধ নির্দেশনা না মেনে নাগরিক সেবা চলমান রেখেছেন বলেও অবহিত করেন তারা।
আন্দোলনের পাশাপাশি নাগরিক সেবা সচল রাখতে সব ধরণের ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধন্যবাদ। একইসাথে যেকোন অবস্থায় তাদের পাশে থাকারও অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের দুর্বৃত্তদের উদ্দেশ্য বলতে চাই, চলমান আন্দোলনের পক্ষে অবস্থানকারীদের ওপর কোন অশুভ পক্ষ থেকে যদি ফ্যাসিস্ট হাসিনার মত আচরণ করা হয় তাহলে আমি কথা দিচ্ছি, আমার সর্বশক্তি দিয়ে আপনাদের পাশে অবস্থান নিবো এবং তাদের সকল চক্রান্তের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে।
আন্দোলনে যেন নাগরিক সেবা স্থবির হয়ে না পড়ে এজন্য আমাদের কর্মকর্তারা কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বাঁধার শিকার হয়েছেন। তারা নিজেরা কাজে বাঁধা দিয়ে তার দায় আমার ওপর চাপানোর চেষ্টা চালিয়েছেন। নগরবাসীর যথাযথ নাগরিক সেবা প্রাপ্তিতে অন্তরায় সৃষ্টির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার দুর্নীতি ও চরম স্বেচ্ছাচারিতাই দায়ী।
মতবিনিময় সভায়, ডেঙ্গু বাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে নগর স্বাস্থ্য সেবা সুনিশ্চিত করণে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরিতে সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ ও অন্যান্য বিভাগগুলোর মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপও করা হয়। কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি বিভাগকে মাঠ পর্যায়ে সহযোগিতা করার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরাও প্রস্তুত আছে।
শুধু একজন নির্বাচিত মেয়র হিসেবে নয় হাসিনার চরম নির্মমতার সময়েও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দাদের নাগরিক সেবা নিশ্চিতে তাদের পাশে ছিলাম। অতীতে যারা ছিল, আমরা তাদের মতো চাপাবাজিতে বিশ্বাসী নই বরং নগরবাসীর বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে বাস্তবভিত্তিক সমাধানে বিশ্বাসী।
ঢাকা দক্ষিণের বাসিন্দাদের নাগরিক ভোগান্তি এড়াতে ও নাগরিক সেবা আরো সচল রাখতে গত তিন দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে নগরভবনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। সোমবার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা- কর্মচারীদের সাথে এবং পরের দিন মঙ্গলবার ওয়ার্ড সচিবদের সাথে মতবিনিময় করা হয়। আর আজ বুধবার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা এই মতবিনিময় সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রদান করেন ঢাকাবাসী আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক সাবেক সচিব মশিউর রহমান। এছাড়াও ডিএসসিসির সাবেক কাউন্সিলর মকবুল হোসেন খান টিপু, মো. মোহন, মো. রফিক, মো. মামুন আহমেদ, সুরাইয়া বেগম, সামসুল হুদা কাজল এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আরটিভি/এএইচ