টিকা নেওয়ার সময় অসুস্থ ৪০ মাদরাসা ছাত্রী
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মনোহরপুর পুকুরিয়া দাখিল মাদরাসার ছাত্রীরা হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) বা জরায়ু মুখ ক্যানসারের টিকা নেওয়ার সময় গণহিস্টেরিয়ায় অন্তত ৪০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে অসুস্থ হওয়ার এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সারাদেশের মতো বৃহস্পতিবার থেকে কালীগঞ্জ উপজেলায় এ টিকার কার্যক্রম শুরু হয়। সোমবার সকাল ১০টা থেকে মনোহরপুর পুকুরিয়া দাখিল মাদরাসার মেয়েদের এ টিকার দেওয়া কার্যক্রম শুরু হয়। দুই ঘণ্টায় শতাধিক মেয়েকে টিকা দেওয়া হয়। দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ একজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে প্রাথমিকভাবে মাদরাসায় সেবা দেওয়ার পর সুস্থ হন। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ করেই বিভিন্ন শ্রেণির মেয়েরা অসুস্থ হতে শুরু করেন। একে একে প্রায় ৪০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পরে টিকাদান টিমের সহকারীরা হাসপাতালে খবর দিলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাদরাসায় এসে তাদের হাসপাতালে নেন।
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন সুবর্ণা (১৪), মিম খাতুন (১১), রিমি খাতুন (১২), যুথী খাতুন (১৫, মুন্নি খাতুন (১৫), তারিন সুলতানা (১৫), ফারিয়া খাতুন (১৪), লামিয়া (১২), শিমু খাতুন (১৪), তুলি (১৪), সোনালী (১৪), সীমা (১৪), রুমি (১৪) ও জিনিয়া (১৩)। বাকিদের হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মাদরাসার সুপার মাওলানা ইউনুছ আলী আলী বলেন, সকালে হাসপাতাল থেকে চারজনের একটি টিম মাদরাসার মেয়েদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু করেন। ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রায় শেষ পর্যায়ে ষষ্ঠ শ্রেণির এক মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিছুক্ষণ পর একে একে প্রায় ৪০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদের মধ্যে ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এটাকে ম্যাস হিস্টেরিয়া বা দেখাদেখি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া বলে। আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখি যে কক্ষে টিকা দেওয়া হচ্ছে সেটা বদ্ধ এবং একটি ফ্যান নষ্ট। পরে সবাইকে আলাদা আলাদা কক্ষে বসাই। তারপরও যারা অসুস্থ হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই সকালে না খাওয়া ছিলেন। পরে আমি না খাওয়াদের টিকা দিতে নিষেধ করি। অসুস্থ মেয়েদের আমার গাড়ি ও হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এটা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। সবাই এখন ভালো আছেন।’
আরটিভি/এমকে-টি
মন্তব্য করুন