গোপনে নারীর গোসলের ভিডিও ধারণ, অভিযোগ দিয়েও মিলছে না প্রতিকার
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে এক নারীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রিফাত (১৮) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। রিফাত উপজেলার আটিয়া ইউনিয়নের নান্দুরিয়া গ্রামের খন্দকার রিপনের ছেলে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওই নারীর বাড়ির গোসলখানা থেকে ভিডিও ধারণ করে রিফাত। এ বিষয়ে ওই নারীর বাবা বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী ওই নারীর বাবা বলেন, গোপনে আমার মেয়ের ভিডিও ধারণ করে প্রতিবেশী রিফাত। তারপর ওই ভিডিও তার বন্ধুর নিকট পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করে। রিফাতের ওই বন্ধু আমার মেয়ের ইমো নাম্বারে ধারণকৃত ভিডিও পাঠিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। তাতে রাজি না হওয়ায় ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয়। মেয়ের স্বামী সৌদি আরব থেকে এই ভিডিও দেখার পর আমার মেয়েকে তালাক দিতে চায়। এ ঘটনায় আমার মেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
ভুক্তভোগী নারীর বাবা আরও বলেন, ঘটনার পরদিন থানায় অভিযোগ দিলে দেলদুয়ার থানার এসআই মো. ইউসুফ আলী তদন্তে আসে। তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন রিফাত এসএসসি পরীক্ষার্থী তাই আপাতত কিছু করা যাবে না, পরীক্ষা শেষে ব্যবস্থা নেবো। এ ছাড়াও ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলেও জানান এসআই ইউসুফ।
এদিকে অভিযোগ দেওয়ায় রিফাতের বাবা, চাচা খন্দকার মনোয়ার ও স্থানীয় সাবেক মহিলা মেম্বার আঞ্জুমানারা মিলে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেয়। তারা বলে অভিযোগ তুলে না নিলে তাদের মেরে লাশ গুম করে ফেলবে।
তিনি বলেন, আমার মেয়েকে চোখে-চোখে রাখতে হয়, কখন যেন আত্মহত্যার পথ বেঁছে নেয়। অপরদিকে আসামীদের ভয়ে থাকতে হয় কখন যেন আমাকে প্রাণে মেরে ফেলে।
ভুক্তভোগী ওই নারীর চাচা জানায়, রিফাতের বাবা খন্দকার রিপন ভুল স্বীকার করেছে। সেই সঙ্গে অভিযোগ তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। সমাজে নিরীহ হওয়ায় আমরা কি বিচার পাব না।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, তিনি দুর্নামের ভয়ে এসএসসি পাস করেও কোনো কলেজে ভর্তি হননি। লেখাপড়া বাদ দিয়ে ঘরে বসে থেকেও আমার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটল। এ ঘটনার সঠিক বিচার না পেলে তিনি আত্মহত্যার পথ বেঁছে নেবেন।
অভিযুক্ত রিফাতের বাবা খন্দকার রিপন জানান, ঘটনাটি সামাজিকভাবে বসে মীমাংসার চেষ্টা করছি।
এ ঘটনায় স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. আব্দুর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ঘটনাটি অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক।
এ বিষয়ে দেলদুয়ার থানার পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মো. ইউসুফ আলী মুঠোফোনে জানান তিনি কোন বক্তব্য দিতে পারবে না।
দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। অভিযুক্তকে সনাক্ত করতে না পরায় তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
মন্তব্য করুন