ঢাকারোববার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

শিক্ষককে মারধর করে অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে

নওগাঁ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

শনিবার, ২২ জানুয়ারি ২০২২ , ১০:৩৬ পিএম


loading/img
ফাইল ছবি

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার চৌরাট-শিবপুর বরেন্দ্র ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ দিপক কুমার সরকারের বিরুদ্ধে ওই কলেজের একজন প্রভাষককে মারধর করে জোর করে অব্যহতিপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই শিক্ষকের নাম আব্দুর রশিদ। তিনি কলেজটির ইসলাম শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক। 

বিজ্ঞাপন

ওই শিক্ষকের অভিযোগ, অধ্যক্ষের অনিয়মের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাওশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করায় গত ১৫ জানুয়ারি কলেজের অফিস কক্ষে আটকে রেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করে অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। 

অভিযোগকারী প্রভাষক আব্দুর রশিদের মোবাইল ফোনে ধারণ করা অডিও থেকে জানা গেছে, কলেজ অধ্যক্ষ দিপক কুমার সরকার আব্দুর রশিদকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন এবং অব্যাহতি পত্রে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে ধারণকৃত পুরো অডিও জুড়ে অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন এবং চড়-থাপ্পড় মারছেন এমন শব্দ শোনা যায়। 

বিজ্ঞাপন

আব্দুর রশিদ অভিযোগ করেন, ১৫ জানুয়ারি দুপুর বেলা অধ্যক্ষ তার কক্ষে ডেকে নিয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।  তিনি আমার শরীরেও আঘাত করেন। এ রকম কিছু ঘটতে পারে বিষয়টি আমি আগেই আঁচ করতে পেরে অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকার আগেই মোবাইলে অডিও রেকর্ড চালু করি রাখি। আমাকে মারধর করে অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার পর দ্রুত নওগাঁ ছাড়ার জন্য চাপ দেন অধ্যক্ষ দিপক কুমার। থানায় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেন তিনি। প্রাণভয়ে ওই দিনই নওগাঁ ছেড়ে মানিকগঞ্জে আমার গ্রামের বাড়ি চলে আসি।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে পত্নীতলার ইউএনও ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তারা আমাকে শরীরে উপস্থিত হয়ে অভিযোগটি লিখিতভাবে জানাতে বলেছেন। আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে থানায় এবং কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনওর কাছে লিখিত লিখিত অভিযোগ করব। তবে নওগাঁতে গেলে আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।

অধ্যক্ষ দিপক কুমারের অনিয়মের বিরুদ্ধে মাউশি মহাপরিচালক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে গত ৯ ডিসেম্বর আব্দুর রশিদের করা লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রশিদের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে। তিনি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর চৌরাট-শিবপুর ডিগ্রি কলেজে ইসলাম শিক্ষা বিভাগে ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষক হিসেবে ২০১৫ সালের ৭ নভেম্বর কলেজে যোগদান করেন। 

বিজ্ঞাপন

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চৌরাট-শিবপুর বরেন্দ্র ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ দিপক কুমার সরকার কাছে দাবি করেন, আব্দুর রশিদ পদত্যাগ করেছেন। সেদিন দুজনের মধ্যে হালকা কথাকাটাকাটি হয়েছে। তাকে মারধর কিংবা গালিগালিজ কিছুই করা হয়নি। মারধর করে অব্যাহতিপত্রে সাক্ষর নিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ করেছেন এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে চৌরাট শিবপুর বরেন্দ্র ডিগ্রী কলেজের সভাপতি ও পত্নীতলা উপজেলার ইউএনও লিটন সরকার বলেন, প্রভাষক আব্দুর রশিদ তাকে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি আমাকে মৌখিকভাবে অবগত করেছেন। লিখিত অভিযোগ করলে এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এর আগেও একজন একই ধরণের অভিযোগ করেছেন। এ কারণে কলেজটির ডিগ্রি ৩য় শিক্ষকের বেতন-ভাতা কার্যকরের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

এমআই 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |