ঢাকা

৩৩ বছরেও খনন হয়নি খাল, ফসলি জমি পানির নিচে

চাঁদপুর (মতলব) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ০৯ নভেম্বর ২০২১ , ০৫:৫৭ পিএম


loading/img
সেচ প্রকল্প

দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ সেচ প্রকল্প নিমার্ণের ৩৩ বছরেও খনন করা হয়নি চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ছোট বড় ৫৬১ কিলোমিটার খাল। ফলে জলাবদ্ধতায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে থাকায় মারাত্মক ক্ষতির মুখে মতলব উত্তর উপজেলার কৃষকেরা। ফসল উৎপাদন কমেছে প্রায় ২০ হাজার টন।

বিজ্ঞাপন

১৯৮৮ সালে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়া চাঁদপুরের মতলব উত্তরের দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের অভ্যন্তরীণ মোট ৫৬১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ছোট বড় খালগুলো এখন পর্যন্ত খনন না হওয়ায় মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কৃষকেরা।

“নদী ও খাল দখল বন্ধ করি, অধিক ফসল ঘরে তুলি” প্রতিপাদ্যকে উদ্দেশ্য করে সেচ প্রল্পটি অধিক খাদ্য- শস্য উৎপাদনের উদ্দেশ্য নির্মিত হলেও সেচ কার্যক্রমে ভাটা পড়ায় আবাদী জমি ধ্বংসের পথে। উপজেলার ৬৪ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও সেচ প্রকল্পের অভ্যন্তরীণ ১৭ হাজার ৫শ ৮৪ হেক্টর জমিকে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষার পাশাপাশি ১৩ হাজার ৬'শ ২ হেক্টর জমিতে সেচের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনের উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি নির্মাণ করা হলেও সেই জলাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি উপজেলাবাসী।

বিজ্ঞাপন

উপজেলার উদামদী, কালিপুর, এখলাসপুর, ডুবগীসহ মোট ৪টি পাম্প হাউজে মোট ৪৪২ দশমিক ১৯ কিউবিক মিটার পার সেকেন্ড পানি বাহির কিংবা প্রবেশ করানোর সক্ষমতা খাতা কলমে থাকলেও কার্যত তা বাস্তবতার ছোঁয়া পায়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, বোরো মৌসুমে ৭ হাজার হেক্টর কৃষি জমির মধ্যে ৫ হাজার ৬১৯ দশমিক ৭৪ হেক্টর জমিতে গ্র্যাভেটি সিস্টেমের মাধ্যমে পানি সেচ প্রদান করা হয়। বাকি ৮৮৬ দশমিক ৮৬ হেক্টর জমিতে স্যালো টিউবের মাধ্যমে কৃষক নিজেরা উত্তোলন করে এবং ৪শ ৯৩ দশমিক ৪০ হেক্টর জমিতে নিষ্কাশন খাল থেকে লো-লিফট পাম্পের মাধ্যমে সেচ প্রদান করা হচ্ছে।

তবে নিষ্কাশন খাল, সেচ খাল, প্রধান খাল, টারশিয়ারী খাল ও সেকেন্ডারি খাল সমূহের ৫শ ৬১ কিলোমিটারের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় অবৈধভাবে ভরাট করার ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি সরিয়ে নিতে যেমন বাধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তেমনি বোরো মৌসুমে কৃষকের জমিতে পানি পৌঁছে দিতেও সক্ষমতা হারিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
 
সেচ প্রকল্পের অভ্যন্তরীণ ১শ ২৫ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নিষ্কাশন খাল, ২১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘের সেচ খাল, ৩৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রধান খাল, ৬৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেকেন্ডারি খাল ও ১শ ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টারশিয়ারী খালসহ কোনো একটি খাল গত ৩৩ বছরেও খনন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বিজ্ঞাপন

এক বাসিন্দা আরটিভি নিউজকে জানিয়েছেন, বাঁধ নির্মাণের পর এখন পর্যন্ত খাল খনন করতে আমরা দেখিনি। বর্ষা মৌসুমে পানি জমে থাকায় ফসল চাষ করা সম্ভব হয় না। শুকনো মৌসুমে পানি না পাওয়ার কারণে কাঙ্ক্ষিত ফসল উৎপাদন করা যাচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান আরটিভি নিউজকে বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের জানিয়েছি। আশা করছি খনন প্রক্রিয়া শুরু হবে।

পানি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন সরকার আরটিভি নিউজকে বলেন, পানি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আমরা বারবার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা চাই সরকার কৃষকের স্বার্থে মতলব উত্তরে বেরিবাদের ভিতর ছোটবড় যতগুলো খাল আছে অবিলম্বে খনন করে কৃষিজমিগুলো যেন কৃষকরা সঠিক মত চাষাবাদ করতে পারে।

উপজেলা কৃষি অফিসার সালাউদ্দিন আরটিভি নিউজকে বলেন, পানি জমে থাকার কারণে কৃষকরা সময় মত দান চাষ করতে পারেন না যেই সময় ধান লাগানোর কথা তা থেকে বিশ থেকে একমাস বিলম্ব হয়। আর সঠিক সময় ধান চাষ করতে না পারলে ভালো ফলন পাওয়া যায় না।

এমআই

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |