প্রহরীদের হাত-পা বেঁধে ২৫ লাখ টাকার গরু লুট
ফেনীতে দুই প্রহরীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি খামারের ২৫ লাখ টাকা মূল্যের ১৩টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার (৮ জুন) জেলার দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পূর্ব জয় নারায়ণপুর খান অ্যাগ্রো ফার্মে এ লুটের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জেলায় ৫ হাজারের বেশি খামারির মাঝে উদ্বেগ বিরাজ করছে।
খামারটির শ্রমিক আবদুর রহমান জানান, গরুকে খাবার দিয়ে শুক্রবার (৭ জুন) রাত ৩টার দিকে ঘুমিয়ে যান তারা। এর কিছুক্ষণ পরই খামারের দরজার তালা ভেঙে মুখোশ পরা ২০-২৫ জন অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত ভেতরে প্রবেশ করে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা ও চোখ বেঁধে ফেলে রাখে। সেখান থেকে ২১টি গরু লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
ভোরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ৮টি গরু এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়। শ্রমিকদের ধারণা, খামার থেকে কিছুটা দূরে লুটেরাদের গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। গাড়িতে ওঠানোর সময় হয়তো ৮টি গরু বিভিন্ন দিকে চলে যায়।
খামার মালিক অ্যাডভোকেট দাউদ খান জানান, ২০১৯ সালে খামারটি শুরু করেন তিনি। এবার কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য তিন মাস আগে শাহীওয়াল জাতের ২১টি গরু কিনে প্রস্তুত করা হচ্ছিল। রাতে খামার দেখাশোনা ও পাহারার জন্য দুজন শ্রমিক সেখানে থাকতেন। শনিবার ফজরের নামাজ শেষে হাঁটার জন্য বের হয়ে তিনি দেখতে পান মসজিদের সামনে তিনটি গরু দাঁড়িয়ে আছে। এতে সন্দেহ হলে দ্রুত খামারে গিয়ে দেখেন তার খামারে কোনো গরু নেই এবং দুই শ্রমিকের হাত-পা ও মুখ বাঁধা। পরে ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানান তিনি।
অ্যাডভোকেট দাউদ খান আরও জানান, দুর্বৃত্তরা খামারের শ্রমিকদের মারধর করেছে। প্রতিটি গরুর ওজন ৬ মণের বেশি। যার এক একটির বর্তমান বাজার মূল্য রয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকারও বেশি।
এ দিকে খামারে ঢুকে এভাবে গরু লুটের ঘটনায় উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে জেলার ৫ হাজারের বেশি খামারির মাঝে। একাধিক খামারি জানান, এলাকায় পুলিশের টহল আরও জোরদার থাকলে এমন ঘটনা ঠেকানো যেত। পুলিশ চাইলে লুট হওয়া গরুগুলো উদ্ধার করা সম্ভব।
তবে পুলিশ বলছে, তারা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। ইতোমধ্যে এ ঘটনাটির বিষয়ে কাজ করছেন পুলিশ সদস্যরারা।
এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) দীন মোহাম্মদ বলেন, ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে পুলিশি অভিযান চালানো হচ্ছে।
অপরদিকে গত এক বছরে ফেনী জেলায় গরু চুরির ঘটনায় ২২টি মামলা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এসব মামলায় চুরি হওয়া গবাদিপশুর সংখ্যা ৪৯টি। তাছাড়া চলতি মৌসুমে ফেনীর ৫ হাজার ২২৫ জন খামারি তাদের খামারে ৯০ হাজার ২৫০টি পশু বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে পালন করছেন।
মন্তব্য করুন