ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হরিশংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বহিষ্কৃত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল বুধবার (১ জুন) দুপুরে ধর্ষণ মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে হাজির হলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই মামলায় তার গাড়িচালক নজরুল ইসলামকেও আসামি করা হয়। গত ১৯শে এপ্রিল এক নারী ঝিনাইদহ সদর থানায় বাদী হয়ে চেয়ারম্যান ফরিদ ও তার গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন। ১৫ই এপ্রিল ওই নারী একজন বিচারপ্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যানের দারস্থ হলে ফারুকুজ্জামান ফরিদ তার গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার নরহরিদ্রা গ্রামে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ মামলা দায়েরের পর উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নেন চেয়ারম্যান ফরিদ।
ওই নারী গতকাল গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, বিচার চাইতে গিয়ে ফরিদ চেয়ারম্যানের লালসার শিকার হন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন কয়েক মাস আগে শহরতলীর কোরাপাড়া বটতলার আমির হোসেনের ছেলে মহসিনের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে হয়। কয়েক মাস স্বামী-স্ত্রীর হিসেবে বসবাস করলেও পরে বিয়ে অস্বীকার করে মহসিন। বিষয়টি সমাধানের জন্য একপর্যায়ে ওই নারী তার পূর্ব পরিচিত চেয়ারম্যান ফরিদের সঙ্গে আলাপ করেন।
সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে চেয়ারম্যান গত ১৫ই এপ্রিল নরহরিদ্রা গ্রামে তার বাড়িতে ডেকে নেন। ওই নারীর ভাষ্যমতে ঘটনার দিন বিকালে তিনি ফরিদের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে তাকে দুইতলার একটি কক্ষে নিয়ে যান এবং নেশা জাতীয় কিছু সেবন করিয়ে ফরিদ ও তার গাড়িচালক নজরুল মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, চেয়ারম্যান তাকে ধর্ষণ ছাড়াও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। ধর্ষণের পর চেয়ারম্যান ফরিদ এই ঘটনা কাউকে না বলার জন্য নিষেধ করেন। ধর্ষণ শেষে চেয়ারম্যানের গাড়িচালককে দিয়ে চম্পাকে বিজয়পুর বাজারে রেখে যান। ১৬ই এপ্রিল শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফরিদ তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হওয়ার পর থেকেই বলে আসছেন বিষয়টি তার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রের অংশ। ওই নারী তার কাছে বিচারের জন্য যখন আসেন তখন তার কাছে অন্তত ৫০ জন ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। তিনি তার ফেসবুকে লিখে দাবি করেন তার বিরুদ্ধে ওই নারীকে দিয়ে মামলা সাজিয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পোড়াহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরন।