টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় সিরাজকান্দী দাখিল মাদরাসারার সহকারী মৌলভি নজরুল ইসলামকে পিটিয়ে আহত করেছে বখাটেরা। পরে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জাহিদ, সাগর, শাহাদত, বাছেদ, স্বপনসহ ৮ থেকে ১০ বখাটে তাকে পিটিয়েছে বলে জানান মাদরাসা শিক্ষক।গতকাল সোমবার (৩০ মে) দুপুরে টিফিন করতে যাওয়ার সময় পুনর্বাসন এলাকায় ওই শিক্ষকের ওপর হামলা চালায় তারা। বর্তমানে শিক্ষক নজরুল ইসলাম ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, গত রোববার দুপুরে মাদরাসার মেয়েদের কমন রুমের কাছে টয়লেটের ওপর দিয়ে উঁকি দিচ্ছিলে জাহিদ ও সাগর নামের দুই বখাটে। এই ঘটনাটি ওই মাদরাসার শিক্ষকরা টের পেলে বখাটে দুজনের মধ্যে সাগর পালিয়ে যায় এবং জাহিদকে ধরে অফিস কক্ষে নিয়ে যায় শিক্ষকরা। পরে পুলিশ ও মাদরাসার সভাপতিকে জানানোর কথা শুনে তাদের কাছ পালানোর চেষ্টা করে জাহিদ। কিন্তু পালিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্ররা তাকে ধরে ফেলে। পরে সুজন নামের তার এক বড় ভাই জাহিদকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
গতকাল সোমবার দুপুরে ওই মাদরাসার শিক্ষক নজরুল ইসলাম ও মুন্নাফ টিফিনের সময় নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় এক নম্বর ও দুই নম্বর পুনর্বাসনের মাঝামাঝি কমিউনিটি ক্লিনিকের কাছে পৌঁছালে জাহিদ, সাগর, শাহাদত, বাছেদ, স্বপনসহ ৮-১০ জন বখাটে শিক্ষক নজরুল ইসলামকে মারধর করার জন্য পথ আটকায়। একপর্যায়ে বখাটেরা তাকে রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে মাথায় ও হাতে আঘাত করে আহত করে। পরে এলাকাবাসী ও শিক্ষকরা তাকে উদ্ধার করে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
আহত শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, আমি মাদরাসা থেকে দুপুরে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পুনর্বাসন এলাকার বদিউজ্জামানের ছেলে জাহিদ, আবদুল আলীমের ছেলে সাগর, আকতার হোসেনের ছেলে শাহাদত, আবদুল গফুরের ছেলে বাছেদ ও ফজলুর ছেলে স্বপনসহ আরও কয়েকজন বখাটে। হঠাৎ আমার পথ আটকায়। পরে তার লোহার রড ও ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে মাথায় ও হাতে আঘাত করে রক্তাক্ত করে আহত অবস্থায় ফেলে যায়। এলাকাবাসী ও শিক্ষকরা উদ্ধার করে আমাকে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
সিরাজকান্দি দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস জানান, আমি সকালে মাদরাসার কাজে ভূঞাপুর গিয়েছিলাম। দুপুরের দিকে হঠাৎ শুনতে পেলাম কিছু বখাটে মিলে আমার মাদরাসার মৌলভী শিক্ষক মাওলানা নজরুল ইসলামকে লোহার রড ও ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে মারধর করে রক্তাক্ত করেছে। পরে তাকে উদ্ধার করে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বখাটে ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফরিদুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে জানিয়েছেন, এখনও অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।