ঢাকারোববার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

ধর্ষণ মামলায় আসামি হয়ে এলাকা ছাড়া গ্রামের লোকজন

হাতিয়া প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

রোববার, ৩১ জুলাই ২০২২ , ০৩:৪৪ পিএম


loading/img
ছবি : আরটিভি নিউজ

গভীর রাতে ব্যবসায়ী আয়াত উল্লা (৩৫) এক প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে অবস্থান করছে এমন খবর পেয়ে এলাকার লোকজন এসে তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। উত্তেজিত লোকজন অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রবাসীর স্ত্রী হাতে দা নিয়ে লোকজনকে আক্রমণ করতে চেষ্টা করলে প্রতিবেশী নারীদের সহযোগিতায় তাকেও বেঁধে রাখা হয়।

বিজ্ঞাপন

গত ১৬ জুলাই (শনিবার) হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে উত্তর রেহানিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পরে খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে ইউপি সদস্য ও থানা পুলিশ এসে অনৈতিক কাজে জড়িত থাকায় দুজনকে থানায় নিয়ে যায়। এই ঘটনার এক সপ্তাহ পর প্রবাসীর স্ত্রী বাদী হয়ে এলাকার ১১ জনকে আসামি করে ধর্ষণের মামলা করে। 

বিজ্ঞাপন

এলাকাবাসী আরটিভি নিউজকে জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন থেকে প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে একই এলাকার আয়াত উল্লা নামে এক ব্যবসায়ীর পরকীয়ার সম্পর্ক চলে আসছিল। গভীর রাতে  আয়াত উল্লার যাতায়াত ছিল প্রবাসীর বাড়িতে। এ নিয়ে আয়াত ও তার বাবাকে ডেকে নিয়ে একাধিকবার সতর্ক করেলেও এসব বাধা উপেক্ষা করে চলতে থাকে তাদের প্রেমের সম্পর্ক।

পরে শনিবার গভীর রাতে আয়াত উল্লা প্রবাসীর ঘরে অবস্থানকালে পতিবেশীদের সহযোগিতায় লোকজন তাকে ও ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এবং পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়। পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এরপর ২৪ জুলাই ওই নারীর করা  ধর্ষণ মামলায় আসামি করা হয় আনোয়ার হোসেন নামে এক বৃদ্ধ ও তার কলেজ পড়ুয়া ছেলেসহ এলাকার কয়েকজন সাধারণ মানুষকে। মামলার ৩নং আসামি করা হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও সাবেক এনজিওকর্মী ছায়েদুল হক (৬৩) মাস্টারকে।  মামলার ভয়ে এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে তারা।

বিজ্ঞাপন

ছায়েদুল হক আরটিভি নিউজকে বলেন, আয়াতকে ছাড়িয়ে আনার জন্য আয়াতের বড় ভাই এসে আমাকে বাড়ি থেকে ডেকে নেওয়া হয়। রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যাপক লোকজনের উপস্থিতি দেখতে পাই। আয়াতকে গাছে বেঁধে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশ অভিযুক্ত দুজনকে থানায় নিয়ে যান। কিন্তু আমাকে এক সপ্তাহ পর ধর্ষণ মামলায় আসামি করা হয়। সাক্ষী করা হয় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া ব্যবসায়ী আয়াতকে। 

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও জানান, আয়াতের সঙ্গে এই মহিলার অনেক দিনের সম্পর্ক। এ ব্যাপারে একাধিকবার পারিবারিক বৈঠকে দুজনকে সতর্ক করা হয়েছে। ওই নারী ও ব্যবসায়ী আয়াতের মোবাইলে বিভিন্ন সময় কথা বলার অডিও রেকর্ডও সবার কাছে আছে।

এ ঘটনার পর সরেজমিনে দেখা যায়, প্রবাসীর বাসায় তালা মারা। বাসায় কেউ নেই।
 
প্রতিবেশীরা জানান, ঘটনার পর থেকে ওই নারী ভাইয়ের বাসায় জেলা শহর মাইজদিতে অবস্থান করছে। মামলার বিষয়ে প্রবাসীর স্ত্রীর মোবাইল নাম্বারে বারবার যোগাযোগ করলেও বন্ধ পাওয়া যায়। 

এ বিষয়ে হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন আরটিভি নিউজকে বলেন, ওই নারী থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তাতে এলাকার লোকজন পরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন। অভিযোগে তাকে নির্যাতন করা হয় বলে উল্লেখ করেন। সেই অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |