শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে নুরজাহান বেগম (৫০) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী, সতিন ও সৎ ছেলেদের বিরুদ্ধে। এ সময় তার দুই ছেলে-মেয়ে আহত হয়েছে।
নিহতের মরদেহ উদ্ধারের পর সোমবার (৬ জুন) দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। নিহত নুরজাহান বেগম ওই গ্রামের ফজলুর রহমান ব্যাপারীর প্রথম স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী, সতিন ও সৎ দুই ছেলে পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দ্বিতীয় স্ত্রী মোরশেদা বেগমকে নিয়ে উপজেলার কাঁচিকাটা এলাকায় থাকতেন ফজলুর রহমান। আর প্রথম স্ত্রী নুরজাহান বেগম থাকতেন নইমউদ্দিন সরদারকান্দি গ্রামে। ফজলুর সম্প্রতি দ্বিতীয় স্ত্রীকে নইমউদ্দিন সরদারকান্দি নিয়ে আসেন। তখন থেকেই সংসারে কলহ শুরু হয়।
গতকাল রোববার (৫ জুন) রাত ১০টার দিকে স্বামী, সতিন ও সৎ ছেলেদের সঙ্গে ঝগড়া হয় নুরজাহানের। একপর্যায়ে স্বামী ফজলুর রহমান, সতিন মোরশেদা, সৎ ছেলে সাগর ও বিল্লাল মিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নুরজাহানকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম করেন। নুরজাহানকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে এলে তার ছেলে মামুন ও মেয়ে জেসমিনকেও কুপিয়ে আহত করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় নুরজাহানকে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক তাকে ঢাকায় পাঠান। ঢাকায় নেওয়ার পথে ফেরিতে নুরজাহানের মৃত্যু হয়।
নিহত নুরজাহানের মেয়ে জেসমিন আক্তার বলেন, বাবা, সৎ মা, সৎ ভাইয়েরা মিলে কুপিয়ে মাকে হত্যা করেছে। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই।
সখিপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ওবায়দুল হক বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী, দ্বিতীয় স্ত্রী ও সৎ ছেলেরা নুরজাহানকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। পরে ঢাকা নেওয়ার পথে নুরজাহানের মৃত্যু হয়। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার পর থেকে আসামিরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।