ঢাকাশনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ

মো. আব্দুল আজিজ, হিলি প্রতিনিধি

রোববার, ২২ জানুয়ারি ২০২৩ , ০৩:৪১ পিএম


loading/img
ছবি : আরটিভি

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার ৩১টি ইট ভাটার মধ্যে ২৮টিতে পোড়ানো হচ্ছে বনের তাজা গাছ। কিছু কিছু ইটভাটার কাগজপত্র থাকলেও অধিকাংশেরই নেই, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। এতে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশ, জীব ও বৈচিত্র্যের। 

বিজ্ঞাপন

তবে ইটভাটার সংশ্লিষ্টরা বলছে, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তারা ইটভাটা পরিচালনা করছেন। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাংলাদেশর প্রচলিত আইনে পরিবেশের জন্য কাঠ পোড়ানো নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছেন না, দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার প্রভাবশালী কিছু ইটভাটার মালিকরা।  উপজেলাতে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে অসংখ্য ইটভাটা। হাতে গোনা কয়েকটির বৈধ কাগজপত্র থাকলেও বেশি ভাগেরই কোনো অনুমতি নেই। অভিযোগ স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে এসব ইটভাটা। বেশির ভাগ ইট ভাটায় জ্বালানি হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে বনের কাঠ। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে তেমনি কার্বন-ড্রাই অক্সাইড ছড়িয়ে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। 

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় আবুল কালাম হোসেন জানান, ইটভাটা তৈরির অনুমতি দেওয়ার সময় সরকারের কর্মকর্তারা পরিদর্শন না করেই অনুমতি দিয়েছে। যদি তাই না হতো, তাহলে ফসলি জমির মাঠে এবং গ্রামের পার্শ্বে কেমন করে ইটভাটা তৈরি হয়। এসব ইট ভাটার কারণে আমাদের পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনিভাবে বিভিন্ন গাছের ফল নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে আমাদের আম, বড়ইসহ নানান বাগানের ফলের ক্ষতি হচ্ছে। সরকারের কাছে অনুরোধ এসব ইট ভাটার বিরুদ্ধে জরুরিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া।  

ইটভাটার কয়েকজন মালিক ও ম্যানেজার জানান, কয়লার দাম বেশি হওয়ার কারণে ইটভাটায় গাছ পোড়ানো হচ্ছে। 

কাগজপত্র ঠিক আছে কি না এমন প্রশ্নে কর্মরত ম্যানেজার বলেন, তারা স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই ভাটা পরিচালনা করছে। তবে দুই বাঁ তিন জন ব্যতীত সবার কাগজপত্র অবৈধ। 

বিজ্ঞাপন

বিরামপুর বন বিভাগের কর্মকর্তা মাসুম আলম জানান, নবাবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটার মালিক এবং উপজেলা প্রশাসনকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে, ইটভাটায় বনের জ্বালানি কাঠ ব্যবহার বন্ধের বিষয়ে। 

বিজ্ঞাপন

উপজেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছ থেকে সহযোগিতা পেলে ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো বন্ধ করা যাবে বলে জানান এ কর্মকর্তা। 

দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশে কিছু কিছু এলাকায় পরিবেশ বান্ধব ইটভাটা চালু হয়েছে। তবে নবাবগঞ্জ উপজেলায় অবৈধ ইটভাটার কালো ধোঁয়া পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। যেসব ইটভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র নেই, সেসব ইটভাটার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান এ সংসদ সদস্য। 

নবাবগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আশিক রেজা বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ইতিমধ্যে কয়েকটি ইট ভাটার জরিমানা করা হয়েছে। নবাবগঞ্জ উপজেলায় ৩১টি ইট ভাটা রয়েছে। যার মধ্যে জেলা প্রশাসনের অনুমোদন রয়েছে পাঁচটিতে। পর্যায়ক্রমে অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |