পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে জলাবদ্ধতায় ডুবছে রাজবাড়ী শহর
প্রতিষ্ঠার শত বছর পার হলেও রাজবাড়ী পৌর এলাকায় পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। ফলে অপরিকল্পিত এই ড্রেনেজ মহল্লাবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পাড়া-মহল্লা তলিয়ে যায়। শহরের ছোট-বড় সব খাল, পুকুর ও নালা ভরাট করে বাড়ি তৈরি করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সরকারের আমল থেকে রাজনৈতিক দলের নেতারা রাজবাড়ী পৌরসভার চেয়ারম্যান বা মেয়র নির্বাচিত হলেও তারা শক্তিশালী ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেননি।
অথচ ড্রেন নির্মাণের নামে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা লোপাট করা হয়ে থাকে। নিয়োগ দেওয়া হয় মেয়রের নিজস্ব লোকজন ও বাহিনীকে।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ১৮৯৫ সালে রাজবাড়ী পৌরসভা গঠিত হয়। এ পর্যন্ত ১৪ জন রাজনৈতিক নেতা চেয়ারম্যান ও মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু পরিকল্পিত ড্রেন উন্নয়নে কেউ কার্যকর ভূমিকা পালন করেননি।
প্রথম শ্রেণির রাজবাড়ী পৌরসভার মোট আয়তন ৩৯ দশমিক ৪২ বর্গ কিলোমটিার। ২৫টি মৌজা নিয়ে গঠিত রাজবাড়ী পৌরসভায় তিন লাখ পরিবার বসবাস করেন।
পৌরসভার তথ্য বাতায়ন সূত্রে জানা গেছে, চলাচলের জন্য পৌর এলাকার বেশির ভাগ রাস্তা ভাঙাচুরা ও কাঁচা রয়েছে।
সূত্রমতে রাজবাড়ী শহরে ৭৫ দশমিক ৩০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা রয়েছে। অন্যদিকে কাঁচা রাস্তা আছে ৫৪ দশমিক ৬১ কিলোমিটার। হাল আমলে কাঁচা-পাকা ড্রেনের কোন পরিসংখ্যান পৌরসভায় না থাকলেও পুরাতন তথ্য বলছে রাজবাড়ী শহরে ১০৭ কিলোমিটার ড্রেন রয়েছে।
এরমধ্যে পাইপ ড্রেন আছে ৭ কিলোমিটার, ইটের ড্রেন ৩৫ কিলোমিটার, আরসিসি ১৫ কিলোমিটার, প্রাইমারি ১০ কিলোমিটার ও কাঁচা ড্রেন ৪০ কিলোমিটার।
শহরের প্রধান ড্রেনটির সঙ্গে পাড়ামহল্লার ড্রেনের সংযোগ না থাকায় গোটা পৌর এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা লেজেগোবরে দশার সৃষ্টি হয়েছে। কলেজপাড়া, নতুন বাজার, বাজার পাটশালা স্কুল রোড, বিনোদপুর, মহিলা কলেজ রোড, হাসপাতাল রোড, চালবাজার, তরকারি বাজার, ফলবাজার ও খোদ রাজবাড়ী শহরের প্রধান সড়কেও অল্প বৃষ্টিতে হাটু পানি হয়ে যায়।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী পৌরসভার প্যানেল মেয়র সেখর চক্রবর্তী জানান, বিভিন্ন এলাকায় নতুন নতুন আরসিসি ড্রেন তৈরি হচ্ছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করি।
রাজবাড়ী পৌর সভার নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দীন জানান, রাজবাড়ী পৌর এলাকায় এলজিএসপি ও পাবলিক হেলথের দুইটি প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। এই প্রকল্পের আওতায় তিনটি প্রধান আরসিসি ড্রেন তৈরি হলে সব সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি মনে করেন।
এ ছাড়া বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ২৫ শহর প্রকল্পের আওতায় ছোট বড় ১৮ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ করা হবে। এ সব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে শহরে আর কোনো জলাবদ্ধতা থাকবে না বলে নির্বাহী প্রকৌশলী দাবি করেন।
আরটিভি/এএএ
মন্তব্য করুন