• ঢাকা শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১
logo

শিশু সাদিয়ার খেলার সঙ্গী ২ শতাধিক জোঁক

  ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:০৮
ছবি : আরটিভি

বাবা মানিক মণ্ডল পেশায় কবিরাজ। মা মিনুকা বেগম বাড়ির সামনে তিন রাস্তার মোড়ে মুদি দোকান চালিয়ে সংসারে সহযোগিতা করেন। সাদিয়ারা দুই ভাইবোন। বাবা মানিক ছোটবেলা থেকে খাল-বিল থেকে জোঁক ধরে নিয়ে এসে লালন-পালন করেন। মেয়ে সাদিয়া বাবার ধরে আনা এক একটি জোঁকের সঙ্গে গড়ে তুলেছেন বন্ধুত্ব। বাবা-মেয়ের স্বপ্ন ভবিষ্যতে জোঁকের একটি খামার করার।

নওগাঁর রানীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে স্ত্রী ও এক ছেলে ও মেয়ে সাদিয়াকে নিয়ে বসবাস করেন মানিক মণ্ডল। তার মূল পেশা হাটে বাজারে কবিরাজি ওষুধ বিক্রি করা আর জোঁক লালন পালন করা। তার সংগ্রহে রয়েছে প্রায় ২০০টি জোঁক। যার এক একটি ওজন প্রায় ২৫০ গ্রাম। নিজের জোঁক পালনের কাজ স্ত্রী ছেলে-মেয়েকে শিখিয়েছেন মানিক মণ্ডল। পালনের পাশাপাশি এক একেকটি জোঁক ১২ থেকে ১৬শ টাকায় বিক্রি করে থাকেন তিনি।

বাবার দেওয়া কবিরাজি পেশা নিজে হাতে নিয়েছেন মানিক মণ্ডল। কিন্তু ছোটবেলা থেকে জোঁক ধরার প্রতি তীব্র শখ থেকে এতগুলো সংগ্রহ করে রেখেছেন। তেমনি তার পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে শিখিয়েছেন জোঁকের সাথে কীভাবে বন্ধুত্ব করা যায়। মেয়ে সাদিয়ার বন্ধুত্ব যেন প্রতিটি জোঁকের সাথে। জোঁককে রক্ত খাওয়ানো, জোঁকের সঙ্গে খেলা করা, সময় সময় জোঁকের পানি পরিষ্কার করা সব কিছুই সে করতে পারে।

সাদিয়া জানায়, জোঁকের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব। জোঁক নিয়ে খেলা করতে তার খুব ভালো লাগে। সে বাবার সঙ্গে মাঠে যায়। খাল বিল থেকে নিজ হাতে জোঁক ধরে নিয়ে আসে। এ ছাড়াও বাবার সঙ্গে সে জোঁকের খাবার রক্ত সংগ্রহ করতে যায়।

সাদিয়ার বাবা মানিক মণ্ডল জানান, জোঁক মূলত চাষ করা যায় না। খাল বিল থেকে ধরে এনে তা ছোট থেকে বড় করা হয়। তিনি কৃত্রিম পদ্ধতিতে মাটির হাড়িতে করে তা পালন করেন। জোঁক রক্ত খায়। তাই কসাই হাট থেকে গরু ছাগলের রক্ত সংগ্রহ করে তা জোঁকগুলোকে খাইয়ে বড় করেন। তিনি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে তিনি জোঁক সংগ্রহ করে আসছেন।

তিনি আরও জানান, ভূমিতে রাসায়নিকের প্রভাব বেরে যাওয়ায় জোঁক প্রায় বিলুপ্তের পথে। তার জোঁকগুলো থেকে কোনোদিন জোঁকের প্রজনন হয়নি বা দেখেননি তিনি। এর বিস্তার আল্লাহ প্রদত্ত। যেহেতু তিনি এর প্রজনন সম্পর্কে কিছু জানেন না, তাই তিনি ভবিষ্যতে জোঁকের খামার করতে সংশ্লিষ্টদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।

এদিকে স্বামীর এমন কাজ বিয়ের আগে থেকেই দেখে আসছেন স্ত্রী মিনুকা বেগম। স্বামী জেলার বাহিরে হাট করতে গেলে জোঁকের সার্বক্ষণিক দেখাশুনা করেন তিনিই। অপরদিকে মানিকের জোঁক দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসে তার বাড়িতে।

তারা জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে তারা দেখতে এসেছেন। এমন বড় বড় জোঁক তারা কোনদিন দেখেননি। দেখে তাদের ভালো লেগেছে।

রানীনগর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র দেবনাথ জানান, জোঁক একটি হিরুডো গোত্রের প্রাণী। প্রাকৃতিক ইকো সিস্টেম এর ভারসাম্য একটি প্রাণী এটি। জোঁকের প্রজনন মূলত প্রাকৃতিকভাবে হয়ে থাকে। এর আর্টিফিশিয়াল প্রজনন এখনও চোখে পড়েনি। তবে এর সংরক্ষণ এমন প্রজননে প্রশিক্ষণ প্রয়োজন বলে তিনি জানান।

আরটিভি/এএএ-টি

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
নওগাঁর মহাদেবপুরে জাহিদুল হত্যাকাণ্ড, গ্রেপ্তার ৩
শীতে কাঁপছে নওগাঁ, তাপমাত্রা ৮.৬ ডিগ্রি 
বৌভাতে পান খাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ৩ 
বাড়ির উঠানে গাঁজার চাষ, আটক ১