মহাদেবপুরে শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ক্লাস চলাকালীন নারী শিক্ষার্থীদের শরীরে খারাপভাবে স্পর্শ করার অভিযোগ উঠেছে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার রাইগা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী গণিত শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। সোমবার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন অশোভন আচরণ করেন ওই শিক্ষক।
বুধবার (৬ নভেম্বর) বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে অভিযুক্ত শিক্ষককে সবার কাছে ক্ষমা চাওয়া ও তার পদত্যাগের জন্য বিক্ষোভ করে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ে চলছে চলতি বছরের এস এস সি টেস্ট প্রস্তুতি পরীক্ষা। বিক্ষোভের কারণে পরীক্ষা স্থগিত করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
রাইগা উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ট শ্রেণির এক শিক্ষার্থী গত ৪ নভেম্বর অভিযুক্ত শিক্ষকের কাছে হেনস্তার শিকার হন। তারই প্রতিবাদে সহপাঠীরা ক্লাস বর্জন করে অভিযুক্ত শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করে। এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানায়, বিভিন্ন সময় খারাপভাবে তাদের শরীরস্পর্শ করতো ওই শিক্ষক। শুধু তার সঙ্গে নয়, বিভিন্ন ক্লাসের মেয়েদের সঙ্গে এমন আচরণ করে আসছেন ওই শিক্ষক। ওই শিক্ষকের পদত্যাগসহ সব শিক্ষার্থীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, তারা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠান পাঠ গ্রহণের জন্য। তাদের মেয়েদের সাথে যদি শিক্ষক এমন আচরণ করেন তবে কিসের ভরসায় আর মেয়েকে বিদ্যালয়ে পাঠাবেন। তিনি এই ধরনের ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন।
এদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষক মোস্তাফিজকে পদত্যাগ করে সবার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। নতুবা উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন আন্দোলন করবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই ধরনের শিক্ষককে নিজ ইচ্ছায় পদত্যাগ করে চলে যাওয়া উচিত। তার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। দ্রুত তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান মুঠোফোনে জানান, ২০২২ সালে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের সময় এক শিক্ষার্থীর খাতা নিয়ে নেন। সেই সময় থেকে তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে ষড়যন্ত্র হয়ে আসছে। তিনি ঘটনাগুলো সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।
বিদ্যালয়টির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার প্রাথমিক তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে যাব। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরটিভি/এএএ/এসএ
মন্তব্য করুন